ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

জাপা নির্বাচনে যেতে যেসব দাবি জানালেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৭:২২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • ১১২৫ বার পড়া হয়েছে

বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনসহ ১০০ আসন এবং ১০ জন মন্ত্রী ছাড়া জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট করে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা আড়াইটায় রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির জরুরি যৌথসভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

এর আগে সকাল ১১টায় শুরু হওয়া যৌথসভা চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুব সংহতি সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মহানগর যুব সংহতি সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, সাধারণ সম্পাদক শান্তি কাদেরী, মহানগর ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত আসিফ, সভাপতি আমিনুল ইসলামি ছোট, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জসিম, জেলা ছাত্রসমাজ আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম। এছাড়া আট উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।

সভাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত দলের চেয়ারম্যানের কাছে জানিয়ে দিয়েছি। প্রথমত: আমাদের সিদ্ধান্ত এই প্রহসনের নির্বাচনে না করার। আর যদি পরবর্তী স্টেজে দল মনে করে মহাজোটের ব্যানারে এই অবস্থায়ও নির্বাচনে যাবে, তাহলে মিনিমাম আমাদের ১০০ আসন আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করি তাহলে রংপুর অঞ্চলের ২২ আসনসহ ১০০ আসন, ১০টি মন্ত্রী আমাদের দিতে হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে কোনো ছাড় নয়। যেহেতু এইসব আসনের প্রত্যেকটিতে আমাদের লক্ষাধিক ভোট আছে, এইসব জায়গায় আমরা ছাড়ব কেন। এই জায়গায় ছাড় দেয়ার সুযোগ নাই। এটাকে রেখে যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমরা কনসিডার করব নির্বাচনে যাওয়া যায় কিনা।’

এক প্রশ্নের উত্তরে মোস্তফা বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা মাঠ পর্যায়ে কোনো কর্মসূচি দিতে পারছি না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করতেই জরুরি সভা। এছাড়া সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের আলোকেই নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখারও সিদ্ধান্ত হয়।’

রওশন এরশাদ প্রসঙ্গে মোস্তফা বলেন, ‘রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির দলীয় সিদ্ধান্ত দেয়ার কেউ নন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উনি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার কার্যক্ষমতা বলতে কিছু নাই। জাস্ট এটা অলঙ্কারিক পদ। সিদ্ধান্ত দলের রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী চেয়ারম্যান, মহাসচিবের। সব কিছু গঠনতন্ত্রে মেইনশন করা আছে। উনি যদি ইলেকশন করে করতে পারে, তাহলে ওনাকে কাস্তে মার্কা, বা বেলুন মার্কা বা ফুটবলর্মাকা নিয়ে ইলেকশন করতে হবে। আর যদি লাঙ্গল নিয়ে ইলেকশন করতে চান। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে লাঙ্গল মার্কা নিয় করার কোনো সুযোগ নাই।‘

যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় ভাই প্রেসিডেন্ট ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, ‘আমরা ১৪ নভেম্বর ঢাকায় যৌথসভায় ৬৩ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দিয়েছি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ভোটে যেতে চাই না। আওয়ামী লীগের দালালি আর করতে চাই না। আমরা ১৪-১৫ বছর আওয়ামী লীগের দালালি করেছি। মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি। আমরা আর দালাল হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত হতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা যেটা মানুষ চাচ্ছে, ৮০ ভাগ মানুষ চাচ্ছে যে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। রাতের অন্ধকারের ভোট এটা বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছে না। এই ধরণের ভোটে যেন জাতীয় পার্টি না যায়, আমরা সেই প্রত্যাশায় রাখতেছি। আজকের মিটিংয়ে প্রত্যেকটা বক্তাই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছে যে এই সরকারের অধীনে যেন জাতীয় পার্টি ভোটে না যায়।‘

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে আমরাই সব কিছু দিয়েছি। থ্রিটাইম আমাদের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমাদের সাথে কোনো ভালো আচরণ করে নাই। এজন্য আমরা এবার এই নির্বাচনটার মধ্যে আওয়ামী লীগের সাথে আর সংসার করতে না চাওয়ার কথা কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই এককভাবে জাতীয় পার্টিকে প্রতিষ্ঠিত করে কিভাবে সুষ্ঠু এবং অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাব। জিএম কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী বানাব।’

যৌথসভায় রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং ৩৩টি ওয়ার্ড, এবং আট উপজেলা, তিনটি পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ অংশ নেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

জাপা নির্বাচনে যেতে যেসব দাবি জানালেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা

আপডেট সময় ০৭:২২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনসহ ১০০ আসন এবং ১০ জন মন্ত্রী ছাড়া জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট করে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা আড়াইটায় রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির জরুরি যৌথসভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

এর আগে সকাল ১১টায় শুরু হওয়া যৌথসভা চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুব সংহতি সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মহানগর যুব সংহতি সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, সাধারণ সম্পাদক শান্তি কাদেরী, মহানগর ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত আসিফ, সভাপতি আমিনুল ইসলামি ছোট, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জসিম, জেলা ছাত্রসমাজ আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম। এছাড়া আট উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।

সভাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত দলের চেয়ারম্যানের কাছে জানিয়ে দিয়েছি। প্রথমত: আমাদের সিদ্ধান্ত এই প্রহসনের নির্বাচনে না করার। আর যদি পরবর্তী স্টেজে দল মনে করে মহাজোটের ব্যানারে এই অবস্থায়ও নির্বাচনে যাবে, তাহলে মিনিমাম আমাদের ১০০ আসন আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করি তাহলে রংপুর অঞ্চলের ২২ আসনসহ ১০০ আসন, ১০টি মন্ত্রী আমাদের দিতে হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে কোনো ছাড় নয়। যেহেতু এইসব আসনের প্রত্যেকটিতে আমাদের লক্ষাধিক ভোট আছে, এইসব জায়গায় আমরা ছাড়ব কেন। এই জায়গায় ছাড় দেয়ার সুযোগ নাই। এটাকে রেখে যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমরা কনসিডার করব নির্বাচনে যাওয়া যায় কিনা।’

এক প্রশ্নের উত্তরে মোস্তফা বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা মাঠ পর্যায়ে কোনো কর্মসূচি দিতে পারছি না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করতেই জরুরি সভা। এছাড়া সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের আলোকেই নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখারও সিদ্ধান্ত হয়।’

রওশন এরশাদ প্রসঙ্গে মোস্তফা বলেন, ‘রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির দলীয় সিদ্ধান্ত দেয়ার কেউ নন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উনি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার কার্যক্ষমতা বলতে কিছু নাই। জাস্ট এটা অলঙ্কারিক পদ। সিদ্ধান্ত দলের রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী চেয়ারম্যান, মহাসচিবের। সব কিছু গঠনতন্ত্রে মেইনশন করা আছে। উনি যদি ইলেকশন করে করতে পারে, তাহলে ওনাকে কাস্তে মার্কা, বা বেলুন মার্কা বা ফুটবলর্মাকা নিয়ে ইলেকশন করতে হবে। আর যদি লাঙ্গল নিয়ে ইলেকশন করতে চান। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে লাঙ্গল মার্কা নিয় করার কোনো সুযোগ নাই।‘

যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় ভাই প্রেসিডেন্ট ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, ‘আমরা ১৪ নভেম্বর ঢাকায় যৌথসভায় ৬৩ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দিয়েছি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ভোটে যেতে চাই না। আওয়ামী লীগের দালালি আর করতে চাই না। আমরা ১৪-১৫ বছর আওয়ামী লীগের দালালি করেছি। মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি। আমরা আর দালাল হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত হতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা যেটা মানুষ চাচ্ছে, ৮০ ভাগ মানুষ চাচ্ছে যে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। রাতের অন্ধকারের ভোট এটা বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছে না। এই ধরণের ভোটে যেন জাতীয় পার্টি না যায়, আমরা সেই প্রত্যাশায় রাখতেছি। আজকের মিটিংয়ে প্রত্যেকটা বক্তাই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছে যে এই সরকারের অধীনে যেন জাতীয় পার্টি ভোটে না যায়।‘

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে আমরাই সব কিছু দিয়েছি। থ্রিটাইম আমাদের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমাদের সাথে কোনো ভালো আচরণ করে নাই। এজন্য আমরা এবার এই নির্বাচনটার মধ্যে আওয়ামী লীগের সাথে আর সংসার করতে না চাওয়ার কথা কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই এককভাবে জাতীয় পার্টিকে প্রতিষ্ঠিত করে কিভাবে সুষ্ঠু এবং অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাব। জিএম কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী বানাব।’

যৌথসভায় রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং ৩৩টি ওয়ার্ড, এবং আট উপজেলা, তিনটি পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ অংশ নেন।