ঝালকাঠির বিস্তীর্ণ মাঠে যতদূর চোখ যায় সোনালি ধানের সমাহার। নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা চারপাশ। পাকা আমন ধানের ক্ষেতে নানা রঙের পাখিদের ওড়াউড়ি। পৌষের শীত ও কুয়াশা ভেদ করে ওঠা হালকা রোদ গায়ে মেখে পরম আনন্দে ধান কাটছেন কৃষক। একই সঙ্গে চলছে ধান মাড়াই, শুকানো ও ভাঙানোর কাজ। কৃষকের পাশাপাশি এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিবারের সদস্যরাও।
গত ১০ বছরেও ধানের এমন ভালো ফলন দেখেননি কৃষকরা। সেই সঙ্গে বাজারেও সন্তোষজনক দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে সোনালি হাসি। ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে আসছে। নতুন ফসলের নতুন ধানের চাল দিয়ে উৎসবের আয়োজন চলছে কৃষকের ঘরে ঘরে।
সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল সোবহান বলেন, এবার ৫২ কাটা জমিতে আমনের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। কাটা প্রায় শেষের দিকে। এরইমধ্যে কিছু ধান বিক্রি করেছি এক হাজার তিনশ টাকা মন দরে। পহেলা মাঘ শীতের সকালে খেজুরের রস দিয়ে পায়েস রান্না করে উৎসব করা হবে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার কিশোরগঞ্জে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে ধান কাটছেন কৃষকরা। একই সঙ্গে চলছে ধান মাড়াই-ঝাড়াই ও শুকানোর কাজ। জমির পাশেই ধান সিদ্ধ করে রোদে শুকিয়ে বাড়িতে নিতে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণিরা। শুধু বাম্পার ফলনই নয়, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় খুশি প্রতিটি কৃষক।
কৃষকরা বলেন, এ বছর আশার চেয়ে ধান বেশি হয়েছে। দামও বেশি পেয়েছি। এবার মনে হচ্ছে আমাদের পরিশ্রম সার্থক। এ বছর মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে সব শঙ্কা কাটিয়ে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার মণ প্রতি ২০০ টাকায় বেশি লাভ হচ্ছে। শেষের দিকে দাম আরও ভালো পাওয়া যাবে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর জেলায় ৪৭ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। সে অনুযায়ী ৯৪ হাজার মেট্রিকটন চাল পাওয়া যাবে এ জেলা থেকে। গত বছর ধানের গড় ফলন ছিল ২.৯ মেট্রিকটন। এ বছর ধানের গড় ফলন হয়েছে ৩.২ মেট্রিকটন। জেলার কৃষকদের সরকারি প্রণোদনার সার-বীজ ও নিয়মিত কৃষি বিভাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের পরিশ্রমের কারণে ভাল ফলন হয়েছে।