ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মাহে রমজানের অনন্য বৈশিষ্ট্য

মাহে রমজান, সিয়াম সাধনা ও কিয়াম অনুশীলনের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস। এ মাস কেবল উপবাস ব্রত বা সংযমের নয়; বরং এ মাস আত্মসংশোধনেরও। এ মাস সহমর্মিতার, সহযোগিতার। এ মাস আল্লাহর ধ্যানের, এ মাস আল্লাহকে জ্ঞানের। এ মাসে বান্দাহগণ বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ ও নির্দেশনা পালন করে তাঁরই নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। পাপরাশি মোচনের অবারিত সুযোগ পেয়ে প্রতিটি বান্দাহ নিজেকে পাপমুক্ত করার নিদারুণ সৌভাগ্য লাভ করে। সিয়াম সাধনা মুমিনের জীবনে নিয়ে আসে নতুন এক শুভ ও সার্থক অধ্যায়।

মাহে রমজান মহান প্রভুর নীতিতে খোদাভীতি অর্জনের তাগিদ দেয়। এ মাস বান্দাহদেরকে রহমত বরকত মাগফিরাত ও নাজাত অর্জন করার অবারিত সুযোগ দেয়। এর পাশাপাশি বান্দাহদেরকে সব প্রকার মন্দ কাজ, অশ্লীলতা, ভ্রষ্টতা সর্বোপরি আল্লাহর ক্রোধ উদ্রেককারী কাজ থেকে দূরে থাকতে কঠিন নির্দেশনাও দেয়। মাহে রমজান যেসব অনন্য ও অনুপম বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত তা হলো-

১. আসমানি কিতাব নাজিলের মাস : মহান আল্লাহ রমজান মাসে সব আসমানি কিতাব নাজিল করেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘ইবরাহিম আ:-এর ওপর সহিফাগুলো রমজানের প্রথম রাতে অবতীর্ণ হয়। রমজানের ষষ্ঠ দিনে তাওরাত অবতীর্ণ হয়। ১৩ রমজানে ইঞ্জিল অবতীর্ণ হয়েছে। জাবুর রমজানের ১৮তম দিনে অবতীর্ণ হয়। কুরআন অবতীর্ণ হয় রমজানের ২৪তম দিনে।’ (মুসনাদে আহমাদ-১৬৯৮৪)

২. রোজাদের জন্য সুপারিশের মাস : কুরআন ও রোজা আল্লাহর দরবারে রোজাদার ব্যক্তির মুক্তির জন্য সুপারিশ করে। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘রোজা ও কুরআন মানুষের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে আমার রব, আমি তাকে খাবার ও প্রবৃত্তি পূরণে বাধা দিয়েছি। তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমি তাঁকে রাতের বেলা ঘুমাতে বাধা দিয়েছি। অতএব, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ-৬৫৮৯)

৩. সালাতুত তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের মাস : রাসূল সা:-এর অন্যতম সুন্নাহ হলো সালাতুত তারাবিহ, এ ছাড়া তিনি রমজান মাসে অধিক পরিমাণে তাহাজ্জুদ পড়তেন। তারাবির ফজিলত প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রাতে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রাতের সালাত আদায় করে, তার বিগত সব গোনাহ মাফ করা হয়’। তাহাজ্জুত সালাত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন, ‘ফরজ সালাতের পরে সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের (নফল) সালাত।’

৪. পাপ মোচনের মাস : এ মাসে সব রোজাদার তাদের পূর্বকৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হন, তারা বিনীত হয়ে মহান দয়াময় আল্লাহর দরবারে তাওবার দরখাস্ত করেন। আল্লাহ পাক তাওবাকারী ব্যক্তির তাওবা কবুল করে পাপ মোচন করে দেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপগুলো মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতগুলোয় প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরগুলো প্রবাহিত।’ (সূরা আত-তাহরিম-৮) রাসূল সা: বলেন, ‘সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমজান মাস পেল, অথচ নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারল না।’ (সুনানে তিরমিজি-৩৫৪৫)

৫. জান্নাতের দ্বার উন্মুক্ত ও জাহান্নামের দ্বার বন্ধকরণের মাস : রাসূল সা: বলেন, ‘যখন রমজান উপস্থিত হয়, জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। দুষ্ট শয়তানদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়।’ (মুসলিম-১০৭৯)

৬. দানশীলতা ও অনুগ্রহের মাস : রমজান মাসে দরিদ্র ও নিঃস্ব জনগোষ্ঠীর প্রতি ধনী ও সচ্ছল রোজাদার ব্যক্তিদের দানশীলতা, বদান্যতা ও অনুগ্রহ বৃদ্ধি পায়। সর্বোত্তম দানশীলতা, বদান্যতা ও অনুগ্রহে অতুলনীয় পরম আদর্শ ছিলেন স্বয়ং রাসূল সা:। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘রমজান মাসে যখন হজরত জিবরাইল আ: নিয়মিত আসতে শুরু করতেন, তখন তার দানশীলতা বহুগুণ বেড়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি) হজরত আনাস রা: বলেছেন, ‘আমি নবী করিম সা:-এর চেয়ে কাউকে অধিকতর দয়ালু দেখিনি।’ (সহিহ মুসলিম)

৭. জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস : পবিত্র রমজানের শেষ দশকে মহান আল্লাহ পাক অসংখ্য বান্দাহকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যাদের ওপর জাহান্নাম নিশ্চিত হয়ে যায়। রাসূল সা: বলেন, ‘রোজা (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য) ঢালস্বরূপ।’ (বুখারি-১৮৯৪)

৮. লায়লাতুল কদরের মাস : এ রাতে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন- ‘নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা হজরত জিবরাইল আ:-কে সমভিব্যহারে অবতরণ করেন; তাদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তিধারা চলতে থাকে ঊষা বা ফজর পর্যন্ত।’ (সূরা আল কদর : ১-৫ )

৯. নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণ বৃদ্ধির মাস : আল্লাহ পাক বান্দার নেক আমলের প্রতিদান রমজানে বহুগুণ বৃদ্ধি করেন। রাসূল সা: বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকির সওয়াব ১০ গুণ থেকে ২৭ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দাহ একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।’ (সহিহ মুসলিম-১১৫১, মুসনাদে আহমাদ-৯৭১৪)

১০. ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার মাস : পবিত্র রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতাবোধের প্রশিক্ষণ লাভ করে। দীর্ঘ সময় পানাহার ও অনান্য বৈধ কার্যাবলি থেকে বিরত থাকার ধৈর্য তাকে প্রকৃত ইনসান বা মানুষ বানায়, যার ফলে সে কৃতজ্ঞতা জানাবার ও প্রকাশের সুযোগ পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’ (সূরা বাকারাহ-১৫৩)

লেখক : মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা, সোনাপুর, সদর, নোয়াখালী

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

মাহে রমজানের অনন্য বৈশিষ্ট্য

আপডেট সময় ১০:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

মাহে রমজান, সিয়াম সাধনা ও কিয়াম অনুশীলনের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস। এ মাস কেবল উপবাস ব্রত বা সংযমের নয়; বরং এ মাস আত্মসংশোধনেরও। এ মাস সহমর্মিতার, সহযোগিতার। এ মাস আল্লাহর ধ্যানের, এ মাস আল্লাহকে জ্ঞানের। এ মাসে বান্দাহগণ বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ ও নির্দেশনা পালন করে তাঁরই নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। পাপরাশি মোচনের অবারিত সুযোগ পেয়ে প্রতিটি বান্দাহ নিজেকে পাপমুক্ত করার নিদারুণ সৌভাগ্য লাভ করে। সিয়াম সাধনা মুমিনের জীবনে নিয়ে আসে নতুন এক শুভ ও সার্থক অধ্যায়।

মাহে রমজান মহান প্রভুর নীতিতে খোদাভীতি অর্জনের তাগিদ দেয়। এ মাস বান্দাহদেরকে রহমত বরকত মাগফিরাত ও নাজাত অর্জন করার অবারিত সুযোগ দেয়। এর পাশাপাশি বান্দাহদেরকে সব প্রকার মন্দ কাজ, অশ্লীলতা, ভ্রষ্টতা সর্বোপরি আল্লাহর ক্রোধ উদ্রেককারী কাজ থেকে দূরে থাকতে কঠিন নির্দেশনাও দেয়। মাহে রমজান যেসব অনন্য ও অনুপম বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত তা হলো-

১. আসমানি কিতাব নাজিলের মাস : মহান আল্লাহ রমজান মাসে সব আসমানি কিতাব নাজিল করেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘ইবরাহিম আ:-এর ওপর সহিফাগুলো রমজানের প্রথম রাতে অবতীর্ণ হয়। রমজানের ষষ্ঠ দিনে তাওরাত অবতীর্ণ হয়। ১৩ রমজানে ইঞ্জিল অবতীর্ণ হয়েছে। জাবুর রমজানের ১৮তম দিনে অবতীর্ণ হয়। কুরআন অবতীর্ণ হয় রমজানের ২৪তম দিনে।’ (মুসনাদে আহমাদ-১৬৯৮৪)

২. রোজাদের জন্য সুপারিশের মাস : কুরআন ও রোজা আল্লাহর দরবারে রোজাদার ব্যক্তির মুক্তির জন্য সুপারিশ করে। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘রোজা ও কুরআন মানুষের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে আমার রব, আমি তাকে খাবার ও প্রবৃত্তি পূরণে বাধা দিয়েছি। তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমি তাঁকে রাতের বেলা ঘুমাতে বাধা দিয়েছি। অতএব, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ-৬৫৮৯)

৩. সালাতুত তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের মাস : রাসূল সা:-এর অন্যতম সুন্নাহ হলো সালাতুত তারাবিহ, এ ছাড়া তিনি রমজান মাসে অধিক পরিমাণে তাহাজ্জুদ পড়তেন। তারাবির ফজিলত প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রাতে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রাতের সালাত আদায় করে, তার বিগত সব গোনাহ মাফ করা হয়’। তাহাজ্জুত সালাত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন, ‘ফরজ সালাতের পরে সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের (নফল) সালাত।’

৪. পাপ মোচনের মাস : এ মাসে সব রোজাদার তাদের পূর্বকৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হন, তারা বিনীত হয়ে মহান দয়াময় আল্লাহর দরবারে তাওবার দরখাস্ত করেন। আল্লাহ পাক তাওবাকারী ব্যক্তির তাওবা কবুল করে পাপ মোচন করে দেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপগুলো মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতগুলোয় প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরগুলো প্রবাহিত।’ (সূরা আত-তাহরিম-৮) রাসূল সা: বলেন, ‘সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমজান মাস পেল, অথচ নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারল না।’ (সুনানে তিরমিজি-৩৫৪৫)

৫. জান্নাতের দ্বার উন্মুক্ত ও জাহান্নামের দ্বার বন্ধকরণের মাস : রাসূল সা: বলেন, ‘যখন রমজান উপস্থিত হয়, জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। দুষ্ট শয়তানদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়।’ (মুসলিম-১০৭৯)

৬. দানশীলতা ও অনুগ্রহের মাস : রমজান মাসে দরিদ্র ও নিঃস্ব জনগোষ্ঠীর প্রতি ধনী ও সচ্ছল রোজাদার ব্যক্তিদের দানশীলতা, বদান্যতা ও অনুগ্রহ বৃদ্ধি পায়। সর্বোত্তম দানশীলতা, বদান্যতা ও অনুগ্রহে অতুলনীয় পরম আদর্শ ছিলেন স্বয়ং রাসূল সা:। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘রমজান মাসে যখন হজরত জিবরাইল আ: নিয়মিত আসতে শুরু করতেন, তখন তার দানশীলতা বহুগুণ বেড়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি) হজরত আনাস রা: বলেছেন, ‘আমি নবী করিম সা:-এর চেয়ে কাউকে অধিকতর দয়ালু দেখিনি।’ (সহিহ মুসলিম)

৭. জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস : পবিত্র রমজানের শেষ দশকে মহান আল্লাহ পাক অসংখ্য বান্দাহকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যাদের ওপর জাহান্নাম নিশ্চিত হয়ে যায়। রাসূল সা: বলেন, ‘রোজা (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য) ঢালস্বরূপ।’ (বুখারি-১৮৯৪)

৮. লায়লাতুল কদরের মাস : এ রাতে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন- ‘নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা হজরত জিবরাইল আ:-কে সমভিব্যহারে অবতরণ করেন; তাদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তিধারা চলতে থাকে ঊষা বা ফজর পর্যন্ত।’ (সূরা আল কদর : ১-৫ )

৯. নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণ বৃদ্ধির মাস : আল্লাহ পাক বান্দার নেক আমলের প্রতিদান রমজানে বহুগুণ বৃদ্ধি করেন। রাসূল সা: বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকির সওয়াব ১০ গুণ থেকে ২৭ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দাহ একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।’ (সহিহ মুসলিম-১১৫১, মুসনাদে আহমাদ-৯৭১৪)

১০. ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার মাস : পবিত্র রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতাবোধের প্রশিক্ষণ লাভ করে। দীর্ঘ সময় পানাহার ও অনান্য বৈধ কার্যাবলি থেকে বিরত থাকার ধৈর্য তাকে প্রকৃত ইনসান বা মানুষ বানায়, যার ফলে সে কৃতজ্ঞতা জানাবার ও প্রকাশের সুযোগ পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’ (সূরা বাকারাহ-১৫৩)

লেখক : মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা, সোনাপুর, সদর, নোয়াখালী