চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে ইসলামী ব্যাংকের লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েবের ঘটনায় ব্যাংকটির চার কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী রোকেয়া বারী। গতকাল সোমবার (৩ জুন) রাতে ভুক্তভোগী রোকেয়া বারী এই অভিযোগ দেন। অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তফসিলভুক্ত হওয়ায় সেটি আজ (৪ জুন) দুদকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।
অভিযুক্তরা হলেন— ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিব উল্লাহ, চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শফিকুল মাওলা চৌধুরী ও লকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর।
রোকেয়া বারী অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রাম নগর চকবাজার শাখায় তার একটি ব্যাংক হিসাব ও লকার আছে। গত (২৯ মে) তিনি কিছু গয়না আনতে ব্যাংকে যান। এরপর লকারের দায়িত্ব থাকা ব্যাংকের এক কর্মকর্তার চাবি দিয়ে লকার খুলতে গিয়ে দেখেন আগে থেকে সেটি খোলা। পরে তিনি লকারে দেখেন ১০/১২ ভরি স্বর্ণ ছাড়া বাকি ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকার নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি চকবাজার থানার ওসিকে জানান। ওসি পুলিশ ফোর্স নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন ওই লকারে স্বর্ণালংকার নেই।
রোকেয়া বারী অভিযোগে উল্লেখ করেন, ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকারের মধ্যে ৪০টি হাতের চুড়ি (৬০ ভরি), গলা ও কানের দুলের সেট ২৫ ভরি, গলার সেট ১০ ভরি, হাতের আংটি পাঁচটি ১৫ ভরি, গলার চেইন সাতটি ২৮ ভরি, কানের দুল ৩০ জোড়া ১১ ভরি।
লকারের নিরাপত্তার বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) ও চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক এস এম শফিকুল মাওলা চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘লকারের মূল ফটকের চাবি শুধু তাদের নির্ধারিত কর্মকর্তার কাছে থাকে। লকারের মূল চাবি গ্রাহক ছাড়া অন্য কারও কাছে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি গ্রাহকের কোনো মনোনীত প্রতিনিধিও লকার খুলতে পারেন না। প্রতিটি লকার খোলার জন্য দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক ও অপরটি ব্যাংকের নিকট থাকে। গ্রাহকের চাবি ব্যতীত শুধু ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে কোনোভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে একমাত্র গ্রাহক ব্যতীত ব্যাংকের কারও জানার সুযোগ নেই।’