ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান?

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৫:৩৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
  • ১০৯৩ বার পড়া হয়েছে

অসহযোগ আন্দোলনে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন দেশে ফেরার অপেক্ষা করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আইনি প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে তিনি যে কোনো সময় লন্ডন থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানা গেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর সপরিবারে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর দেশে ফিরছেন তিনি।

 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আইনি প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আইনজীবীরা এখনো আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেননি। তারা বলছেন, এটি দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। দল থেকে নির্দেশনা পেলেই তারা আইনি প্রক্রিয়ায় নামবেন। অবশ্য এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতনের পর দেশের মানুষ তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষা করছে। বিএনপির নেতাকর্মীসহ সবার প্রত্যাশা, উনি দ্রুততম সময়ে দেশে ফিরবেন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে উনার মামলাগুলোর বিষয়ে কথা বলবেন।’

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন তারেক রহমান। বর্তমানে তিনি দেশটিতে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়ে’ অবস্থান করছেন। লন্ডন থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বিএনপি। একই সঙ্গে নতুন সরকারের কার্যক্রম এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপরও নজর রাখছে দলটি।

জানা গেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে দলীয় সিদ্ধান্তে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবেন আইনজীবীরা। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা এবং দলপন্থি আইনজীবীরা বলছেন, তারেক রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তার মামলাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।

তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বদাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো ছিল রাজনৈতিক। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব মামলা মোকাবিলা করা হবে।’

তারেক রহমানের আইনজীবীরা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে শতাধিক মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মানি লন্ডারিং, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানহানি এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও আছে। ওয়ান-ইলেভেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা হয়। বাকি মামলাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের। এরই মধ্যে পাঁচটি মামলায় তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তার ১০ বছর দণ্ড হয়। অর্থ পাচারের একটি মামলায় ২০১৩ সালে বিচারিক আদালতের রায়ে তিনি খালাস পেলেও পরে উচ্চ আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন।

জানা যায়, ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারেক রহমানকে র‌্যাব-এর বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হেলমেট পরিয়ে ঢাকার একটি আদালতে তোলা হয়েছিল। যেভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটি দেখে অনেকেই চমকে উঠেছিলেন। তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ দলটির। তারেক রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় ছয় মাস পরে বেগম খালেদা জিয়া নিজেও গ্রেপ্তার হন। তারও আগে ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দর-কষাকষির একপর্যায়ে সেনা কর্মকর্তারা ছোট ছেলে আরাফাত রহমানকে মুক্তি দিতে সম্মত হলেও তারেক রহমানের ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি হননি। কিন্তু খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন উভয় ছেলের মুক্তি এবং তাদের বিদেশে চিকিৎসা। ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে ১৩টি মামলায় জামিন পান তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন পরিবারের সদস্যদেরকে সঙ্গে নিয়ে। বর্তমানে সেখান থেকেই তারেক রহমান শক্তভাবে দলের হাল ধরেছেন। তাঁর নেতৃত্বে দল সাংগঠনিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান?

আপডেট সময় ০৫:৩৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

অসহযোগ আন্দোলনে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন দেশে ফেরার অপেক্ষা করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আইনি প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে তিনি যে কোনো সময় লন্ডন থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানা গেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর সপরিবারে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর দেশে ফিরছেন তিনি।

 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আইনি প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আইনজীবীরা এখনো আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেননি। তারা বলছেন, এটি দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। দল থেকে নির্দেশনা পেলেই তারা আইনি প্রক্রিয়ায় নামবেন। অবশ্য এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতনের পর দেশের মানুষ তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষা করছে। বিএনপির নেতাকর্মীসহ সবার প্রত্যাশা, উনি দ্রুততম সময়ে দেশে ফিরবেন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে উনার মামলাগুলোর বিষয়ে কথা বলবেন।’

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন তারেক রহমান। বর্তমানে তিনি দেশটিতে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়ে’ অবস্থান করছেন। লন্ডন থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বিএনপি। একই সঙ্গে নতুন সরকারের কার্যক্রম এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপরও নজর রাখছে দলটি।

জানা গেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে দলীয় সিদ্ধান্তে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবেন আইনজীবীরা। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা এবং দলপন্থি আইনজীবীরা বলছেন, তারেক রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তার মামলাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।

তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বদাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো ছিল রাজনৈতিক। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব মামলা মোকাবিলা করা হবে।’

তারেক রহমানের আইনজীবীরা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে শতাধিক মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মানি লন্ডারিং, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানহানি এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও আছে। ওয়ান-ইলেভেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা হয়। বাকি মামলাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের। এরই মধ্যে পাঁচটি মামলায় তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তার ১০ বছর দণ্ড হয়। অর্থ পাচারের একটি মামলায় ২০১৩ সালে বিচারিক আদালতের রায়ে তিনি খালাস পেলেও পরে উচ্চ আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন।

জানা যায়, ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারেক রহমানকে র‌্যাব-এর বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হেলমেট পরিয়ে ঢাকার একটি আদালতে তোলা হয়েছিল। যেভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটি দেখে অনেকেই চমকে উঠেছিলেন। তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ দলটির। তারেক রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় ছয় মাস পরে বেগম খালেদা জিয়া নিজেও গ্রেপ্তার হন। তারও আগে ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দর-কষাকষির একপর্যায়ে সেনা কর্মকর্তারা ছোট ছেলে আরাফাত রহমানকে মুক্তি দিতে সম্মত হলেও তারেক রহমানের ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি হননি। কিন্তু খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন উভয় ছেলের মুক্তি এবং তাদের বিদেশে চিকিৎসা। ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে ১৩টি মামলায় জামিন পান তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন পরিবারের সদস্যদেরকে সঙ্গে নিয়ে। বর্তমানে সেখান থেকেই তারেক রহমান শক্তভাবে দলের হাল ধরেছেন। তাঁর নেতৃত্বে দল সাংগঠনিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।