শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ব্রাজিলিয়ানদের ঘুম ভেঙেছে কিন্তু পেলে চোখ খোলেননি। পেলে আর মর্ত্যলোকে নেই সেটা মানতেই কষ্ট হচ্ছে ব্রাজিলিয়ানদের।
পেলের স্মরণে ব্রাজিলজুড়ে চলছে শোকের মাতম। প্রিয় ফুটবলার কিংবা ঘরের মানুষটিকে হারিয়ে অনেকেই শোকে কাতর। পত্রিকার পাতাগুলোতেও এখনও পেলের একক আধিপত্য। ব্রাজিলে সবকিছু আগের মতোই আছে, তবুও যেন কিছু নেই। নাটাই ছেড়ে যেন উড়ে গেছে ঘুড়ি।
আর সেই সুতো কাটা ঘুড়ির জন্যই বেদনাহত ব্রাজিল। ফুটবল বিশ্বের বুকও যেন ফাঁকা। কেউ না থাকুক আর পেলে তো ছিলেন, সেই ভরসায়ও তো ব্রাজিলিয়ানদের এতোদিন কেটে যেত। হয়তো পেলের মুখ দেখেই তারা ভুলতো হেক্সা জয় করতে না পারার বেদনা। কিন্তু এখন তো পেলেও নেই, তারা কাকে দেখে বিপদে ভরসা পাবেন, না পাওয়ার দুঃখের কথা বলবেন কাকে? সেই ভেবেও অনেকের মন খারাপ।
অ্যামাজনের বৃষ্টি ভেজা রেইনফরেস্টেও হয়তো লেগেছে বেদনার ছাপ। কারণ, তার বুক জুড়ে থাকা রাজপুত্র যে আজ অন্যলোকের বাসিন্দা। পেলে তো ব্রাজিলিয়ানদের কাছে কেবল একজন ফুটবলার নন, কেবল তার ১২৮১ গোলও বিবেচ্য বিষয় নয়; তিনটে বিশ্বকাপ জয়ের পরিসংখ্যানেও ঠিক বোঝা যায় না পেলের মাহাত্ম্য।
পেলে ব্রাজিলিয়ানদের কাছে একটা রূপকথার গল্প, কখনো আবার জাদুর কাঠি; যার ছোঁয়াতো অনেক কিছুই বদলে যায়। তাইতো উত্তরসূরী নেইমার বলেন, ‘আপনি ফুটবলটাকে শিল্প আর বিনোদন করে গেছেন, আপনার আগে ফুটবল ছিল মাত্র একটা খেলা।’
রেইনফরেস্টের রাজপুত্রের এমন চলে যাওয়ায় তাই যেন বৃষ্টিতেই ভিজে গেল সব, রঙ হারাল উৎসব। নতুন বছরের ছুটি বাতিল করেই তাই অনেক ব্রাজিলিয়ান ছুটছেন সাও পাওলোতে কেবল পেলেকে এক শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাবেন বলে।