একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়ার জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। আজ বুধবার সকালে মহিবুলকে রাজশাহী মুখ্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) হাজির করা হলে বিচারক আল আসাদ আশিকুজ্জামান জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে কর উপ-কমিশনারকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার হওয়া কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়ার বাড়ি বাগেরহাটে। তিনি ২৫তম কর ক্যাডারের কর্মকর্তা।
দুদকের আইনজীবী শহিদুল হক খোকন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া কর উপ-কর কমিশনারকে আজ সকালে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মহিবুল ইসলামের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। দুদকের আইনজীবীরা মহিবুলের জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন। দুপক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মহিবুল ইসলামের জামিনের আবেদন করেছিলাম। তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। বিচারক দুপক্ষের শুনানি শেষে মহিবুলের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আমরা নথিপত্র পেয়ে উচ্চ আদালতে পুনরায় জামিনের আবেদন করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর গাইনী বিশেষজ্ঞ ও মাদারল্যান্ড ফার্টিলিটি হাসপাতালের সত্ত্বাধিকারী ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার নিস্পত্তি হওয়া বেশ কিছু কর রিটার্ন প্রতিবেদনে ২৬ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও কর ফাঁকির অভিযোগে ফাইল পুণরায় চালু করেন মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়া। ডা.ফাতেমা সিদ্দিকার অতীতের আয়কর রিটার্ন ফাইলে গুরুতর অসঙ্গতির কারণে তার ওপর নতুন করে সাড়ে ৩ কোটি টাকা কর নিরূপণের প্রক্রিয়া চলছিল। এর মধ্যে ফাইলগুলি জরিমানা ছাড়া নিস্পত্তির জন্য উপ-কমিশনার মহিবুল ৬০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ৫০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়ে গোপনে দুদকে মহিবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ও তার স্বামী ইউসুফ ইসলাম উপ-কমিশনার মহিবুলের কক্ষে গিয়ে ১০ লাখ নগদ টাকা প্রদান করেন। তারা মহিবুলের কক্ষ থেকে বের হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই দুদকের বিভাগীয় পরিচালক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালায়।