ঝালকাঠিতে বিস্ফোরক আইনে করা পৃথক দুটি মামলায় বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার সকালে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ওয়ালিউল ইসলাম এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুল মান্নান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
ওই পাঁচ নেতা হলেন ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান (৪৮), জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. শামীম তালুকদার (৪৭), সদস্য সাদ্দাম হোসেন (৪৫), রাজাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও রাজাপুর উপজেলা যুবদলের সভাপতি জাকারিয়া সুমন এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদ আল মামুন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের গাড়িবহরে বোমা হামলার অভিযোগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ঝালকাঠি সদর থানায় বিএনপির ১৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম।
মামলায় বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় সম্মেলন শেষে ফেরার পথে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি শহরতলির কৃষ্ণকাঠি ব্র্যাকমোড় এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের দুটি বাসে বোমা হামলা করেন আসামিরা। ওই মামলায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাত হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম তালুকদারসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সব আসামির ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় আজ সকালে জেলা জজ আদালতে আটজন আসামির পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে আদালত আনিসুর রহমান, শামীম তালুকদার ও সাদ্দাম হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদেরকারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ ছাড়া গত ২৯ নভেম্বর রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ইলিয়াম ফরাজী বাদী হয়ে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এ মামলায় আসামিরা গত ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। জামিন শেষে আজ ২৪ জন নেতা-কর্মী আবার আবেদন করলে আদালত জাকারিয়া সুমন ও শহিদ আল মামুনের জামিন নামঞ্জুর করেন।
মামলার আসামি রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা গায়েবি মামলা হয়েছে। সেদিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকেই এলাকায় ছিলেন না। ঘটনাস্থল পিংড়ি এলাকার মানুষই জানে না যে ওখানে কোনো ঘটনা ঘটেছে।’
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশে নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করতে আওয়ামী লীগ এ মিথ্যা মামলা করেছিল। তবে এভাবে মামলা, হামলা ও জেল–জুলুম করে সরকার পতনের আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।