যশোরের অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের একটি অনবদ্য দর্শনীয় স্থান খানজাহান আলী মসজিদ। ভৈরব নদীর তীরে একটি গুম্বুজ ও চারটি মিনার বিশিষ্ট এ মসজিদটি তৈরি করে ছিলেন ইতিহাস নন্দিত জননায়ক ও কামেল দরবেশ হযরত পীর খানজাহান র.। বিশেষভাবে নির্মিত ওই সময়ের উন্নত মানের ইট দিয়ে মুসলিম স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এ দর্শনীয় মসজিদটি দেখতে ও নামাজ আদায় করতে বাড়ছে মুসল্লি ও দর্শনার্থী।
ইতিহাস থেকে ধারণা করা হয়, খ্রিস্ট্রীয় ১৫ শতকে উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের শুভরাড়া গ্রামে নির্মাণ করা হয় মসজিদটি। মসজিদের ভেতরের আয়তন ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি গুণন ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি, উচ্চতা ২৫ ফুট। বাইরের পরিমাপের এক মিনারের মধ্যবিন্দু হতে অন্য মিনারের দূরত্ব ২৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। মসজিদটির উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে তিনটি দরজা অবস্থিত। পূর্ব দিকে অবস্থিত সদর দরজা খিলান ১১ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট ১০ ইঞ্চি।
বিশেষ পদ্ধিতে নির্মিত অতি উন্নতমানের ইট দিয়ে অভিনব কৌশলে মুসলিম স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত খান জাহান আলী মসজিদটি। ছোট এই মসজিদে দিন দিন মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসছে এর স্থাপত্য শৈলি দেখতে। তাই কর্তৃপক্ষ মসজিদটির পূর্ব পাশে টিনসেট দিয়ে নামাজের জায়গা ঠিক করেছেন।
পীর খানজাহান আলীর এক সহযোগী এখানে মারা যান। পাশে তার কবর রয়েছে। এছাড়া তিনি এই শুভরাড়া বাশুয়াড়ীতে বিশাল একটি দীঘি খনন করেন।
কথিত আছে, একদিন এক রাতের মধ্যে এ বিশাল দীঘিটি খনন করা হয়েছিল। ৫০ হাজার লোক দীঘি খননে অংশ নিয়েছিলেন। স্থানীয় মুসল্লিরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, মসজিদটির বর্তমান আকৃতি ঠিক রেখে আরো বড় করা এবং ইমাম ও মোয়াজ্জেন থাকার ব্যবস্থা করা। এছাড়া মসজিদের ভিতরের অবকাঠামোগত কিছু ত্রুটি আছে এগুলো ঠিক করা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন জানান, শুভরাড়া খান জাহান আলী মসজিদটি দেশের একটি অনন্য নিদর্শন। এটাকে যেন আরো সুন্দর করা যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর জানান, সরকারের পক্ষে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তারপরও যদি এ ধরনের ইমারত স্থাপনা আমাদের উপজেলায় আরো কোথাও থাকে খান জাহান আলী মসজিদসহ এগুলোর ব্যাপারে সংস্কার উন্নয়ন ও পূর্ব অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতা আন্তরিকভাবে থাকবে।