ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পবিত্র আশুরা আজ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১২:০১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩
  • ১১১২ বার পড়া হয়েছে

পবিত্র আশুরা আজ। ইতিহাসের ঘটনাবহুল দিন। কারবালার প্রান্তরে সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নাতি হজরত হোসাইন রা:-এর শাহাদতের এ দিনটিকে বিশ্ববাসীর কাছে সর্বাধিক স্মরণীয় ও বরণীয় করে রাখলেও সৃষ্টির শুরু থেকেই মহররমের ১০ তারিখ তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য এ দিনটি পৃথিবীর ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যময় একটি দিন। পবিত্র এ দিনটিতে মুসলমানরা নামাজ, রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় দিনটিতে তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে গতকাল পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। মহান আল্লাহ এ দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে বলে উল্লেখ রয়েছে। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম আ:-কে সৃষ্টি করেছেন। এ দিন হজরত নূহ আ:-এর আমলের প্লাবন শেষ হয় এবং নূহ আ:-এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ পর্বতে গিয়ে থামে। আশুরার দিন হজরত ইবরাহিম আ: জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পান। এ দিন হজরত ইউনুস আ: মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হজরত আইয়ুব আ: দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এ দিন আল্লাহ জালিম বাদশাহ ফেরাউনকে দলবলসহ পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং মুসা আ: ও তাঁর অনুসারীরা ফেরাউনের হাত থেকে নাজাত লাভ করেছেন। আশুরার দিন হজরত সুলাইমান আ: তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এ দিনে হজরত ইয়াকুব আ: হারানো ছেলে হজরত ইউসুফ আ:-কে ফিরে পেয়েছিলেন। এ দিনে হজরত ঈসা আ: জন্মগ্রহণ করেন এবং এ দিনেই তাঁকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়।

১০ মহররম কারবালা প্রান্তরে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নাতি হোসাইন রা:-এর শাহাদতের ঘটনা মুসলিম জাতির ইতিহাসে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এ ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আজো মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে কারবালার ঘটনা স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত হয়। হজরত হোসাইন রা: অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সে দিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদতবরণ করেছিলেন। রাসূল সা:-এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তাঁর সাহাবিদের প্রবর্তিত খেলাফতি শাসনব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার সংগ্রামে তিনি শাহাদতবরণ করেন। ইসলামী খেলাফতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস না করার কারণেই কারবালার ঘটনা ঘটেছিল। কারবালার ঘটনা আমাদেরকে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই শিক্ষা দেয়।

ইবাদত : আশুরার রোজা পালনে বিগত এক বছরের পাপরাশি মাফ হয়ে যায়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসূলুল্লাহ সা: নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। আর ফরজের পরে সর্বাধিক উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। (সহিহ মুসলিম ১/৩৫৮)। হাদিসের প্রায় সব কিতাবে মহররম মাসের ফজিলত এবং এ মাসের ১০ তারিখ আশুরার রোজা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ সা: থেকে বর্ণিত একাধিক হাদিস রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সাথে রোজা রাখতে দেখেছি, অন্য সময় তা দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ১/২১৮)।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরেছেন।
ইফার আলোচনা : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ বাদ জোহর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মহা: বশিরুল আলম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো: আনিছুর রহমান সরকার।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

পবিত্র আশুরা আজ

আপডেট সময় ১২:০১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩

পবিত্র আশুরা আজ। ইতিহাসের ঘটনাবহুল দিন। কারবালার প্রান্তরে সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নাতি হজরত হোসাইন রা:-এর শাহাদতের এ দিনটিকে বিশ্ববাসীর কাছে সর্বাধিক স্মরণীয় ও বরণীয় করে রাখলেও সৃষ্টির শুরু থেকেই মহররমের ১০ তারিখ তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য এ দিনটি পৃথিবীর ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যময় একটি দিন। পবিত্র এ দিনটিতে মুসলমানরা নামাজ, রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় দিনটিতে তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে গতকাল পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। মহান আল্লাহ এ দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে বলে উল্লেখ রয়েছে। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম আ:-কে সৃষ্টি করেছেন। এ দিন হজরত নূহ আ:-এর আমলের প্লাবন শেষ হয় এবং নূহ আ:-এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ পর্বতে গিয়ে থামে। আশুরার দিন হজরত ইবরাহিম আ: জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পান। এ দিন হজরত ইউনুস আ: মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হজরত আইয়ুব আ: দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এ দিন আল্লাহ জালিম বাদশাহ ফেরাউনকে দলবলসহ পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং মুসা আ: ও তাঁর অনুসারীরা ফেরাউনের হাত থেকে নাজাত লাভ করেছেন। আশুরার দিন হজরত সুলাইমান আ: তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এ দিনে হজরত ইয়াকুব আ: হারানো ছেলে হজরত ইউসুফ আ:-কে ফিরে পেয়েছিলেন। এ দিনে হজরত ঈসা আ: জন্মগ্রহণ করেন এবং এ দিনেই তাঁকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়।

১০ মহররম কারবালা প্রান্তরে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নাতি হোসাইন রা:-এর শাহাদতের ঘটনা মুসলিম জাতির ইতিহাসে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এ ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আজো মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে কারবালার ঘটনা স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত হয়। হজরত হোসাইন রা: অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সে দিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদতবরণ করেছিলেন। রাসূল সা:-এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তাঁর সাহাবিদের প্রবর্তিত খেলাফতি শাসনব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার সংগ্রামে তিনি শাহাদতবরণ করেন। ইসলামী খেলাফতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস না করার কারণেই কারবালার ঘটনা ঘটেছিল। কারবালার ঘটনা আমাদেরকে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই শিক্ষা দেয়।

ইবাদত : আশুরার রোজা পালনে বিগত এক বছরের পাপরাশি মাফ হয়ে যায়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসূলুল্লাহ সা: নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। আর ফরজের পরে সর্বাধিক উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। (সহিহ মুসলিম ১/৩৫৮)। হাদিসের প্রায় সব কিতাবে মহররম মাসের ফজিলত এবং এ মাসের ১০ তারিখ আশুরার রোজা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ সা: থেকে বর্ণিত একাধিক হাদিস রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সাথে রোজা রাখতে দেখেছি, অন্য সময় তা দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ১/২১৮)।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরেছেন।
ইফার আলোচনা : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ বাদ জোহর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মহা: বশিরুল আলম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো: আনিছুর রহমান সরকার।