গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সৈন্যরা ‘পুরোপুরি বিশৃঙ্খল’ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সাবেক ইসরাইলি মেজর জেনারেল আইজ্যাক ব্রিক। যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং লজিস্টিক সার্ভিস প্রাপ্যতার আলোকে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। আনাদুলু এই খবর প্রকাশ করেছে।
ইসরাইলি ডেইলি মারিভকে সাবেক সামরিক জেনারেল ব্রিক বলেন, ‘ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে সৃষ্ট সামগ্রিক বিশৃঙ্খলতার কথা মিডিয়ায় বলা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘সরঞ্জাম, লজিস্টিকস, খাবার, এবং আরো যেসব কিছু আমাদের পাঠানো দরকার, সেগুলো হচ্ছে না। কারণ সেনাবাহিনী সবকিছুই বেসরকারি ঠিকাদারদের ওপর ন্যস্ত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ সাথে সাথে ট্যাঙ্কগুলো মেরামত করতে পারে না। প্রত্যাহারের জন্য বিপুল সংখ্যক ট্যাঙ্ক গাজা উপত্যকায় পড়ে আছে।’
এই সাবেক ইসরাইলি জেনারেল উল্লেখ করেন, ‘অবশ্যই মিডিয়া এ নিয়ে কথা বলে না। কিন্তু সরঞ্জাম কাজ করছে না।’
ব্রিক উল্লেখ করেন, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তিনি ছয়বার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে সাক্ষাত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু তার (নেতানিয়াহুর) স্টাফ চায় না তিনি সত্য কথা শুনুন। ফলে তারা আমাকে তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম যে সেনাবাহিনী এখনই যুদ্ধে যাওয়ার মতো প্রস্তুত নয়। কারণ, অনেক সৈন্যই পাঁচ বছর ধরে প্রশিক্ষণ নেয়নি, সরঞ্জামেরও অভাব আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তাকে তাদেরকে প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুত করতে বলেছিলাম। কারণ পাবলিক এখন সরঞ্জাম ক্রয় করছে। সৌভাগ্যবশত, তিনি আমার ওই কথা শুনেছিলেন। তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে তলব করেন এবং গাজায় প্রবেশ দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন।’
গাজায় ২৭ অক্টোবর ইসরাইলের স্থল হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২৩৭ জন ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে।
আর ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের অভিযান শুরুর পর মোট ৫৭৬ জন ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরাইলি হামলায় প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। এছাড়া গাজায় ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে, নিত্যপণ্যের প্রকট অভাব দেখা দিয়েছে।
ইসরাইলি হামলায় গাজার ৮৫ ভাগ লোক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের প্রকট অভাব দেখা দিয়েছে।