ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চোখের রোগ ইউভাইটিসে করণীয়

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১২:১৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
  • ১১১৪ বার পড়া হয়েছে

চোখের পুষ্টি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রক্তনালিপূর্ণ একটি স্তর বা লেয়ার আছে। এটির নাম ইউভিয়া বা ভাসকুলার কোর্ট। আর চোখের মধ্যস্তরকে বলা হয়ে থাকে ইউভিয়া। ইউভিয়া এবং এটির চারপাশের টিস্যুগুলোয় যে প্রদাহ হয়ে থাকে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তার নাম ‘ইউভাইটিস’। রোগীর একটি অথবা উভয় চোখই এতে আক্রান্ত হতে পারে।

যে কারণে হয় : চোখে আঘাত, জীবাণুর সংক্রমণ, কানেকটিভ টিস্যু বা যোজককলার রোগ ইত্যাদি কারণে এ রোগ হতে পারে। চোখে ভীষণ ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, আলোর ভেতর যেতে না অসুবিধা হওয়া, মাথাব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ অনেক দেরিতে বোঝা যায়। আর এ কারণে এক পর্যায়ে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। সময়মতো চিকিৎসা না করানো সম্ভব হলে রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

লক্ষণ : চোখে কম দেখা, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখের সামনে কালো বিন্দু ভেসে বেড়াতে দেখা, আলোর প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীলতা বা ফটোফোবিয়া, চোখে ব্যথা করা এবং লাল হয়ে যাওয়া, মাথায় যন্ত্রণা হওয়া, তারারন্ধ্র ছোট হয়ে যাওয়া, চোখের তারার রঙ পরিবর্তন হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

কারণ : ইউভাইটিস রোগের সঠিক কারণ এখনো চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা উদ্ঘাটন করতে পারেননি। সাধারণত অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখতে পাওয়া যায়, যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রোগীর চোখসহ বিভিন্ন টিস্যুর ওপর আক্রমণ করে থাকে।

রোগের কারণ : আলসারেটিভ কোলাইটিস, এইচআইভি সংক্রমণ, হারপিস, লাইম ডিজিজ, সিফিলিস, টিউবারকিউলোসিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, চোখের তীব্র আঘাত লাগলে, কোনো বিষাক্ত দ্রব্য চোখে ঢুকে যাওয়া এবং ধূমপান।

রোগ নির্ণয় : এই রোগটি নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসক রোগীর চোখ পরিষ্কার না ঝাপসা, সেটি পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। যেমনÑ সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ও প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয়। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ করা। ত্বকের পরীক্ষা। চোখের ভেতরে উপস্থিত তরলের পরীক্ষা করার মাধ্যমে রোগটি নির্ণয় করা যায়।

চিকিৎসা : প্রদাহ কমাতে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ দিয়ে থাকেন। তারারন্ধ্র প্রসারণে সাহায্য করতে মাইড্রিয়াটিক চোখের ড্রপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। গাঢ় রঙের চশমা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতায় সাহায্য করতে পারে। এই সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে দ্রত চোখের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

চোখের রোগ ইউভাইটিসে করণীয়

আপডেট সময় ১২:১৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

চোখের পুষ্টি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রক্তনালিপূর্ণ একটি স্তর বা লেয়ার আছে। এটির নাম ইউভিয়া বা ভাসকুলার কোর্ট। আর চোখের মধ্যস্তরকে বলা হয়ে থাকে ইউভিয়া। ইউভিয়া এবং এটির চারপাশের টিস্যুগুলোয় যে প্রদাহ হয়ে থাকে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তার নাম ‘ইউভাইটিস’। রোগীর একটি অথবা উভয় চোখই এতে আক্রান্ত হতে পারে।

যে কারণে হয় : চোখে আঘাত, জীবাণুর সংক্রমণ, কানেকটিভ টিস্যু বা যোজককলার রোগ ইত্যাদি কারণে এ রোগ হতে পারে। চোখে ভীষণ ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, আলোর ভেতর যেতে না অসুবিধা হওয়া, মাথাব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ অনেক দেরিতে বোঝা যায়। আর এ কারণে এক পর্যায়ে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। সময়মতো চিকিৎসা না করানো সম্ভব হলে রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

লক্ষণ : চোখে কম দেখা, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখের সামনে কালো বিন্দু ভেসে বেড়াতে দেখা, আলোর প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীলতা বা ফটোফোবিয়া, চোখে ব্যথা করা এবং লাল হয়ে যাওয়া, মাথায় যন্ত্রণা হওয়া, তারারন্ধ্র ছোট হয়ে যাওয়া, চোখের তারার রঙ পরিবর্তন হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

কারণ : ইউভাইটিস রোগের সঠিক কারণ এখনো চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা উদ্ঘাটন করতে পারেননি। সাধারণত অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখতে পাওয়া যায়, যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রোগীর চোখসহ বিভিন্ন টিস্যুর ওপর আক্রমণ করে থাকে।

রোগের কারণ : আলসারেটিভ কোলাইটিস, এইচআইভি সংক্রমণ, হারপিস, লাইম ডিজিজ, সিফিলিস, টিউবারকিউলোসিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, চোখের তীব্র আঘাত লাগলে, কোনো বিষাক্ত দ্রব্য চোখে ঢুকে যাওয়া এবং ধূমপান।

রোগ নির্ণয় : এই রোগটি নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসক রোগীর চোখ পরিষ্কার না ঝাপসা, সেটি পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। যেমনÑ সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ও প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয়। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ করা। ত্বকের পরীক্ষা। চোখের ভেতরে উপস্থিত তরলের পরীক্ষা করার মাধ্যমে রোগটি নির্ণয় করা যায়।

চিকিৎসা : প্রদাহ কমাতে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ দিয়ে থাকেন। তারারন্ধ্র প্রসারণে সাহায্য করতে মাইড্রিয়াটিক চোখের ড্রপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। গাঢ় রঙের চশমা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতায় সাহায্য করতে পারে। এই সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে দ্রত চোখের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন