ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফের সিলেটে বন্যা, ১৪৬ গ্রাম প্লাবিত

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৪৬টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।এতে করে ঈদুল আজহার আগেই আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৯ হাজার ৫৫০টি পরিবারের মানুষজন। সবচেয়ে বিপদে আছেন উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ।

আজ রবিবার দুপুর ১২টায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গোয়াইন, সারী, পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

গোয়াইনের পানি ১০.৮২ মিটার সারী নদীর পানি ১২.৩৫ মিটার পিয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩.০০ মিটার এবং সারী নদীর বিপৎসীমার ১২.৬২ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়াও মেঘদূত এপস-আইএমডি তথ্য অনুযায়ী, গোয়াইনঘাট সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ‘ওয়েস্ট জৈন্তা হিলস’ ও ‘ইস্ট খাসি হিলস’ জেলায় আগামী ১৯ জুন ৪৬১ মিলিমিটার ও ২০ জুন ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

গোয়াইনঘাট, সারী, পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৈরী আবহাওয়া অব্যাহত থাকায় উপজেলা সদর হতে জেলা সদরে যাতায়াতের তিনটি রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থানে পানি উঠেছে ও তলিয়ে গেছে। গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সরী টু গোয়াইনঘাট সড়কে আংশিকভাবে যানবাহন চলাচল অব্যাহত আছে। গোয়াইনঘাট থেকে সালুটিকর রাস্তায় ব্রিজ নির্মাণকাজ চলমান থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে সিলেট শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৩টি ইউনিয়নে নিয়োজিত ১৩ জন সরকারি ট্যাগ অফিসার সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি করছেন। জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৪৭টি উদ্ধারকারী নৌকা (রেসকিউ বোট) পানিবন্দিদের উদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছে।

বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২৩৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়ে ৯ হাজার ৫৫০টি পরিবার পানিবন্দি আছে। ৭০০ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত আছে। যেসব এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবিত হচ্ছে সেসব এলাকার ঘরবাড়ি, বাজার ও দোকানসমূহ থেকে জানমাল নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া ও জনগণকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হচ্ছে।

দুর্গত এলাকার মানুষজন বলছেন, আগের বন্যার ভয়াবহতা কমতে না কমতেই ফের ভারী বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল ঈদ। ঈদের কেনাকাটা তো দূরের কথা, ঘরেই যা খাবার ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এখন অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে। প্রশাসনের পক্ষ হতে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ত্রাণ সহায়তা বাড়ানোর দাবি জানান তারা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত চার দিনের টানা বর্ষণে এবং ভারতের মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘ হয়েছে। বর্তমানে গোয়াইনঘাট টু রাধানগর জাফলং সড়ক পানিতে প্লাবিত হওয়া সারী গোয়াইনঘাট সড়কে পানি ওঠায় এবং গোয়াইনঘাট টু সালুটিকর সড়কে ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সিলেটে শহরের যান চলাচলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ২৩৫ বর্গ কিলোমিটার এরিয়া ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া সেখানে ১৩ জন ট্যাগ অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সমন্বয়ে বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য নিয়োজিত আছে। উদ্ধার কার্যক্রমের ৪৭ নৌকা রয়েছে। তাছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

ফের সিলেটে বন্যা, ১৪৬ গ্রাম প্লাবিত

আপডেট সময় ০৭:৫০:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৪৬টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।এতে করে ঈদুল আজহার আগেই আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৯ হাজার ৫৫০টি পরিবারের মানুষজন। সবচেয়ে বিপদে আছেন উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ।

আজ রবিবার দুপুর ১২টায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গোয়াইন, সারী, পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

গোয়াইনের পানি ১০.৮২ মিটার সারী নদীর পানি ১২.৩৫ মিটার পিয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩.০০ মিটার এবং সারী নদীর বিপৎসীমার ১২.৬২ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়াও মেঘদূত এপস-আইএমডি তথ্য অনুযায়ী, গোয়াইনঘাট সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ‘ওয়েস্ট জৈন্তা হিলস’ ও ‘ইস্ট খাসি হিলস’ জেলায় আগামী ১৯ জুন ৪৬১ মিলিমিটার ও ২০ জুন ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

গোয়াইনঘাট, সারী, পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৈরী আবহাওয়া অব্যাহত থাকায় উপজেলা সদর হতে জেলা সদরে যাতায়াতের তিনটি রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থানে পানি উঠেছে ও তলিয়ে গেছে। গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সরী টু গোয়াইনঘাট সড়কে আংশিকভাবে যানবাহন চলাচল অব্যাহত আছে। গোয়াইনঘাট থেকে সালুটিকর রাস্তায় ব্রিজ নির্মাণকাজ চলমান থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে সিলেট শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৩টি ইউনিয়নে নিয়োজিত ১৩ জন সরকারি ট্যাগ অফিসার সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি করছেন। জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৪৭টি উদ্ধারকারী নৌকা (রেসকিউ বোট) পানিবন্দিদের উদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছে।

বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২৩৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়ে ৯ হাজার ৫৫০টি পরিবার পানিবন্দি আছে। ৭০০ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত আছে। যেসব এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবিত হচ্ছে সেসব এলাকার ঘরবাড়ি, বাজার ও দোকানসমূহ থেকে জানমাল নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া ও জনগণকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হচ্ছে।

দুর্গত এলাকার মানুষজন বলছেন, আগের বন্যার ভয়াবহতা কমতে না কমতেই ফের ভারী বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল ঈদ। ঈদের কেনাকাটা তো দূরের কথা, ঘরেই যা খাবার ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এখন অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে। প্রশাসনের পক্ষ হতে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ত্রাণ সহায়তা বাড়ানোর দাবি জানান তারা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত চার দিনের টানা বর্ষণে এবং ভারতের মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘ হয়েছে। বর্তমানে গোয়াইনঘাট টু রাধানগর জাফলং সড়ক পানিতে প্লাবিত হওয়া সারী গোয়াইনঘাট সড়কে পানি ওঠায় এবং গোয়াইনঘাট টু সালুটিকর সড়কে ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সিলেটে শহরের যান চলাচলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ২৩৫ বর্গ কিলোমিটার এরিয়া ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া সেখানে ১৩ জন ট্যাগ অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সমন্বয়ে বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য নিয়োজিত আছে। উদ্ধার কার্যক্রমের ৪৭ নৌকা রয়েছে। তাছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ’