মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোখলেসুর রহমান মুকুলসহ (৬৫) ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- মো. সাইদুর রহমান রতন (৫৬), সামসুল হক বাচ্চু (৭০), শামছুল হক ফকির (৭৫), নুরুল হক ফকির (৭০), সুলতান ফকির ওরফে সুলতান মাহমুদ (৫৮), এবিএম মুফাজ্জল হুসাইন (৭০) ও নকিব হোসেন আদিল সরকার (৬৫)।
মৃত্যুদণ্ডের এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
এর আগে এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ঠিক করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জানান, এ মামলায় মোট নয়জন আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন দুজন। কারাগারে থাকা দুজন ও পলাতক একজনসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। আর বাকি ছয়জন পলাতক।
আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। ২০১৮ সালের ১২ জুলাই এসব অভিযোগ দাখিল করা হয়। এরপর একই বছরের ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে শান্তি ও রাজাকার বাহিনী। ওই সময় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করতেন। এ কারণে ইউনুছ আলীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান ২০-২৫ জন। নির্যাতনের পর ৭১ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ওই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এলাকায় লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।
এসব অভিযোগে পরে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ফরমাল চার্জগঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন। পরে ওইদিনই দুপুরে বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।