ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

‘আমাকে মন্ত্রী নিয়ে এসেছে, শুধু তারই কথা শুনব’

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৫:৪০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১১২২ বার পড়া হয়েছে

সাত লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁসের ঘটনায় রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক আদেশে তাকে চারঘাট থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন মাদক মামলায় কারাগারে থাকা আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী সাহারা বেগম। অভিযোগের অনুলিপির সঙ্গে ৬ মিনিটি ৫৩ সেকেন্ডের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পেনড্রাইভে সরবরাহ করেন তিনি।

ওই রেকর্ডে ওসি মাহবুবুল আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘সবার ফোন বন্ধ করে আমার সামনে রাখেন। এখানে আমাকে গাইবান্ধা থেকে মন্ত্রী (প্রতিমন্ত্রী) নিয়ে এসেছে। মন্ত্রী মানে রাষ্ট্র, আমি শুধু তারই কথা শুনব।’

আলাপচারিতার একপর্যায়ে মাহবুবুল আলম তার কোয়াটারের শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে মাদক মামলায় কারাগারে থাকা আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী সাহারা বেগমের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সাথে আরও ২ লাখ টাকা দেন। কালকেই ডিবির ওসিকে বদলি করে দেব। তাহলে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। আপনি কি চাইছেন সবার কাছে অপমান হতে? আমার একটা ইশারায় আপনার স্বামী আটকে যাবে। বের হতে আমাকে আর আপনার টাকা লাগবে। কালকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসবেন। যদি পয়সা দিতে পার, তাহলে আপাতত থানা থেকে বের করে আনব। নয়ত আবার চালান দিয়ে দেব। কিসের ডিবি আতিক? আমার হাতে ১৭ জন অফিসার। সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ১৩ জন। ডিবিতে আতিক একা। বাঘকে আমি বিড়াল করে রাখছি। আতিকের চেয়ে কি আমার জ্ঞান-গরিমা কম?’

অডিওতে গৃহবধূ সাহারা বেগমের ‘সুন্দর চেহারা’ নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় ওসিকে।

জানা গেছে, গৃহবধূ সাহারা বেগম চারঘাট থানার চামটা গ্রামের আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী। মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কালু বেশ কিছু দিন ধরে কারাগারে। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি তাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। কালু গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে শলুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচন করেন। এতে স্থানীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এর জেরে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাহারা বেগম।

ওসি মাহবুবুল আলমকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহারের তথ্য জানিয়ে রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. রফিকুল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

‘আমাকে মন্ত্রী নিয়ে এসেছে, শুধু তারই কথা শুনব’

আপডেট সময় ০৫:৪০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সাত লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁসের ঘটনায় রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক আদেশে তাকে চারঘাট থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন মাদক মামলায় কারাগারে থাকা আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী সাহারা বেগম। অভিযোগের অনুলিপির সঙ্গে ৬ মিনিটি ৫৩ সেকেন্ডের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পেনড্রাইভে সরবরাহ করেন তিনি।

ওই রেকর্ডে ওসি মাহবুবুল আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘সবার ফোন বন্ধ করে আমার সামনে রাখেন। এখানে আমাকে গাইবান্ধা থেকে মন্ত্রী (প্রতিমন্ত্রী) নিয়ে এসেছে। মন্ত্রী মানে রাষ্ট্র, আমি শুধু তারই কথা শুনব।’

আলাপচারিতার একপর্যায়ে মাহবুবুল আলম তার কোয়াটারের শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে মাদক মামলায় কারাগারে থাকা আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী সাহারা বেগমের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সাথে আরও ২ লাখ টাকা দেন। কালকেই ডিবির ওসিকে বদলি করে দেব। তাহলে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। আপনি কি চাইছেন সবার কাছে অপমান হতে? আমার একটা ইশারায় আপনার স্বামী আটকে যাবে। বের হতে আমাকে আর আপনার টাকা লাগবে। কালকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসবেন। যদি পয়সা দিতে পার, তাহলে আপাতত থানা থেকে বের করে আনব। নয়ত আবার চালান দিয়ে দেব। কিসের ডিবি আতিক? আমার হাতে ১৭ জন অফিসার। সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ১৩ জন। ডিবিতে আতিক একা। বাঘকে আমি বিড়াল করে রাখছি। আতিকের চেয়ে কি আমার জ্ঞান-গরিমা কম?’

অডিওতে গৃহবধূ সাহারা বেগমের ‘সুন্দর চেহারা’ নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় ওসিকে।

জানা গেছে, গৃহবধূ সাহারা বেগম চারঘাট থানার চামটা গ্রামের আবদুল আলিম কালুর স্ত্রী। মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কালু বেশ কিছু দিন ধরে কারাগারে। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি তাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। কালু গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে শলুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচন করেন। এতে স্থানীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এর জেরে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাহারা বেগম।

ওসি মাহবুবুল আলমকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহারের তথ্য জানিয়ে রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. রফিকুল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।