১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সফল প্রয়োগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্ত প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করার লক্ষ্যে ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের ভাইয়ের ছেলের নাসের আল-কুদওয়া একটি চুক্তিতে সই করেছেন। এন১২ শুক্রবার এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
ওলমার্ট ২০০৮ সালে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে যে আলোচিত রহস্যজনক সমাধান পেশ করেছিলেন, বর্তমান চুক্তিটি তার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।
এই সমঝোতার আলোকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলের দখল করা এলাকাগুলোর ৪.৪ শতাংশের বদলে ফিলিস্তিনিদের কিছু জায়গা দেয়া হবে। কোন কোন জায়গার বদলে কোন কোন এলাকা দেয়া হবে, তা নিরাপত্তা, বাস্তবতা ইত্যাদি বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
এই ৪.৪ শতাংশ বিনিময়ের মধ্যে গাজা ও পশ্চিম তীরের মধ্যে একটি করিডোর সংযোগও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তারা জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উত্থাপিত প্রস্তাবও সমর্থন করেন বলে জানিয়েছেন। তাতে ইসরাইলি প্রত্যাহারের পর গাজা উপত্যকা পরিচালনার জন্য ’কমিশনারদের একটি কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘কাউন্সিলের সদস্যরা ২৪ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে গাজা উপত্যকায় একটি সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।’
ওলমার্ট এবং নাসের গাজায় মোতায়েনের জন্য একটি ‘অস্থায়ী আরব নিরাপত্তা বাহিনীর’ উপস্থিতির ব্যাপারেও কেমত হন। এই বাহিনী ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এবং কমিশনারদের কাউন্সেলের প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সহযোগিতা করে কাজ করবে।
এই বাহিনী ইসরাইলে গাজা থেকে হামলা প্রতিরোধে কাজ করবে।
তারা জর্ডান নদী বরাবর অভ্যন্তরীণ বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনার বিষয়টিও উত্থাপন করেছেন।
তাদের সমঝোতা অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রটি হবে অসামরিক রাষ্ট্র। অভ্যন্তরীণ পুলিশব্যবস্থার জন্য কিছু নিরাপত্তা বাহিনী থাকতে পারে।
তারা ধনী দেশগুলোকে নিয়ে ’ডোনার কনফারেন্স’ আয়োজন করার কথাও বলেছেন।
জেরুসালেমের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ইসরাইল পশ্চিম জেরুসালেম এবং ১৯৬৭ সালের পর নির্মিত ইহুদি এলাকাগুলোর মালিকানা পাবে। এসবই ওই ৪.৪ শতংশের মধ্যে থাকবে।
আর ১৯৬৭ সালের আগে যেসব আরব এলাকা ইসরাইলের অংশ ছিল না, সেগুলো ফিলিস্তিন জেরুসালেমের অংশ হবে।
ওল্ড জেরুসালেম ইসরাইল ও ফিলিস্তিনসহ পাঁচটি রাষ্ট্রের একটি ট্রাস্টিশিপের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী এই ট্রাস্টিশিপ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
সমঝোতায় ওল্ড সিটির ওপর জর্ডানের বাদশাহর বিশেষ ঐতিহাসিক ভূমিকাও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র এলাকায় প্রার্থনা করা বা চলাচল করার কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। ইহুদি, মুসলিম ও খ্রিস্টানরা নিজ নিজ পবিত্র এলাকায় অবাধে চলাচল করতে পারবে। পবিত্র এলাকাগুলোর ওপর কোনো দেশের বিশেষ রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব থাকবে না।’
সমঝোতার শেষ অংশে ওলমার্ট ও নাসের উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্টদের প্রতি চূড়ান্ত চুক্তির জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো নিয়ে আলোচনা করার এবং ভবিষ্যতের চুক্তির ভিত্তি হিসেবে এটিকে গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট