পূর্ব ইউক্রেনে ডনবাস অঞ্চলে তীব্র যুদ্ধের পর সোলেডার নামে একটি শহরের বেশিরভাগেরই নিয়ন্ত্রণ দখল করে নিয়েছে রাশিয়া ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এক মাস ধরেই এ শহরটির নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই চলছিল, তবে গত চার দিনে রুশ বাহিনী ও তাদের সমর্থক ওয়াগনার গোষ্ঠীর যোদ্ধারা নতুন নতুন জায়গা দখল করেছে।
সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের একজন কর্মকর্তাও বলেছেন যে সোলেডার শহরের এক বড় অংশই এখন রুশদের দখলে।
প্রায় ১০,০০০ লোক অধ্যুষিত সোলেডার শহরটির অবস্থান বাখমুট শহরের কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং এটির দখল রুশ বাহিনীর হাতে চলে গেলে বাখমুটের নিয়ন্ত্রণ দখলের যুদ্ধে তারা সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে।
তাছাড়া সম্প্রতি রুশ বাহিনী বেশ কয়েকটি লড়াইয়ে বিপাকে পড়ার পর সোলেডারের এ বিজয় হবে তাদের জন্য একটি ভালো খবর।
বাখমুটে তীব্র যুদ্ধ চলছে এবং রুশ ও ইউক্রেনীয় উভয় বাহিনীরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বলা হচ্ছে ১১ মাস আগে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর অন্যতম তীব্র ‘পরিখা যুদ্ধ’ হচ্ছে এখানে।
ব্রিটিশ গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে বলা হচ্ছে, সোলেডার দখলের মধ্যে দিয়ে রাশিয়া সম্ভবত উত্তর দিক থেকে বাখমুটকে ঘিরে ফেলা এবং ইউক্রেনীয় যোগাযোগের পথগুলো বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে।
সোলেডারে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সাথে থাকা সাংবাদিক ইউরি বুটুসভ জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী সোলেডার শহরে ইউক্রেনের রসদপত্র সরবরাহের পথটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এ পথ দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে – যা প্রতিরক্ষার জন্য জরুরি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার তার রাত্রিকালীন ভিডিও বক্তৃতায় বলেছেন, ব্যাপক ধ্বংসলীলা সত্ত্বেও বাখমুট ও সোলেডারে ইউক্রেন দখল ধরে রেখেছে।
তিনি বলেন, সোলেডারে এখন ‘প্রায় কোনো জীবিত প্রাণী নেই’ এবং একটি দেয়ালও দাঁড়িয়ে নেই, এবং ‘রুশ সৈন্যদের লাশ দিয়ে সোলেডারের মাটি ঢাকা পড়ে গেছে।’
বাখমুট কেন গুরুত্বপূর্ণ
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের জন্য রসদপত্র সরবরাহের একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পথের ওপর বাখমুট শহরটির অবস্থান।
এর নিয়ন্ত্রণ দখল করতে পারলে রাশিয়া জায়গাটিকে ক্রামাটরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো দুটি বড় শহরের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য একটা ভিত্তি তৈরি করতে পারবে।
এই যুদ্ধে রুশ বাহিনীর সাথে মার্সেনারি বাহিনী ওয়াগনারের যোদ্ধারাও লড়াই করছে।
এটির প্রতিষ্ঠা ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। এতে অনেক রুশ কারাবন্দীকে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং তারা সহিংস যুদ্ধের সুপরিচিত। ইউক্রেনের যুদ্ধ ছাড়াও আফ্রিকার কিছু সংঘাতে তারা জড়িত।
গত কয়েক মাস ধরে প্রিগোশিনের যোদ্ধারা বাখমুট ও সোলেডার দখলের জন্য লড়াই করে চলেছে এবং এতে উভয় পক্ষেই বহু প্রাণহানি হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি