ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চরফ্যাশনে ৯টি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল এমপিও ভূক্ত থেকে বঞ্চিত

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:২২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১১২৩ বার পড়া হয়েছে

চরফ্যাশনের উপকূলীয় অঞ্চলে মাধ্যমিক পর্যায়ে শতকরা ২৫% শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ায় ৯টি নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভূক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ৪২ ভাগ শিশু প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন স্তর থেকে ঝরে যাচ্ছে।

সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে এই সকল শিক্ষার্থীরা বাল্য বিবাহ, মাছ ধরা, শিশু শ্রমসহ নানান কাজের জন্যে ঝড়ে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রশ্ন অষ্পষ্টতা এবং এই সকল শিক্ষার্থীরা মৌসুমী শিশু শ্রম থেকে লোভনীয় উপার্জনের সুযোগ শিশুদের শিক্ষাজীবন থেকে কর্মজীবনে ঠেলে দিচ্ছে ।

একটি বে-সরকারী উন্নয়ণ সংস্থার তথ্যে জানা গেছে চরফ্যাশন উপজেলার আয়তন ১১০৬ বর্গ কিঃমিঃ। বিচ্ছিন্ন দীপাঞ্চল সমন্বয়ে এই উপজেলায় নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯টি, ২৬০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১০ টি স^তন্ত্র এবতেদায়ী, ৭০ টি সংযুক্ত এবতেদায়ী, ১৮টি কিন্ডার গার্টেন এবং ১৩৫ টি এনজিও চালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

বছরের শুরুতে বিদ্যালয় গমনোপযোগী সব শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও বিভিন্ন শ্রেণিতে এসে শিশুরা বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে যাচ্ছে। ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির মেয়ে শিশুদের একটা অংশ নিয়মিত ঝরে যাচ্ছে বাল্য বিবাহের কারণে। এদিকে বিদ্যালয়ে ভর্তিকতৃ শিশুর ৪২ শতাংশ পঞ্চম শ্রেণির গন্ডি অতিক্রম করার আগেই লেখা পড়ার পর্ব চুকিয়ে জীবিকার সন্ধানে নেমে পরে।

সরেজমিন গিয়ে জানাগেছে, বিদ্যালয়ের দূরবর্তী অবস্থান, দূর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা, অভিভাবকদের দারিদ্র,শিক্ষা অর্জনকে ব্যয় সাপেক্ষ মনে করা, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অষ্পষ্টতা এবং মৌসুমী শিশু শ্রম থেকে লোভনীয় আয়ের সুযোগ, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং বাল্যবিবাহ শিশুদের বিদ্যালয় থেকে জীবন সংগ্রামের ক্ষেত্রে টেনে নিচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২সালে প্রাথমিকে বালক ৯৯.৫৭% ও বালিকা ৯৯.৫৯% শিশু ভর্তির তথ্যে ৪.৩২% ঝরে পড়ার হার দেখানো হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোর দেয়া তথ্যমতে শতভাগ ভর্তি দেখানো হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ব্যতিত ভর্তিযোগ্য কিন্তু ভর্তি হয়নি এমন শিশুর তালিকায় দেখানো হয়েছে বালক বালিকা মোট ২০৮জন। অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরতদের জানা নেই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী মোর্শেদা বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ডকুমেন্টস বা কোনো তালিকা আমাদের কাছে নেই। তবে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, চরফ্যাশন উপজেলায় যান্ত্রিক অযান্ত্রিক ১১হাজার ট্রলার ও নৌকায় ১০-১৮বছরের নিচে প্রতিদিন অন্তত ১০হাজার শিশু নদী ও সাগরে যাচ্ছে মৎস্য শিকারের জন্য। এসব ট্রলার নৌকায় মৎস্য শিকারের কাজ করছে ৪৪হাজার ৩১১জন জেলে।

উপজেলার নুরাবাদ নিন্ম মাধ্যমিক বিবদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম বলেন, করোনায় ২০২০-২১সালে আমাদের বিদ্যালয়ের শতকার ২৫% শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি মালা মোতাবেক আমাদের বিদ্যালয়টি আপিলে গেলে তা এমপিও ভূক্তির আমলে নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিন শ্রেণিতে ১৫৫জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও বছর শেষে ৮৯জন শিক্ষার্থি পাওয়া গেছে। তিনি জানান, ৬ষ্ট শ্রেণিতে ১৯জন,৭ম শ্রেণিতে ২৫জন,৮ম শ্রেণিতে ২১জন, ঝড়ে পড়েছে।

হাওলাদারের হাট নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের উপজেলায় কভিট-১৯ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার ফলে ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এতে প্রায় ৮৫জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতা তাদের ভাগ্যে জুটেনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, করোনা পরবর্তী বিদ্যালয়গুলোতে ২৫% শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। বর্তমানে শহর এলাকায় ঝরে পড়ার হার কম থাকলেও চর এলাকায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থী রয়েছে। অভাবগ্রস্থ দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, যে সকল নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়ে চলমান রয়েছে তাদের বেতন ভাতা দেয়া প্রয়োজন। করোনায় বেশ কিছু শিক্ষার্থীা ঝড়ে পড়েছে তা সত্য।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

চরফ্যাশনে ৯টি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল এমপিও ভূক্ত থেকে বঞ্চিত

আপডেট সময় ১১:২২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

চরফ্যাশনের উপকূলীয় অঞ্চলে মাধ্যমিক পর্যায়ে শতকরা ২৫% শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ায় ৯টি নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভূক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ৪২ ভাগ শিশু প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন স্তর থেকে ঝরে যাচ্ছে।

সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে এই সকল শিক্ষার্থীরা বাল্য বিবাহ, মাছ ধরা, শিশু শ্রমসহ নানান কাজের জন্যে ঝড়ে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রশ্ন অষ্পষ্টতা এবং এই সকল শিক্ষার্থীরা মৌসুমী শিশু শ্রম থেকে লোভনীয় উপার্জনের সুযোগ শিশুদের শিক্ষাজীবন থেকে কর্মজীবনে ঠেলে দিচ্ছে ।

একটি বে-সরকারী উন্নয়ণ সংস্থার তথ্যে জানা গেছে চরফ্যাশন উপজেলার আয়তন ১১০৬ বর্গ কিঃমিঃ। বিচ্ছিন্ন দীপাঞ্চল সমন্বয়ে এই উপজেলায় নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯টি, ২৬০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১০ টি স^তন্ত্র এবতেদায়ী, ৭০ টি সংযুক্ত এবতেদায়ী, ১৮টি কিন্ডার গার্টেন এবং ১৩৫ টি এনজিও চালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

বছরের শুরুতে বিদ্যালয় গমনোপযোগী সব শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও বিভিন্ন শ্রেণিতে এসে শিশুরা বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে যাচ্ছে। ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির মেয়ে শিশুদের একটা অংশ নিয়মিত ঝরে যাচ্ছে বাল্য বিবাহের কারণে। এদিকে বিদ্যালয়ে ভর্তিকতৃ শিশুর ৪২ শতাংশ পঞ্চম শ্রেণির গন্ডি অতিক্রম করার আগেই লেখা পড়ার পর্ব চুকিয়ে জীবিকার সন্ধানে নেমে পরে।

সরেজমিন গিয়ে জানাগেছে, বিদ্যালয়ের দূরবর্তী অবস্থান, দূর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা, অভিভাবকদের দারিদ্র,শিক্ষা অর্জনকে ব্যয় সাপেক্ষ মনে করা, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অষ্পষ্টতা এবং মৌসুমী শিশু শ্রম থেকে লোভনীয় আয়ের সুযোগ, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং বাল্যবিবাহ শিশুদের বিদ্যালয় থেকে জীবন সংগ্রামের ক্ষেত্রে টেনে নিচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২সালে প্রাথমিকে বালক ৯৯.৫৭% ও বালিকা ৯৯.৫৯% শিশু ভর্তির তথ্যে ৪.৩২% ঝরে পড়ার হার দেখানো হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোর দেয়া তথ্যমতে শতভাগ ভর্তি দেখানো হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ব্যতিত ভর্তিযোগ্য কিন্তু ভর্তি হয়নি এমন শিশুর তালিকায় দেখানো হয়েছে বালক বালিকা মোট ২০৮জন। অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরতদের জানা নেই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী মোর্শেদা বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ডকুমেন্টস বা কোনো তালিকা আমাদের কাছে নেই। তবে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, চরফ্যাশন উপজেলায় যান্ত্রিক অযান্ত্রিক ১১হাজার ট্রলার ও নৌকায় ১০-১৮বছরের নিচে প্রতিদিন অন্তত ১০হাজার শিশু নদী ও সাগরে যাচ্ছে মৎস্য শিকারের জন্য। এসব ট্রলার নৌকায় মৎস্য শিকারের কাজ করছে ৪৪হাজার ৩১১জন জেলে।

উপজেলার নুরাবাদ নিন্ম মাধ্যমিক বিবদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম বলেন, করোনায় ২০২০-২১সালে আমাদের বিদ্যালয়ের শতকার ২৫% শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি মালা মোতাবেক আমাদের বিদ্যালয়টি আপিলে গেলে তা এমপিও ভূক্তির আমলে নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিন শ্রেণিতে ১৫৫জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও বছর শেষে ৮৯জন শিক্ষার্থি পাওয়া গেছে। তিনি জানান, ৬ষ্ট শ্রেণিতে ১৯জন,৭ম শ্রেণিতে ২৫জন,৮ম শ্রেণিতে ২১জন, ঝড়ে পড়েছে।

হাওলাদারের হাট নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের উপজেলায় কভিট-১৯ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার ফলে ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এতে প্রায় ৮৫জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতা তাদের ভাগ্যে জুটেনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, করোনা পরবর্তী বিদ্যালয়গুলোতে ২৫% শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। বর্তমানে শহর এলাকায় ঝরে পড়ার হার কম থাকলেও চর এলাকায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থী রয়েছে। অভাবগ্রস্থ দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, যে সকল নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়ে চলমান রয়েছে তাদের বেতন ভাতা দেয়া প্রয়োজন। করোনায় বেশ কিছু শিক্ষার্থীা ঝড়ে পড়েছে তা সত্য।