দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। ঢাকা-১৫ আসনে প্রার্থীদের প্রচারণা শুধুমাত্রই পোস্টারেই সীমাবদ্ধ। হচ্ছে না মাইকিং, বসছে না একাধিক নির্বাচনী ক্যাম্প। যে কারণে এ আসনে নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গ হচ্ছে না বলে মানছেন ভোটাররা। আবার আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, আসন্ন নির্বাচন অটোপাসের মতো। সে কারণেই হয়ত তেমন আমেজ নেই শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের এ নির্বাচনী আসনে।
স্থানীয় ভোটাররাও বলছেন তাই, নির্বাচনের জন্য খুব বেশি প্রচারণার দরকার নেই। সরকার একতরফা নির্বাচন করছে, তাই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা প্রচারণার পেছনে খরচ না করে দেশ ও দশের পেছনে খরচ করুক। শীত মৌসুম চলছে, রাস্তা-ঘাটে রাতের বেলা অনেক ছিন্নমূল মানুষ অবস্থান করে। তাদের জন্য ভোটের আগে প্রার্থীরা কিছু করুক।
ঢাকা-১৫ আসনে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ মোট প্রার্থী ৮ জন। আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা নিয়ে এ আসনে বহুদিন ধরেই রাজনীতি করে আসছেন কামাল। অপর প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির সামসুল হক (লাঙ্গল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক পার্টির (জাসদ) মুহাম্মদ সামসুল ইসলাম (মশাল), তৃণমূল বিএনপির খন্দকার মো. ইমদাদুল হক (সোনালী আঁশ), বিএনএফের এস এম ইসলাম (টেলিভিশন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নাজমা বেগম (আম), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সামসুল আলম চৌধুরী (একতারা) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের আশরাফ হোসাইন সরকার (ডাব)।
এই আসনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা চারটি- ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫০৭ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭০০; নারী ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮০৬। হিজড়া ভোটার একজন।
ওয়ার্ডগুলো ঘুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মাত্র একটি নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প দেখা গেছে। মিরপুর ১৩ নম্বর বি-ব্লকের ১০ নম্বর রোডে মোড়ে ক্যাম্পটি বসানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে দলের নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। অবশ্য ওয়ার্ডের রাস্তায় রাস্তায় নৌকা ও লাঙ্গল প্রার্থীর পোস্টার রয়েছে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভিশন গলির মোড়ে ছোট্ট একটি ক্যাম্প রয়েছে কামাল আহমেদ মজুমদারের। ক্যাম্পটি খালি দেখা গেছে।
১৬ ওয়ার্ডের একাধিক বলেন, ১০ বছর আগেও দেশে যেমন নির্বাচনী আমেজ দেখা গেছে, এবার নেই। সারা দেশের মতো মিরপুর-১৫ আসনেও নৌকার প্রচারণা চলছে। বাকি প্রার্থীরা কিছু পোস্টার সাঁটিয়ে নিজ নিজ প্রচারণা চালাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের তেমন টাকা খরচ করতে হচ্ছে না। প্রচারণার জন্য যে অর্থ তারা বরাদ্দ করেছে, সেটির বেশিরভাগ শীতে কাবু ছিন্নমূলদের জন্য খরচ করলে হয়ত ভোটে তারা কিছুটা সুবিধা করতে পারবেন।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ভোটার মো. নাসিম বলেন, নির্বাচনের বড় একটি দল অংশগ্রহণ করছে না। এবারের ভোটে তেমন লড়াইও হবে না। একতরফা নির্বাচনে মানুষ খুব একটা ভোট দিতে যাবে না বলেই মনে হচ্ছে।
মিরপুর-১০ নম্বরের একটি অংশ পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দুই নম্বর ইউনিটের একটি অস্থায়ী প্রচারণা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। একটি দোকানের মধ্যে কামাল আহমেদ মজুমদারের এ অস্থায়ী ক্যাম্পটি করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা এ ক্যাম্পে খুব একটা আসেন না।
কামাল আহমেদ মজুমদারের নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে কথা হয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দুই নম্বর ইউনিটের সিনিয়র সহসভাপতি বাবুল হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার প্রচারণা তেমন নেই। আমরা একটি অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছি। আগের নির্বাচনগুলোয় তো অনেক প্রচারণা হতো। এবারের নির্বাচন অটোপাসের মতো। ফলাফল কী হবে দেশবাসী জানেই। নতুন করে এ নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের কিছু বলার নেই।