ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বাজেটের আকার ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:০৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩
  • ১১৪৪ বার পড়া হয়েছে

রাজস্ব প্রাপ্তির অনিশ্চয়তায় আগামী অর্থবছরের জন্য উচ্চাভিলাষী বাজেট প্রণয়ন থেকে পিছু হটছে সরকার। শুরুতে লক্ষ্য ছিল প্রায় ৭ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার। কিন্তু বাস্তবতার বিবেচনায় সেখান থেকে কিছুটা সরে এসে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে। এটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে শতকরা ১১ ভাগ এবং সংশোধিত বাজেট থেকে ১৪ ভাগ বেশি। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির দশমিক ২ শতাংশ। আজ বুধবার সরকারি সম্পদ কমিটির সভায় বাজেটের এই রূপরেখা উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

বৈশ্বিক করোনা মহামারীর পর বিশ্বজুড়ে পণ্যের সরবরাহ চেইনে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পাল্টে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। ফলে ব্যয় সংকোচনের নীতির পথে হাঁটতে হয় সরকারকে। এ অবস্থায় আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সরকার সম্প্রসারণমূলক বাজেটের প্রয়োজন অনুভব করলেও চাহিদা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ সম্ভব হবে না। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরে বাস্তবতার নিরিখে তা করা সম্ভব হবে না। এই সময় শুল্ক হার বৃদ্ধি যতটা সম্ভব কম করা হবে। ফলে সরকারের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য একটি মাঝারি আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আজ বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রাবিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভা এবং সরকারি

সম্পদ কমিটির সভায় বাজেটের এই রূপরেখা উপস্থাপনের কথা রয়েছে। সভায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, সঞ্চয়, মূল্যস্ফীতির হার, সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি আগামী অর্থবছরের বাজেটের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সম্পূর্ণ ভার্চুয়ালি এই সভাটি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় সভা। প্রথম সভাটি গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, আজকের কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আগামী অর্থবছরের বাজেট ও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরবেন। এর সঙ্গে দেশের মুদ্রাবাজারসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশে রপ্তানি বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে পারেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এই ঘাটতি ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্যগুলো পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও খুব একটা বড় হচ্ছে না। আগামী অর্থবছরের জন্য এডিপির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একই হার নির্ধারিত রয়েছে। জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে শতকরা সাড়ে ৬ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর মূল্যস্ফীতির হার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আজকের সভায় আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের একটি প্রাক্কলিত আকার নির্ধারণ করা হবে। এটিই চূড়ান্ত আকার নয়। এরপর আগামী মে মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা করবেন। সেখানেই বাজেটের প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা হবে।

আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আদায় করতে হবে ৪ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া রয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অগ্রগতি এবং বিশ্ব ও জাতীয় অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে সূচিত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) পর্যালোচনা। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে চলতি অর্থবছরসহ মধ্যমেয়াদি (২০২৩-২৪ হতে ২০২৫-২৬) সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর (এমটিএমএফ) সূচকগুলোর প্রক্ষেপণের ওপর আলোচনা ও অনুমোদন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

বাজেটের আকার ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় ১১:০৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

রাজস্ব প্রাপ্তির অনিশ্চয়তায় আগামী অর্থবছরের জন্য উচ্চাভিলাষী বাজেট প্রণয়ন থেকে পিছু হটছে সরকার। শুরুতে লক্ষ্য ছিল প্রায় ৭ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার। কিন্তু বাস্তবতার বিবেচনায় সেখান থেকে কিছুটা সরে এসে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে। এটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে শতকরা ১১ ভাগ এবং সংশোধিত বাজেট থেকে ১৪ ভাগ বেশি। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির দশমিক ২ শতাংশ। আজ বুধবার সরকারি সম্পদ কমিটির সভায় বাজেটের এই রূপরেখা উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

বৈশ্বিক করোনা মহামারীর পর বিশ্বজুড়ে পণ্যের সরবরাহ চেইনে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পাল্টে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। ফলে ব্যয় সংকোচনের নীতির পথে হাঁটতে হয় সরকারকে। এ অবস্থায় আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সরকার সম্প্রসারণমূলক বাজেটের প্রয়োজন অনুভব করলেও চাহিদা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ সম্ভব হবে না। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরে বাস্তবতার নিরিখে তা করা সম্ভব হবে না। এই সময় শুল্ক হার বৃদ্ধি যতটা সম্ভব কম করা হবে। ফলে সরকারের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য একটি মাঝারি আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আজ বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রাবিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভা এবং সরকারি

সম্পদ কমিটির সভায় বাজেটের এই রূপরেখা উপস্থাপনের কথা রয়েছে। সভায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, সঞ্চয়, মূল্যস্ফীতির হার, সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি আগামী অর্থবছরের বাজেটের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সম্পূর্ণ ভার্চুয়ালি এই সভাটি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় সভা। প্রথম সভাটি গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, আজকের কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আগামী অর্থবছরের বাজেট ও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরবেন। এর সঙ্গে দেশের মুদ্রাবাজারসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশে রপ্তানি বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে পারেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এই ঘাটতি ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্যগুলো পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও খুব একটা বড় হচ্ছে না। আগামী অর্থবছরের জন্য এডিপির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একই হার নির্ধারিত রয়েছে। জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে শতকরা সাড়ে ৬ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর মূল্যস্ফীতির হার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আজকের সভায় আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের একটি প্রাক্কলিত আকার নির্ধারণ করা হবে। এটিই চূড়ান্ত আকার নয়। এরপর আগামী মে মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা করবেন। সেখানেই বাজেটের প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা হবে।

আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আদায় করতে হবে ৪ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া রয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অগ্রগতি এবং বিশ্ব ও জাতীয় অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে সূচিত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) পর্যালোচনা। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে চলতি অর্থবছরসহ মধ্যমেয়াদি (২০২৩-২৪ হতে ২০২৫-২৬) সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর (এমটিএমএফ) সূচকগুলোর প্রক্ষেপণের ওপর আলোচনা ও অনুমোদন।