ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বিএনপির আন্দোলন দেখে ব্যবস্থা নিতে চায় আ’লীগ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:৩৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • ১১৩৩ বার পড়া হয়েছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল বিএনপির পুরনো দাবি। ইতোমধ্যে সংশোধিত সংবিধানের আলোকে দলীয় সরকারের অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লেভেল প্লেইং ফিল্ডে নির্বাচনের বিএনপির দাবিটি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। যদিও বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারপরও বিএনপির আন্দোলনের হুমকি পর্যবেক্ষণ করছে দলটির নীতিনির্ধারণী মহল। এ ছাড়াও কর্মসূচি ঘোষণার পর আন্দোলনের গতিবিধি দেখে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছে সরকারি দল।

দলটির নেতারা মনে করেন, আন্দোলন করে সফলতা পাওয়ার নজির বিএনপির ইতিহাসে নেই। সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বরও বিএনপি রাজধানীতে সমাবেশের মাধ্যমে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিল। সরকারের কাছে এমনও তথ্য ছিল ওই দিন সরকার পতনের ডাক দিবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। এ জন্য সারা দেশ থেকে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের কয়েক দিন আগে থেকেই জড়ো করেছিল। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে আগেভাগেই সরকার সতর্ক হয়ে গিয়েছিল এবং শেষমেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকায় তাদের আন্দোলন দমন করতে সরকার সফল হয়েছিল। এর আগেও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৪ সালের ৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে ও পরে টানা ৯০ দিন হরতাল অবরোধের ডাক দিয়েও সফল হতে পারেনি বিএনপি ও তার মিত্ররা।

বিএনপির এক দফা আন্দোলন প্রসঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শুনেছি তারা ৩৬ দলের রূপরেখা দিয়ে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন করবে। সেটি এখনো শুরু হয়নি। শুরু হতে হতে কত দল এখান থেকে কেটে পড়ে সেটা দেখার বিষয়। কত দল শেষ পর্যন্ত থাকে সেটিও দেখার বিষয়। আমরা খবর পেয়েছি, ক্ষমতার ভাগাভাগিতে কে কি পাবে- তা নিয়ে ৩৬ পার্টির মধ্যে দর কষাকষি চলছে। বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতির বিষয় রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। তবে এতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে উদ্ভূত পরিস্থিতি বলে দেবে, করণীয় কি হবে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা মাঠে থাকব। এখনো রাজপথে সতর্ক অবস্থানে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ১৪ বছরে বিএনপি অনেক দফায় দিয়েছে, আমরাও সেটা শুনে আসছি। ঈদের পরে, বর্ষার পরে, শীতের পরে, পরীক্ষার পরে এ রকম কতবার যে আন্দোলনের কথা বলেছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তারা কোনোবারই আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, ব্যর্থ হয়েছে। এখন এক দফার কথা বলছে। আমরা অতীতের মতো ওইভাবেই দেখছি। তিনি বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি, আমরা ভবিষ্যতে জনগণকে নিয়ে কি ভাবছি সেটা তুলে ধরছি। এক প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমরা জানি, বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য অতীতের মতো অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপি ইতোমধ্যে চরম শিক্ষা পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিএনপি পরাজিত হয়েছে। তারা যদি আবারো জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করতে আসে তাহলে মানুষের সম্পদ ও জীবন রক্ষায় আমরা রাজপথে সতর্ক থাকব। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা প্রতিহত করব, তারা কোনোভাবেই সফল হতে পারবে না।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপির নেতারা অনেক লম্ফঝম্প করেছিল। তারা বলেছিল, ১০ তারিখে ঢাকা দখল করে ফেলবে। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। বিএনপির এক নেতা তো বলেই ফেললেন, ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। কিন্তু সেটা কি হয়েছে! ওই সময় তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে, অনেকেই গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এভাবে তারা তাদের কর্মীদেরও ধোঁকা দিয়েছে। এতে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলে বিএনপি সামনে যে সরকার পতনের এক দফার দাবি তুলেছে, সেগুলো আমলে নেয়ার কোনো কারণ দেখছি না। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মতে, ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি যে পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল সরকার তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। বিএনপি গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ সমবেত করে সরকারের পতন ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল, এটা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকার বুঝতে পেরেছিল। ঢাকায় একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল বিএনপি ও তার মিত্ররা। বিএনপির সেই পরিকল্পনা কিন্তু তখন সফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এখন সরকার পতনের এক দফা দাবি সামনে নিয়ে কতটুকু আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে তা প্রশ্ন রয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা আলাপকালে বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। তিনি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতা ও মানবিকতায় কারাগারে থাকার পরিবর্তে গুলশানের বাসায় রয়েছেন। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হলে আইনি বাধা রয়েছে। তাদের আরেক নেতা তারেক রহমান বিদেশে পলাতক রয়েছেন। তিনিও সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার অনুপস্থিতে বিএনপির আন্দোলন কখনো সফল হবে না। তা ছাড়া বিএনপির আন্দোলনের সাথে জনগণের সম্পৃক্তা একেবারেই নেই। জনগণেরও ধারণা, বারবার ব্যর্থ বিএনপি আগামীতেও সফলভাবে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি মনে করি, আন্দোলন দেয়ার দরকার তাই বিএনপি দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখা দরকার তাই আন্দোলনের ধোয়া তুলছে। এই আন্দোলন কি জনগণের জন্য? তাতো নয়। দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, জনগণ কষ্টে আছে তাতো সরকার স্বীকার করছে। জনগণের কষ্ট সরকার অনুভব করে, যাতে জনগণের কষ্ট লাঘব হয় সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে, চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের আমলে দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখান থেকে বেরিয়ে এনে একটি উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাথে দেশের জনগণ আছে। শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। জনগণ তাদের ডাকে অতীতেও সাড়া দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না। ফলে বিএনপির সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন জনগণকে সাথে নিয়েই প্রতিহত করা হবে।

  • মনিরুল ইসলাম রোহান
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

বিএনপির আন্দোলন দেখে ব্যবস্থা নিতে চায় আ’লীগ

আপডেট সময় ১০:৩৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল বিএনপির পুরনো দাবি। ইতোমধ্যে সংশোধিত সংবিধানের আলোকে দলীয় সরকারের অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লেভেল প্লেইং ফিল্ডে নির্বাচনের বিএনপির দাবিটি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। যদিও বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারপরও বিএনপির আন্দোলনের হুমকি পর্যবেক্ষণ করছে দলটির নীতিনির্ধারণী মহল। এ ছাড়াও কর্মসূচি ঘোষণার পর আন্দোলনের গতিবিধি দেখে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছে সরকারি দল।

দলটির নেতারা মনে করেন, আন্দোলন করে সফলতা পাওয়ার নজির বিএনপির ইতিহাসে নেই। সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বরও বিএনপি রাজধানীতে সমাবেশের মাধ্যমে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিল। সরকারের কাছে এমনও তথ্য ছিল ওই দিন সরকার পতনের ডাক দিবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। এ জন্য সারা দেশ থেকে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের কয়েক দিন আগে থেকেই জড়ো করেছিল। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে আগেভাগেই সরকার সতর্ক হয়ে গিয়েছিল এবং শেষমেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকায় তাদের আন্দোলন দমন করতে সরকার সফল হয়েছিল। এর আগেও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৪ সালের ৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে ও পরে টানা ৯০ দিন হরতাল অবরোধের ডাক দিয়েও সফল হতে পারেনি বিএনপি ও তার মিত্ররা।

বিএনপির এক দফা আন্দোলন প্রসঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শুনেছি তারা ৩৬ দলের রূপরেখা দিয়ে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন করবে। সেটি এখনো শুরু হয়নি। শুরু হতে হতে কত দল এখান থেকে কেটে পড়ে সেটা দেখার বিষয়। কত দল শেষ পর্যন্ত থাকে সেটিও দেখার বিষয়। আমরা খবর পেয়েছি, ক্ষমতার ভাগাভাগিতে কে কি পাবে- তা নিয়ে ৩৬ পার্টির মধ্যে দর কষাকষি চলছে। বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতির বিষয় রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। তবে এতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে উদ্ভূত পরিস্থিতি বলে দেবে, করণীয় কি হবে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা মাঠে থাকব। এখনো রাজপথে সতর্ক অবস্থানে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ১৪ বছরে বিএনপি অনেক দফায় দিয়েছে, আমরাও সেটা শুনে আসছি। ঈদের পরে, বর্ষার পরে, শীতের পরে, পরীক্ষার পরে এ রকম কতবার যে আন্দোলনের কথা বলেছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তারা কোনোবারই আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, ব্যর্থ হয়েছে। এখন এক দফার কথা বলছে। আমরা অতীতের মতো ওইভাবেই দেখছি। তিনি বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি, আমরা ভবিষ্যতে জনগণকে নিয়ে কি ভাবছি সেটা তুলে ধরছি। এক প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমরা জানি, বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য অতীতের মতো অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপি ইতোমধ্যে চরম শিক্ষা পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিএনপি পরাজিত হয়েছে। তারা যদি আবারো জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করতে আসে তাহলে মানুষের সম্পদ ও জীবন রক্ষায় আমরা রাজপথে সতর্ক থাকব। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা প্রতিহত করব, তারা কোনোভাবেই সফল হতে পারবে না।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপির নেতারা অনেক লম্ফঝম্প করেছিল। তারা বলেছিল, ১০ তারিখে ঢাকা দখল করে ফেলবে। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। বিএনপির এক নেতা তো বলেই ফেললেন, ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। কিন্তু সেটা কি হয়েছে! ওই সময় তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে, অনেকেই গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এভাবে তারা তাদের কর্মীদেরও ধোঁকা দিয়েছে। এতে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলে বিএনপি সামনে যে সরকার পতনের এক দফার দাবি তুলেছে, সেগুলো আমলে নেয়ার কোনো কারণ দেখছি না। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মতে, ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি যে পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল সরকার তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। বিএনপি গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ সমবেত করে সরকারের পতন ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল, এটা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকার বুঝতে পেরেছিল। ঢাকায় একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল বিএনপি ও তার মিত্ররা। বিএনপির সেই পরিকল্পনা কিন্তু তখন সফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এখন সরকার পতনের এক দফা দাবি সামনে নিয়ে কতটুকু আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে তা প্রশ্ন রয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা আলাপকালে বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। তিনি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতা ও মানবিকতায় কারাগারে থাকার পরিবর্তে গুলশানের বাসায় রয়েছেন। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হলে আইনি বাধা রয়েছে। তাদের আরেক নেতা তারেক রহমান বিদেশে পলাতক রয়েছেন। তিনিও সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার অনুপস্থিতে বিএনপির আন্দোলন কখনো সফল হবে না। তা ছাড়া বিএনপির আন্দোলনের সাথে জনগণের সম্পৃক্তা একেবারেই নেই। জনগণেরও ধারণা, বারবার ব্যর্থ বিএনপি আগামীতেও সফলভাবে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি মনে করি, আন্দোলন দেয়ার দরকার তাই বিএনপি দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখা দরকার তাই আন্দোলনের ধোয়া তুলছে। এই আন্দোলন কি জনগণের জন্য? তাতো নয়। দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, জনগণ কষ্টে আছে তাতো সরকার স্বীকার করছে। জনগণের কষ্ট সরকার অনুভব করে, যাতে জনগণের কষ্ট লাঘব হয় সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে, চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের আমলে দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখান থেকে বেরিয়ে এনে একটি উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাথে দেশের জনগণ আছে। শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। জনগণ তাদের ডাকে অতীতেও সাড়া দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না। ফলে বিএনপির সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন জনগণকে সাথে নিয়েই প্রতিহত করা হবে।

  • মনিরুল ইসলাম রোহান