ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৫:৫২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১০৮৭ বার পড়া হয়েছে

ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে অনুমতি দিয়েছে তা বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

রিট পিটিশনে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি বাতিলসহ বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা ও নদীর ইলিশ মাছ রপ্তানির বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটে বলা হয়েছে, ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। এটি মূলত বঙ্গোপসাগরের মাছ। এই বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার সংযুক্ত। বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা অনেক বেশি ও বিস্তৃত। এই ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় প্রচুর ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই।

এতে বলা হয়, ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। এই ইলিশ সাগরের মাছ হলেও ডিম পাড়ার জন্য যখন এই মাছ পদ্মা নদীতে আসে তখন এই ইলিশ মাছ পদ্মা নদীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে পরিপুষ্ট হয় এবং অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে ওঠে। মূলত পদ্মা নদীর ইলিশই স্বাদে ও গন্ধে উৎকৃষ্ট। এই পদ্মা নদীর ইলিশ যখন রান্না করা হয় তখন এর সুঘ্রাণ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ।

রিটে বলা হয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী— বাংলাদেশে যত ইলিশ ধরা পড়ে তার মাত্র ১০ শতাংশ পদ্মা নদীতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ পদ্মা নদীতে অত্যন্ত সীমিত পরিমাণ ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। পদ্মার নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায় তা বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা পূরণে একেবারে অপ্রতুল। ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতের ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে তারা স্বীকার করেছেন যে, তারা বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আমদানির করে থাকেন।

এতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব মাছ ভারতে রপ্তানি হয় এবং বিপুল পরিমাণ ইলিশ মাছ ভারতে চোরাচালান হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্ট ও রপ্তানিকারকরা সারা বছর পদ্মা নদীর মাছ সংগ্রহ করে ফ্রিজিং করে রাখেন এবং পরবর্তীতে সুযোগ অনুযায়ী ভারতে রপ্তানি ও পাচার করে থাকেন। এর ফলে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার ইলিশ পায় না এবং সামান্য পরিমাণ পেলেও তার দাম অত্যন্ত বেশি থাকে যা সাধারণ জনগণের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

রিটে আরও বলা হয়েছে, এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ইলিশ রপ্তানির ঘোষণার ফলে, বাংলাদেশে ইলিশ মাছের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে ইলিশ মাছ কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী, ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য কোনো পণ্য নয়। এই মাছ রপ্তানি করতে চাইলে যথাযথ শর্ত পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এককভাবে এই ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিতে পারে না। এটি এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আপডেট সময় ০৫:৫২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে অনুমতি দিয়েছে তা বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

রিট পিটিশনে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি বাতিলসহ বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা ও নদীর ইলিশ মাছ রপ্তানির বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটে বলা হয়েছে, ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। এটি মূলত বঙ্গোপসাগরের মাছ। এই বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার সংযুক্ত। বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা অনেক বেশি ও বিস্তৃত। এই ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় প্রচুর ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই।

এতে বলা হয়, ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। এই ইলিশ সাগরের মাছ হলেও ডিম পাড়ার জন্য যখন এই মাছ পদ্মা নদীতে আসে তখন এই ইলিশ মাছ পদ্মা নদীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে পরিপুষ্ট হয় এবং অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে ওঠে। মূলত পদ্মা নদীর ইলিশই স্বাদে ও গন্ধে উৎকৃষ্ট। এই পদ্মা নদীর ইলিশ যখন রান্না করা হয় তখন এর সুঘ্রাণ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ।

রিটে বলা হয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী— বাংলাদেশে যত ইলিশ ধরা পড়ে তার মাত্র ১০ শতাংশ পদ্মা নদীতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ পদ্মা নদীতে অত্যন্ত সীমিত পরিমাণ ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। পদ্মার নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায় তা বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা পূরণে একেবারে অপ্রতুল। ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতের ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে তারা স্বীকার করেছেন যে, তারা বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আমদানির করে থাকেন।

এতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব মাছ ভারতে রপ্তানি হয় এবং বিপুল পরিমাণ ইলিশ মাছ ভারতে চোরাচালান হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্ট ও রপ্তানিকারকরা সারা বছর পদ্মা নদীর মাছ সংগ্রহ করে ফ্রিজিং করে রাখেন এবং পরবর্তীতে সুযোগ অনুযায়ী ভারতে রপ্তানি ও পাচার করে থাকেন। এর ফলে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার ইলিশ পায় না এবং সামান্য পরিমাণ পেলেও তার দাম অত্যন্ত বেশি থাকে যা সাধারণ জনগণের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

রিটে আরও বলা হয়েছে, এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ইলিশ রপ্তানির ঘোষণার ফলে, বাংলাদেশে ইলিশ মাছের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে ইলিশ মাছ কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী, ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য কোনো পণ্য নয়। এই মাছ রপ্তানি করতে চাইলে যথাযথ শর্ত পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এককভাবে এই ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিতে পারে না। এটি এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন।