ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

জিকিরে মেলে প্রশান্তি

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:৪১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১১০৯ বার পড়া হয়েছে

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অপার মাধ্যম হলো জিকির। জিকির অত্যন্ত সহজ একটি আমল। আল্লাহর জিকির ও স্মরণে ঈমানদারের অন্তর প্রশান্ত হয়। খাঁটি ঈমানদার সবসময় জিকিরে নিমগ্ন থাকে। জিকির যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে করা যায়, শোয়া, বসা, পবিত্র, অপবিত্র-অবস্থায়ও কোনো না কোনো জিকির বিধিসম্মত থাকে।

জিকির শব্দের অর্থ স্মরণ করা, বর্ণনা করা ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহর স্মরণকে জিকির বলা হয়। সব ইবাদতের রুহ হচ্ছে আল্লাহর জিকির। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের সর্বাবস্থায় অধিক পরিমাণে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো।’ (সূরা আহজাব : ৪১-৪২) এখানে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা বলতে জিকিরকে উদ্দেশ করা হয়েছে।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে পরওয়ারদিগার! এসব নিয়ে অনর্থক সৃষ্টি করেননি।’ (সূরা আলে ইমরান-১৯১)
আল্লাহর জিকিরকারীর উপমা হলো জীবিত ব্যক্তি আর যে জিকির করে না তার উপমা হলো মৃত ব্যক্তি। তাই অন্তরকে সজীব ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য জিকিরের বিকল্প নেই।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো।’ (বুখারি-৬৪০৭)

জিকিরের মাধ্যমে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘যারা পরহেজগার, শয়তান যখন তাদের কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে। তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়।’ (সূরা আরাফ-২০১)
আল্লাহ পাকের জিকিরের অসংখ্য পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। মহানবী সা: সেগুলো আমাদের জানিয়েছেন। এর যেকোনো একটি অবলম্বন করলেই জিকির সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। রাসূল সা: বলেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করা সর্বোত্তম জিকির’। (তিরমিজি-৩৩৮৩)

মানুষ যখন ডিপ্রেশনে থাকে। চরম বিরক্তিকর অবস্থায় সময় কাটায়। মন যখন ছটফট করে, পেরেশানিতে থাকে। তখন আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমেই অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন- ‘যারা ঈমান আনে, আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্ত হয়। জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরণেই শুধু হৃদয় প্রশান্ত হয়।’ (সূরা রাদ-২৮)

জিকির ভালো ও দ্রুত ঘুমের জন্যও উত্তম একটি মাধ্যম। আবুল আহওয়াস থেকে বর্ণিত- আবদল্লাহ রা: বলেছেন, আল্লাহর জিকির করলে শয়তানের পক্ষ থেকে ঘুম এসে যাবে। তোমরা চাইলে অনুশীলন করে দেখতে পারো। তোমাদের কেউ যখন শয্যাগত হয়ে ঘুমাতে ইচ্ছা করে তখন সে যেন মহামহিম আল্লাহর জিকির করে। (আদাবুল মুফরাদ-১২২০)

লেখক : শিক্ষক, জামিয়া মিফতাহুল উলুম, নেত্রকোনা

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

জিকিরে মেলে প্রশান্তি

আপডেট সময় ১০:৪১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অপার মাধ্যম হলো জিকির। জিকির অত্যন্ত সহজ একটি আমল। আল্লাহর জিকির ও স্মরণে ঈমানদারের অন্তর প্রশান্ত হয়। খাঁটি ঈমানদার সবসময় জিকিরে নিমগ্ন থাকে। জিকির যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে করা যায়, শোয়া, বসা, পবিত্র, অপবিত্র-অবস্থায়ও কোনো না কোনো জিকির বিধিসম্মত থাকে।

জিকির শব্দের অর্থ স্মরণ করা, বর্ণনা করা ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহর স্মরণকে জিকির বলা হয়। সব ইবাদতের রুহ হচ্ছে আল্লাহর জিকির। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের সর্বাবস্থায় অধিক পরিমাণে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো।’ (সূরা আহজাব : ৪১-৪২) এখানে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা বলতে জিকিরকে উদ্দেশ করা হয়েছে।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে পরওয়ারদিগার! এসব নিয়ে অনর্থক সৃষ্টি করেননি।’ (সূরা আলে ইমরান-১৯১)
আল্লাহর জিকিরকারীর উপমা হলো জীবিত ব্যক্তি আর যে জিকির করে না তার উপমা হলো মৃত ব্যক্তি। তাই অন্তরকে সজীব ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য জিকিরের বিকল্প নেই।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো।’ (বুখারি-৬৪০৭)

জিকিরের মাধ্যমে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘যারা পরহেজগার, শয়তান যখন তাদের কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে। তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়।’ (সূরা আরাফ-২০১)
আল্লাহ পাকের জিকিরের অসংখ্য পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। মহানবী সা: সেগুলো আমাদের জানিয়েছেন। এর যেকোনো একটি অবলম্বন করলেই জিকির সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। রাসূল সা: বলেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করা সর্বোত্তম জিকির’। (তিরমিজি-৩৩৮৩)

মানুষ যখন ডিপ্রেশনে থাকে। চরম বিরক্তিকর অবস্থায় সময় কাটায়। মন যখন ছটফট করে, পেরেশানিতে থাকে। তখন আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমেই অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন- ‘যারা ঈমান আনে, আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্ত হয়। জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরণেই শুধু হৃদয় প্রশান্ত হয়।’ (সূরা রাদ-২৮)

জিকির ভালো ও দ্রুত ঘুমের জন্যও উত্তম একটি মাধ্যম। আবুল আহওয়াস থেকে বর্ণিত- আবদল্লাহ রা: বলেছেন, আল্লাহর জিকির করলে শয়তানের পক্ষ থেকে ঘুম এসে যাবে। তোমরা চাইলে অনুশীলন করে দেখতে পারো। তোমাদের কেউ যখন শয্যাগত হয়ে ঘুমাতে ইচ্ছা করে তখন সে যেন মহামহিম আল্লাহর জিকির করে। (আদাবুল মুফরাদ-১২২০)

লেখক : শিক্ষক, জামিয়া মিফতাহুল উলুম, নেত্রকোনা