ময়মনসিংহের ভালুকায় নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়া সেই নারী পোশাককর্মী মারা গেছেন।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত শামছুন্নাহার (৩৮) কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের জয়কা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে এবং দুই সন্তানের জননী।
জানা যায়, স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর শামছুন্নাহার জেরার ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ি নয়নপুর এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন এবং গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রিদিশা গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন।
শুক্রবার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শামছুন্নাহার কাজ শেষে একটি মিনিবাসে করে ভালুকায় ফিরছিলেন। বাসটি ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে আসার পর বাসের অন্য যাত্রীরা নেমে যায়। এই সুযোগে বাসের চালক রাকিব মিয়া তার দুই সহকারীসহ শামছুন্নাহারকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। সম্ভ্রম বাঁচাতে শামছুন্নাহার চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন। এতে তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে তিনি গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ আহত নারীকে উদ্ধার করে ভালুকা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর তার জ্ঞান না ফেরায় রাত ২টার সময় আশঙ্কাজনক অবস্থায় মমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক কামাল হোসেন বলেন, শামছুন্নাহারের মাথার আঘাত খুব গুরুতর ছিল। শনিবার দুপুরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে আইসিইউ এ স্থানান্তর করা হয়। মূলত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে বাসটি জব্দ করা হয়েছে এবং বাসের চালক রাকিব মিয়া (২১), বাসের হেলপার আরিফ মিয়া (২০) এবং সুপারভাইজার আনন্দ দাসকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হয়েছে। পরে শনিবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নিহতের লাশ মমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি