ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চাষী নজরুল ইসলাম চলচ্চিত্রের নিপুণ কারিগর

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:১৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৩৬৪ বার পড়া হয়েছে

স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ নির্মাণ করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন। অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের দেবদাস উপন্যাস অবলম্বনে ‘দেবদাস’ সিনেমা করে সাহিত্যভিত্তিক চলচ্চিত্রেরও সার্থক রূপকার তিনি। বলছি চলচ্চিত্রের নিপুণ কারিগর চাষী নজরুল ইসলামের কথা। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৫ সালের আজকের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। তাকে নিয়েই এই আয়োজন। লিখেছেন- জাহিদ ভূঁইয়া

ওরা ১১ জন

১৯৭২ সাল। মাত্রই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ওই সময়েই তরুণ চাষী নজরুল নির্মাণ করলেন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। সিনেমার নামকরণ করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে খসরুসহ ১১ জন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আরও ছিলেন কিংবদন্তি রাজ্জাক, শাবানারা। ছবিটিকে নানন্দিক ও বাস্তবিক করে তুলতে যা প্রয়োজন, তার সবই করেছেন চাষী নজরুল। মুক্তির আগে থেকেই আলোচিত ছবিটি মুক্তির এত বছর পর আজও জনপ্রিয়।

শুভদা

১৯৮৬ সালে শরৎ সাহিত্য থেকে তার নির্মিত ‘শুভদা’ ১৩ ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। যেটি ছিল বিরল এক রেকর্ড। সে রেকর্ড আড়াই যুগ পর ভাঙে গাজী রাকায়েতের ‘মৃত্তিকা মায়া’ ছবিটি। রাজ্জাক, বুলবুল আহমেদ, জিনাত, গোলাম মোস্তফার পাশাপাশি এ ছবিতে অভিনয় করেন আনোয়ারা। যেটিকে তার ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ অভিনয় ধরা হয়।

হাঙর নদী গ্রেনেড

সেলিনা হোসেনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ নিয়ে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার সতজিৎ রায় সিনেমা নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। দেশের অন্যতম সেরা নির্মাতা আলমগীর কবির তো কিছুদিন শুটিংও করেছিলেন। তিনিও শেষ করতে পারেননি। তবে চাষী নজরুল ১৯৯৭ সালে ছবিটি নির্মাণ করেন সরকারি অনুদান নিয়ে। ছবির প্রধান চরিত্রে সুচরিতার অভিনয় এখনো সব মহলে সমাদৃত। এ ছবিও ৩ শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

দেবদাস

চাষী নজরুলের আরেক নান্দনিক নির্মাণ ‘দেবদাস’। ১৯৮২ সালে বুলবুল আহমেদ, কবরী ও আনোয়ারাকে নিয়ে তিনি যখন ছবিটি নির্মাণ করেন, তখন বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন। কারণ শরৎ সাহিত্য নিয়ে ভারতে ততদিনে একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। তবে চাষী নজরুল বেশ সফল হন। শরৎ সাহিত্য নিয়ে এটি দেশের দ্বিতীয় নির্মাণ হলেও এখন পর্যন্ত দর্শক পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। দেবদাসের ভূমিকায় বুলবুল আহমেদ এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে, আজও তিনি ‘বাংলার দেবদাস’ হিসেবে খ্যাত। ‘পার্বতী’র ভূমিকায় কবরীর অভিনয়ও ছিল অনন্য। ছবিটিকে রিমেকের অজুহাত তুলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ড তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল। মজার কথা হচ্ছে- ২০১৩ সালে ছবিটি পুনর্নির্মাণ করেন শাকিব খান, মৌসুমী ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে। তখন ছবিটি ২টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

শাস্তি

শরৎ, সেলিনা হোসেনের পর চাষী নজরুল রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে বানান ‘শাস্তি’। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি এ দেশে রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে বানানো প্রথম ছবি। এর আগে দেশে রবীন্দ্র সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবি নির্মিত হলেও কেউ স্বীকার করেননি। রিয়াজ, পূর্ণিমা, চম্পা, ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত ছবিটি ২ শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

হাছন রাজা

মরমি সাধক হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে ২০০২ সালে চাষী নজরুল ইসলাম তৈরি করেন ‘হাছন রাজা’। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন হেলাল খান। বিনোদিনীর চরিত্রে ছিলেন শমী কায়সার। সিলেট অঞ্চলের জমিদারপুত্র হাছন রাজাকে নিয়ে নির্মিত চাষী নজরুলের এই চলচ্চিত্রও অর্জন করেছিল শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ ছয়টি জাতীয় পুরস্কার।

মেঘের পরে মেঘ

জনপ্রিয় কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘মেঘের পরে মেঘ’ ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। পরিচালনা করেছেন চাষী নজরুল ইসলাম। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর সময়কালের পটভূমিকায় দেশপ্রেম, ভালোবাসা এবং ত্যাগের বীরত্ব বিস্তৃত হয়েছে এতে। অভিনয় করেছেন রিয়াজ, পূর্ণিমা, মাহফুজ প্রমুখ।

তাদের স্মৃতিপটে

ববিতা

চলচ্চিত্রাঙ্গনে চাষী ভাইয়ের অবদান তাকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখবে। আমাদের চলচ্চিত্রকে তিনি সমৃদ্ধ করে গেছেন অনবদ্য সব কাজ দিয়ে। তার নির্দেশনায় আমি ‘বিরহ ব্যথা’, ‘লেডি স্মাগলার’, ‘বেহুলা লখিন্দর’, ‘মিয়া ভাই’, ‘ভালো মানুষ’ ও ‘হাছন রাজা’ ছবিতে অভিনয় করেছি। আমাদের তিন বোনের সঙ্গে চাষী ভাইয়ের সম্পর্কটা ছিল নিবিড়। পরিবারের বিভিন্ন সমস্যায় আমরা তাকে সব সময়ই কাছে পেয়েছি।

মৌসুমী

চাষী ভাই শুধু আমাদের নন, বাংলা চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবক ছিলেন। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে গেছেন, কিছু ছিল অপূর্ণ। তার সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। একটি নয়, চাষী ভাইয়ের পরিচালনায় তিনটি ছবিতে কাজ করেছি। এর মধ্যে ‘দেবদাস’ আমার জীবনের স্মৃতিময় একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। সত্যি বলতে কী, তার মতো পরিচালক হয় না। উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র তৈরিতে তিনি ছিলেন ‘মাস্টার’।

পূর্ণিমা

চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমার প্রথম ছবি ‘মেঘের পরে মেঘ’। ওই সিনেমায় অভিনয়ের সময়ে আমাদের মধ্যে খুব ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আমি যেন তার পরিবারেরই সদস্য হয়ে উঠেছিলাম। আমার প্রথম বিয়ের সময় অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন। বাচ্চা হওয়ার খবর শুনেও কোথা থেকে এসে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের বোঝাপড়ার জায়গাটা ছিল খুব পরিষ্কার।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

চাষী নজরুল ইসলাম চলচ্চিত্রের নিপুণ কারিগর

আপডেট সময় ১০:১৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ নির্মাণ করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন। অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের দেবদাস উপন্যাস অবলম্বনে ‘দেবদাস’ সিনেমা করে সাহিত্যভিত্তিক চলচ্চিত্রেরও সার্থক রূপকার তিনি। বলছি চলচ্চিত্রের নিপুণ কারিগর চাষী নজরুল ইসলামের কথা। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৫ সালের আজকের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। তাকে নিয়েই এই আয়োজন। লিখেছেন- জাহিদ ভূঁইয়া

ওরা ১১ জন

১৯৭২ সাল। মাত্রই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ওই সময়েই তরুণ চাষী নজরুল নির্মাণ করলেন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। সিনেমার নামকরণ করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে খসরুসহ ১১ জন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আরও ছিলেন কিংবদন্তি রাজ্জাক, শাবানারা। ছবিটিকে নানন্দিক ও বাস্তবিক করে তুলতে যা প্রয়োজন, তার সবই করেছেন চাষী নজরুল। মুক্তির আগে থেকেই আলোচিত ছবিটি মুক্তির এত বছর পর আজও জনপ্রিয়।

শুভদা

১৯৮৬ সালে শরৎ সাহিত্য থেকে তার নির্মিত ‘শুভদা’ ১৩ ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। যেটি ছিল বিরল এক রেকর্ড। সে রেকর্ড আড়াই যুগ পর ভাঙে গাজী রাকায়েতের ‘মৃত্তিকা মায়া’ ছবিটি। রাজ্জাক, বুলবুল আহমেদ, জিনাত, গোলাম মোস্তফার পাশাপাশি এ ছবিতে অভিনয় করেন আনোয়ারা। যেটিকে তার ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ অভিনয় ধরা হয়।

হাঙর নদী গ্রেনেড

সেলিনা হোসেনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ নিয়ে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার সতজিৎ রায় সিনেমা নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। দেশের অন্যতম সেরা নির্মাতা আলমগীর কবির তো কিছুদিন শুটিংও করেছিলেন। তিনিও শেষ করতে পারেননি। তবে চাষী নজরুল ১৯৯৭ সালে ছবিটি নির্মাণ করেন সরকারি অনুদান নিয়ে। ছবির প্রধান চরিত্রে সুচরিতার অভিনয় এখনো সব মহলে সমাদৃত। এ ছবিও ৩ শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

দেবদাস

চাষী নজরুলের আরেক নান্দনিক নির্মাণ ‘দেবদাস’। ১৯৮২ সালে বুলবুল আহমেদ, কবরী ও আনোয়ারাকে নিয়ে তিনি যখন ছবিটি নির্মাণ করেন, তখন বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন। কারণ শরৎ সাহিত্য নিয়ে ভারতে ততদিনে একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। তবে চাষী নজরুল বেশ সফল হন। শরৎ সাহিত্য নিয়ে এটি দেশের দ্বিতীয় নির্মাণ হলেও এখন পর্যন্ত দর্শক পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। দেবদাসের ভূমিকায় বুলবুল আহমেদ এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে, আজও তিনি ‘বাংলার দেবদাস’ হিসেবে খ্যাত। ‘পার্বতী’র ভূমিকায় কবরীর অভিনয়ও ছিল অনন্য। ছবিটিকে রিমেকের অজুহাত তুলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ড তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল। মজার কথা হচ্ছে- ২০১৩ সালে ছবিটি পুনর্নির্মাণ করেন শাকিব খান, মৌসুমী ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে। তখন ছবিটি ২টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

শাস্তি

শরৎ, সেলিনা হোসেনের পর চাষী নজরুল রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে বানান ‘শাস্তি’। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি এ দেশে রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে বানানো প্রথম ছবি। এর আগে দেশে রবীন্দ্র সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবি নির্মিত হলেও কেউ স্বীকার করেননি। রিয়াজ, পূর্ণিমা, চম্পা, ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত ছবিটি ২ শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

হাছন রাজা

মরমি সাধক হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে ২০০২ সালে চাষী নজরুল ইসলাম তৈরি করেন ‘হাছন রাজা’। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন হেলাল খান। বিনোদিনীর চরিত্রে ছিলেন শমী কায়সার। সিলেট অঞ্চলের জমিদারপুত্র হাছন রাজাকে নিয়ে নির্মিত চাষী নজরুলের এই চলচ্চিত্রও অর্জন করেছিল শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ ছয়টি জাতীয় পুরস্কার।

মেঘের পরে মেঘ

জনপ্রিয় কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘মেঘের পরে মেঘ’ ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। পরিচালনা করেছেন চাষী নজরুল ইসলাম। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর সময়কালের পটভূমিকায় দেশপ্রেম, ভালোবাসা এবং ত্যাগের বীরত্ব বিস্তৃত হয়েছে এতে। অভিনয় করেছেন রিয়াজ, পূর্ণিমা, মাহফুজ প্রমুখ।

তাদের স্মৃতিপটে

ববিতা

চলচ্চিত্রাঙ্গনে চাষী ভাইয়ের অবদান তাকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখবে। আমাদের চলচ্চিত্রকে তিনি সমৃদ্ধ করে গেছেন অনবদ্য সব কাজ দিয়ে। তার নির্দেশনায় আমি ‘বিরহ ব্যথা’, ‘লেডি স্মাগলার’, ‘বেহুলা লখিন্দর’, ‘মিয়া ভাই’, ‘ভালো মানুষ’ ও ‘হাছন রাজা’ ছবিতে অভিনয় করেছি। আমাদের তিন বোনের সঙ্গে চাষী ভাইয়ের সম্পর্কটা ছিল নিবিড়। পরিবারের বিভিন্ন সমস্যায় আমরা তাকে সব সময়ই কাছে পেয়েছি।

মৌসুমী

চাষী ভাই শুধু আমাদের নন, বাংলা চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবক ছিলেন। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে গেছেন, কিছু ছিল অপূর্ণ। তার সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। একটি নয়, চাষী ভাইয়ের পরিচালনায় তিনটি ছবিতে কাজ করেছি। এর মধ্যে ‘দেবদাস’ আমার জীবনের স্মৃতিময় একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। সত্যি বলতে কী, তার মতো পরিচালক হয় না। উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র তৈরিতে তিনি ছিলেন ‘মাস্টার’।

পূর্ণিমা

চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমার প্রথম ছবি ‘মেঘের পরে মেঘ’। ওই সিনেমায় অভিনয়ের সময়ে আমাদের মধ্যে খুব ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আমি যেন তার পরিবারেরই সদস্য হয়ে উঠেছিলাম। আমার প্রথম বিয়ের সময় অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন। বাচ্চা হওয়ার খবর শুনেও কোথা থেকে এসে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের বোঝাপড়ার জায়গাটা ছিল খুব পরিষ্কার।