বরিশালের বানারীপাড়ায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে বসত বিল্ডিংসহ সম্পত্তি জবর দখল চেষ্টা,নির্যাতন ও হয়রানীর অভিযোগে পারভীন আক্তার নামের এক স্কুল শিক্ষিকা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ১৮ জানুয়ারী বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বানারীপাড়া প্রেসক্লাবে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার আজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন বানারীপাড়ার শাওন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সত্ত্বাধিধকারী মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে ২০১৫ সালে তার বিয়ে হয়। এর আগে তিনি ্এক মেয়ে নিয়ে স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন।
বিয়ের পর থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজ্জাকপুুর গ্রামের পারভীন আক্তারের ক্রয়কৃত সম্পত্তিসহ বসত বিল্ডিং আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে মোজাম্মেল হোসেন তাকে বিভিন্ন সময় শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করায় এক পর্যায়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে ২০১৮ সালে তাদের খোলা তালাক হয়ে যায়। পরে আবার সমঝোতা হলে তাদের পুনরায় বিয়ে হয়।
কিছুদিন না যেতেই্ মোজ্জামেল পূর্র্বের মত স্ত্রী পারভীন আক্তার ও তার শিশু মেয়ের ওপর শারিরীক এবং মানসিক নির্যাাতন শুরু করে। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হলে ২০২২ সালে বানারীপাড়া থানার তৎকালীণ ওসি হেলাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে আবার তাদের খোলা তালাক হয়। কিন্তু মোজ্জাম্মেল হোসেনের হাত থেকে পারভীন আক্তারের নিস্তার মেলেনি।
তার সম্পত্তিসহ বসত বিল্ডিং একাধিকবার জবর দখলের চেষ্টায় তার নামে নানা কুৎসা রটিয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়। এ ঘটনায় তিনি মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানি মামলা দায়ের করেন। শ্লীলতাহানী ও চুরির অপর একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন হাজতবাস করে বের হয়ে মোজাম্মেল হোসেন পুনরায় তার বসত বিল্ডিংসহ ওই সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা চালাতে থাকে।
সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ জানুযারি) পারভীন আক্তার তার কর্মস্থলে থাকার সময় জানতে পারেন, মোজাম্মেল লোকজন নিয়ে তার বসতবাড়িতে গিয়ে ভবনের দেওয়াল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করেছে। এসময় তার বাসায় থাকা ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা লুট করা হয়। খবর পেয়ে শিক্ষক পারভীন আক্তার তাৎক্ষনিক তার বাড়িতে চলে আসলে মোজাম্মেল হোসেন তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চুলের মুঠি ধরে বেধরক মারধর করেন।
এসময় মোজাম্মেল তার বোন টুলুর ঘরের দিকে তাকে (শিক্ষককে) চুলের মুঠি ধরে টেনেহিচরে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে খুন জখমের হুমকি দিয়ে মোজাম্মেল সহযোগীদের নিয়ে চলে যায়। পরে পারভীন আক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতে পারভীন আক্তার বাদী হয়ে ক্যাবল ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেন (৪৮),তার সহযোগী মো. শাহিন, (২৬),আলাউদ্দিন (৫৭) ও মোজাম্মেলের বোন টুলুকে (৩৩) আসামী করে বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে বানারীপাড়া শাাওন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সত্ত্বাধিকারী মোজাম্মেল হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অপরদিকে সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার শিশু মেয়েসসহ চরম আতঙ্কে ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে দিনাতিপাত করছেন বলে জানান। তিনি মোজাম্মেল হোসেনের হাত থেকে বাঁচতে ও সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তারের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মালিহা মোমতায ও বোনের ছেলে মাহবুব উপস্থিত ছিল।