যোগ্যতা ও পরিপূর্ণ শর্ত মোতাবেক কোনো লোক পাওয়া না গেলে উপস্থিত লোকদের মধ্যে যোগ্যতা ও আমানতদারি তথা সততার দিক দিয়ে যে সবচেয়ে অগ্রবর্তী হবে, তাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এক হাদিসে বর্ণিত রয়েছে- রাসূলে কারিম সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যাকে সাধারণ মুসলমানদের কোনো দায়িত্ব অর্পণ করা হয়, তার পর যদি কাউকে তার যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই একান্ত বন্ধুত্ব কিংবা সম্পর্কের কারণে কোনো পদে নিয়োগ প্রদান করে, তবে তার ওপর আল্লাহর লানত হবে। না তার ফরজ (ইবাদত) কবুল হবে, না নফল। এমনকি সে জাহান্নামে প্রবিষ্ট হবে।’ (জমউল ফাওয়ায়েদ, পৃষ্ঠা-৩২৫)
ন্যায়বিচার বিশ্বশান্তির জামিন
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোনো বিচার মীমাংসা করতে আরম্ভ করো, তখন মীমাংসা করো ন্যায়ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।’ (সূরা আন-নিসা-৫৮)
আলোচ্য আয়াতের প্রথম বাক্যটিতে আমানত পরিশোধের এবং দ্বিতীয় বাক্যে ন্যায়বিচারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে আমানত পরিশোধ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণ সম্ভবত এই যে, এর অবর্তমানে কোথাও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হতেই পারে না। কাজেই যাদের হাতে দেশের শাসনক্ষমতা থাকবে, তাদেরকে প্রথমে গচ্ছিত এই আমানতের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। অর্থাৎ, সরকারি পদগুলোয় সেসব লোককেই নিয়োগ করতে হবে যাদেরকে সর্বাধিক যোগ্য বলে মনে করবে। কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি, আত্মীয়তার সম্পর্ক কিংবা কোনো সুপারিশ অথবা ঘুষ উৎকোচ যেন কোনোক্রমেই প্রশ্রয় পেতে না পারে। অন্যথায় এর ফলে অযোগ্য, অথর্ব, আত্মসাৎকারী ও অত্যাচারী লোক সরকারি পদের অধিকারী হয়ে আসবে। অতঃপর শাসকরা যদি একান্তভাবেও দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা কামনা করে, তবুও তাদের পক্ষে সে লক্ষ্য অর্জন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব হবে না। কারণ এসব সরকারি কর্মচারীই হলো পুরো রাষ্ট্রের হাত-পা। এরাই যখন অন্যায় ও আত্মসাৎকারী হবে, তখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার আর কী উপায় থাকবে।
এ আয়াতে বিশেষভাবে একটি কথা স্মরণযোগ্য যে, এতে মহান পরোয়ারদিগার সরকারি পদগুলোকেও আমানত বলে সাব্যস্ত করে প্রথমেই এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, হ ৪র্থ পৃ: ৭-এর কলামে
- মাওলানা কাওসার আহমদ যাকারিয়া