জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো জুমার নামাজ। জুমার দিনের নাম ‘জুমা’ বা ‘সম্মিলন’ হয়েছে জুমার নামাজের জমায়েতের জন্যই। জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ওয়াজিব। জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) বলেন,
যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সে অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।
জুমার নামাজে দেরি করে যাওয়া কিংবা দায়সারাভাবে জুমা আদায় করাও জুমার ব্যাপারে অলসতা হিসেবে গণ্য হতে পারে; তাই এ ব্যাপারে সবার সাবধান হওয়া উচিত।
কুরআনে আল্লাহ মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছেন জুমার নামাজের জন্য ডাকা হলে অর্থাৎ জুমার আজান হয়ে গেলে সব দুনিয়াবি ব্যস্ততা, বেচাকেনা, লেনদেন বাদ দিয়ে দ্রুত আল্লাহর দিকে অগ্রসর হতে। আল্লাহ বলেন,
হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ৯)
সুতরাং জুমার আজান হয়ে গেলে মসজিদে চলে যাওয়া, সব দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করে দেওয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।
জুমার দিন দুটি আজান হয়। কেউ কেউ বলেছেন, জুমার প্রথম আজানের পরই মসজিদে চলে যাওয়া ওয়াজিব, কিন্তু বেশিরভাগ আলেমের মত হলো, যে আজানের পর সব দুনিয়াবি কাজ অবৈধ হয়ে যায়, সেটি জুমার দ্বিতীয় আজান যা খুতবার আগে দেওয়া হয়।
জুমার নামাজের পাশাপাশি জুমার খুতবা শোনাও ওয়াজিব। সুতরাং জুমার দ্বিতীয় আজানের আগেই মসজিদে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। জুমার দ্বিতীয় আজান হয়ে গেলে আর কোনোভাবেই দুনিয়াবি কাজে ব্যস্ত থাকা যাবে না।
উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে জুমার নামাজে উপস্থিত হলে, চুপ থেকে খুতবা শুনলে ও নামাজ আদায় করলে আশা করা যায় আল্লাহ আমাদের এক সপ্তাহের গুনাহ মাফ করে দেবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন,
যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)