কোরবানির চামড়া কেনাবেচা শুরু হয়েছে রাজধানীর পোস্তায়। গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ প্রতি পিস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক আকারে ছোট গরুর চামড়া ২০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খাসির কাঁচা চামড়া বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১০ টাকায়।
যদিও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, কাঁচা চামড়ার দাম বাড়েনি, গত বছরের মতোই আছে।
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। পাশাপাশি গত ১০ বছর ধরে কোরবানি ঈদে চামড়া ব্যবসা করেন। রাজধানীর ভূতের গলি এলাকা থেকে গড়ে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া কিনেছেন তিনি। সেগুলো বিক্রি করছেন ৮০০ টাকা দরে। সারাদিন একটা ভ্যান ও পাঁচজন মানুষ খাটিয়ে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না বলে দাবি তার।
যদিও ট্যানারি মালিকদের দাবি তারা সঠিক মানের চামড়ায় ভালো দাম দিচ্ছেন। ২৭ স্কয়ার ফুটের চামড়া এক হাজার টাকা দরে কিনছেন। ৫০০ টাকায় কিনছেন ১৪ থেকে ১৮ স্কয়ার ফুটের চামড়া।
এস-নুর লেদারের মালিক মোহাম্মদ জহির হোসেন বলেন, ‘আমরা ভালো দামে চামড়া কিনছি। চামড়ার দামও এবার ভালো। গড়ে ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় চামড়া কিনছি, গতবার এটা আশা করাও হয়নি। এবার চামড়ার দাম অনেক ভালো।’
চলতি বছর কোরবানির সময় ১ লাখ ৬০ হাজার পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন রাজধানীর পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকার আড়তদারেরা। তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার লবণযুক্ত চামড়ার দাম বেড়েছে। এছাড়া আবহাওয়াও এখন পর্যন্ত ঠিক আছে। তাই তারা আশা করছেন— লবণ দেয়ার উদ্দেশ্যে লক্ষ্য অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন।
এ বছর ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, গত বছর যা ছিল ৫০-৫৫ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় বর্গফুটপ্রতি চামড়ার দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ টাকা।
অন্যদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা, গত বছর যা ছিল ৪৫-৪৮ টাকা। এ ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ৭ টাকা। এছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০-২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৩৭৫ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাব থেকে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ২৫০ টাকা বাদ দিলে ওই চামড়ার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা।
গত বছর পুরান ঢাকার পোস্তায় মাঝারি আকারের গরুর একেকটি চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭০০-৮৫০ টাকায়। ঢাকার বাইরে দাম ছিল আরো কম।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার গরুর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা। এর পর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ২০১৭ সালের পর থেকেই ঈদের সময় পানির দরে বিক্রি হয় কাঁচা চামড়া। গত বছরও ছিল একই দশা।