ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দেশেই উৎপাদন হবে ৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল: কৃষিমন্ত্রী

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৭:৫৪:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১৩৭২ বার পড়া হয়েছে

আগামী তিন বছরের মধ্যে চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল দেশেই উৎপাদন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তা ও টেকনেশিয়ানরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।’

আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আগে সবাই মূলত সরিষার তেল খেত। তখন সরিষার ভাল জাত ছিল না, উৎপাদন ছিল না, মানুষ বাড়ছিল। পরে সবাই ধান আবাদে চলে যায়। তখন বেশিরভাগ জমিতে ধান আবাদ হত। এরপর বিদেশ থেকে সয়াবিন ও পাম অয়েল সস্তায় আমদানি করে তেলের চাহিদা মেটানো হত। কিন্তু এখন এমন অবস্থা হয়েছে আমরা পুরোপুরি তেল আমদানিনির্ভর হয়ে গেছি।’

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অতিথিরা। ছবি:

মন্ত্রী বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে, এ সমস্যা সমাধানে দুটি সফলতা এসেছে। স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদন হবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা অনেক ভাল সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছেন। আগে বিঘায় দেড় থেকে দুই মণ সরিষা হত। এখন সেটা ৬ থেকে ৭ মণ হচ্ছে। আগে সরিষা ছিল ছোট ছোট কিন্তু এখন আকারে বড় হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমনের পরই সরিষা লাগানো হয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত আমন ধান হয় ১৪০ বা ১৬০ দিনে। এ কারণে সময় বেশি লাগায় কৃষক পরে আর সরিষা লাগাতে চায় না। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন জাত উদ্ভাবন করেছেন যেটা ১১০ বা ১১৫ দিনেই হয়। কাজেই আমন ও বোরো ধানের মধ্যে যে সময়টা তার মধ্যে সরিষা আবাদ করা সম্ভব। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে সরিষা এসে যায়। এতে সরিষা তুলে বোরো আবাদ করতে পারেন চাষিরা। কৃষক এ সরিষা থেকে ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।’

বক্তব্যে চালের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় আরও জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে চালের চাহিদা আরও বাড়বে। এখন একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষি জমি কমছে। ভুট্টা, শাকসবজিসহ অন্য ফসলেও জমির ব্যবহার বাড়ছে। বাড়িতে যেসব ফসল হত তাও এখন মাঠে হচ্ছে। এর ফলে ধান চাষের জমি কমছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে চালের উৎপাদন বাড়াতে হলে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।

এতে স্বাগত বক্তব্যে ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর বলেন, এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামী জুন পর্যন্ত চালের কোনো সংকট হবে না। বরং ৪২ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এবার ১৭ কোটি মানুষের চাহিদার পাশাপাশি নন-হিউম্যান ভোগ ২৬ শতাংশ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এরপরেও বাজারে কেন চালের দাম কমছে না, তা জানতে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করেছে ব্রি।

তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, চালকল মালিকেরা ও খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। চালকল মালিকেরা কেজিতে ৮-১৪ টাকা লাভ করছে। কৃষকের উৎপাদন খরচও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া করপোরেট গ্রুপগুলো চালের বাজারে প্রবেশ করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

দেশেই উৎপাদন হবে ৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৭:৫৪:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

আগামী তিন বছরের মধ্যে চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল দেশেই উৎপাদন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তা ও টেকনেশিয়ানরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।’

আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আগে সবাই মূলত সরিষার তেল খেত। তখন সরিষার ভাল জাত ছিল না, উৎপাদন ছিল না, মানুষ বাড়ছিল। পরে সবাই ধান আবাদে চলে যায়। তখন বেশিরভাগ জমিতে ধান আবাদ হত। এরপর বিদেশ থেকে সয়াবিন ও পাম অয়েল সস্তায় আমদানি করে তেলের চাহিদা মেটানো হত। কিন্তু এখন এমন অবস্থা হয়েছে আমরা পুরোপুরি তেল আমদানিনির্ভর হয়ে গেছি।’

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অতিথিরা। ছবি:

মন্ত্রী বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে, এ সমস্যা সমাধানে দুটি সফলতা এসেছে। স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদন হবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা অনেক ভাল সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছেন। আগে বিঘায় দেড় থেকে দুই মণ সরিষা হত। এখন সেটা ৬ থেকে ৭ মণ হচ্ছে। আগে সরিষা ছিল ছোট ছোট কিন্তু এখন আকারে বড় হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমনের পরই সরিষা লাগানো হয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত আমন ধান হয় ১৪০ বা ১৬০ দিনে। এ কারণে সময় বেশি লাগায় কৃষক পরে আর সরিষা লাগাতে চায় না। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন জাত উদ্ভাবন করেছেন যেটা ১১০ বা ১১৫ দিনেই হয়। কাজেই আমন ও বোরো ধানের মধ্যে যে সময়টা তার মধ্যে সরিষা আবাদ করা সম্ভব। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে সরিষা এসে যায়। এতে সরিষা তুলে বোরো আবাদ করতে পারেন চাষিরা। কৃষক এ সরিষা থেকে ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।’

বক্তব্যে চালের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় আরও জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে চালের চাহিদা আরও বাড়বে। এখন একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষি জমি কমছে। ভুট্টা, শাকসবজিসহ অন্য ফসলেও জমির ব্যবহার বাড়ছে। বাড়িতে যেসব ফসল হত তাও এখন মাঠে হচ্ছে। এর ফলে ধান চাষের জমি কমছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে চালের উৎপাদন বাড়াতে হলে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।

এতে স্বাগত বক্তব্যে ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর বলেন, এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামী জুন পর্যন্ত চালের কোনো সংকট হবে না। বরং ৪২ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এবার ১৭ কোটি মানুষের চাহিদার পাশাপাশি নন-হিউম্যান ভোগ ২৬ শতাংশ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এরপরেও বাজারে কেন চালের দাম কমছে না, তা জানতে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করেছে ব্রি।

তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, চালকল মালিকেরা ও খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। চালকল মালিকেরা কেজিতে ৮-১৪ টাকা লাভ করছে। কৃষকের উৎপাদন খরচও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া করপোরেট গ্রুপগুলো চালের বাজারে প্রবেশ করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’