ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

অধ্যাপক তাহের হত্যা : কারাগারে জাহাঙ্গীরের সাথে শেষ দেখা করতে স্বজনরা

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৭:৫৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩
  • ১১২৯ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় কেয়ারটেকার মো: জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজের পর পরিবারের সদস্যরা দেখা করে এসেছেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলার ফাঁসির দুই আসামির পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের জন্য ডাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে তারা দেখা করতে যান বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘গত রোববার কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়েছিল। রিট পেন্ডিং থাকায় আমরা তখন দেখা করি নাই। রিট নিষ্পত্তি হওয়ার পর আজ আমরা দেখা করতে এসেছি। আমাদের পরিবারের প্রায় ৩৫ জন দেখা করতে এসেছে।’

এর মধ্য দিয়ে অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় কার্যকরের কার্যক্রম শুরুর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।

মঙ্গলবার রাতেই আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে বলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে।

দুপুরে কারাগারের ভেতরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, ডিআইজি প্রিজন ও কারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সভা হয়েছে বলে ওই সূত্র জানায়।

তবে এই নিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এর মধ্যেই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধাপ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো: জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

এই সংক্রান্ত রিট আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পর আপিলের আবেদন করেছিলেন জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাব হোসেন।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।

আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

গত ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি আলী রেজার রুকুর হাই কোর্ট বেঞ্চ। তার তিন দিন পর আপিলের আবেদনটি করা হয়েছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির একজন হলেন তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো: জাহাঙ্গীর আলমন। অন্য আসামি হলেন তাহেরের সহকর্মী এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তাদের ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধাপ শেষ হওয়ার পর জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাব হোসেন গত ১১ জুলাই ওই রিট আবেদন করেন।

সেখানে বলা হয়, রাজশাহীর মতিহার থানায় জাহাঙ্গীর আলমকে ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আটক রাখা হয়েছিল; যা সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধির লঙ্ঘন।

আইন অনুযায়ী কাউকে আটকের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।

এই রিট মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাহাঙ্গীরের সাজার উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল রিট আবেদনে।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে অধ্যাপক তাহের নিখোঁজ হন। ওই বাসায় তিনি একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর তার দেখাশোনা করতেন।

পরদিন বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

অধ্যাপক তাহেরের করা একটি জিডির সূত্র ধরে বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরসহ আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা বলেন, অধ্যাপক এস তাহের বিভাগের একাডেমিক কমিটির প্রধান ছিলেন। একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সুপারিশ চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু গবেষণা জালিয়াতির কারণে অধ্যাপক তাহের তা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মহিউদ্দিন হত্যার পরিকল্পনা করেন।

বালিশ চাপা দিয়ে খুনের পর বাড়ির ভেতরে থাকা চটের বস্তায় ভরে অধ্যাপক তাহেরের লাশ বাসার পেছনে নেয়া হয়। লাশ গুমের জন্য জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুলের স্ত্রীর ভাই আবদুস সালামকে ডেকে আনা হয়। তাদের সহায়তায় বাসার পেছনের ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে তাহেরের লাশ ফেলে দেয়া হয়।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ শিবির নেতা মাহবুব আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেয়।

দণ্ডিত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও তার স্ত্রীর ভাই সালাম। তবে ছাত্রশিবিরের নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি বিচারে খালাস পান।

পরে দণ্ডিতরা হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল ও সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

পরে তাদের দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখে। এরপর আসামিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।

এরপর বাকি থাকে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন আসামিরা। সে আবেদনও নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। গত ৫ জুলাই সেই চিঠি রাজশাহী কারাগারে পৌঁছায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

অধ্যাপক তাহের হত্যা : কারাগারে জাহাঙ্গীরের সাথে শেষ দেখা করতে স্বজনরা

আপডেট সময় ০৭:৫৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় কেয়ারটেকার মো: জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজের পর পরিবারের সদস্যরা দেখা করে এসেছেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলার ফাঁসির দুই আসামির পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের জন্য ডাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে তারা দেখা করতে যান বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘গত রোববার কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়েছিল। রিট পেন্ডিং থাকায় আমরা তখন দেখা করি নাই। রিট নিষ্পত্তি হওয়ার পর আজ আমরা দেখা করতে এসেছি। আমাদের পরিবারের প্রায় ৩৫ জন দেখা করতে এসেছে।’

এর মধ্য দিয়ে অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় কার্যকরের কার্যক্রম শুরুর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।

মঙ্গলবার রাতেই আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে বলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে।

দুপুরে কারাগারের ভেতরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, ডিআইজি প্রিজন ও কারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সভা হয়েছে বলে ওই সূত্র জানায়।

তবে এই নিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এর মধ্যেই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধাপ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো: জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

এই সংক্রান্ত রিট আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পর আপিলের আবেদন করেছিলেন জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাব হোসেন।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।

আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

গত ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি আলী রেজার রুকুর হাই কোর্ট বেঞ্চ। তার তিন দিন পর আপিলের আবেদনটি করা হয়েছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির একজন হলেন তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো: জাহাঙ্গীর আলমন। অন্য আসামি হলেন তাহেরের সহকর্মী এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তাদের ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধাপ শেষ হওয়ার পর জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাব হোসেন গত ১১ জুলাই ওই রিট আবেদন করেন।

সেখানে বলা হয়, রাজশাহীর মতিহার থানায় জাহাঙ্গীর আলমকে ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আটক রাখা হয়েছিল; যা সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধির লঙ্ঘন।

আইন অনুযায়ী কাউকে আটকের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।

এই রিট মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাহাঙ্গীরের সাজার উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল রিট আবেদনে।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে অধ্যাপক তাহের নিখোঁজ হন। ওই বাসায় তিনি একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর তার দেখাশোনা করতেন।

পরদিন বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

অধ্যাপক তাহেরের করা একটি জিডির সূত্র ধরে বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরসহ আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা বলেন, অধ্যাপক এস তাহের বিভাগের একাডেমিক কমিটির প্রধান ছিলেন। একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সুপারিশ চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু গবেষণা জালিয়াতির কারণে অধ্যাপক তাহের তা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মহিউদ্দিন হত্যার পরিকল্পনা করেন।

বালিশ চাপা দিয়ে খুনের পর বাড়ির ভেতরে থাকা চটের বস্তায় ভরে অধ্যাপক তাহেরের লাশ বাসার পেছনে নেয়া হয়। লাশ গুমের জন্য জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুলের স্ত্রীর ভাই আবদুস সালামকে ডেকে আনা হয়। তাদের সহায়তায় বাসার পেছনের ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে তাহেরের লাশ ফেলে দেয়া হয়।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ শিবির নেতা মাহবুব আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেয়।

দণ্ডিত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও তার স্ত্রীর ভাই সালাম। তবে ছাত্রশিবিরের নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি বিচারে খালাস পান।

পরে দণ্ডিতরা হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল ও সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

পরে তাদের দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখে। এরপর আসামিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।

এরপর বাকি থাকে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন আসামিরা। সে আবেদনও নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। গত ৫ জুলাই সেই চিঠি রাজশাহী কারাগারে পৌঁছায়।