মাধ্যমিক স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
গত বুধবার থেকে আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি থাকার কথা ছিল। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল হিজরি নববর্ষের নির্ধারিত ছুটি। কিন্তু গত বুধবার হঠাৎ করেই শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় এই ছুটি বাতিল করার ঘোষণা দেন। ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই তাদের শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত ছুটির রুটিন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ছুটির নোটিশও দিয়ে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই ছুটি বাতিল নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।
ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মের এই তীব্র গরমে অনেক শিক্ষার্থীই ক্লাসরুমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আবার শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকে পূর্বনির্ধারিত ছুটিতে তাদের অবকাশ পালনের জন্যও নিজস্ব পরিকল্পনা করে রেখেছেন। কিন্তু আগে থেকে না জানিয়ে গত বুধবার হঠাৎ করেই ছুটি বাতিল করায় তারাও এখন বিপাকে পড়েছেন।
অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি নিয়ে রাজধানী ঢাকায় শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচির আন্দোলন গত ১০ দিন ধরে চলমান রয়েছে। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেও শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ের কোনো সুসংবাদ পাননি। ফলে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
অনেক শিক্ষক নেতা মনে করছেন, শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত করতে শিক্ষকদের ক্লাসরুমে ফেরত পাঠানোর কৌশল হিসেবেই গ্রীষ্মকালীন এই নির্ধারিত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অনেক শিক্ষক নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সবাই যখন একাত্মতা ঘোষণা করে গ্রীষ্মের এই ছুটিতে আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য ঢাকায় আসছেন, ঠিক তখনি ছুটি বাতিল করে শিক্ষকদের আন্দোলনকে বন্ধ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার মাউশি থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হিজরি নববর্ষে বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আগামী ২৩ জুলাই রোববার থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে। বাতিল করা গ্রীষ্মকালীন ছুটি আগামী শীতকালীন ছুটির সাথে সমন্বয় করা হবে।
এতদসঙ্গে আরো জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান ও মূল্যায়নসহ অন্যান্য শ্রেণির পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হবে।