ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটও চট্টগ্রাম থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।
আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকবে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার তসলিম আহমেদ।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখার’র কারণে ৮ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে। এই অবস্থায় শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে কোনো ধরনের ফ্লাইট উঠানামা করবে না। চট্টগ্রাম থেকে কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আজ শনিবার উড়বে না।
পাশাপাশি শনিবার সকাল ছয়টা থেকে আগামীকাল রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত বহাল থাকবে বলেও জানান শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পণ্য খালাস বন্ধ করে দিয়েছে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দর। জেটিতে অবস্থানরত বড জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে চলে যেতে বলা হয়েছে। লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতু এলাকার দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বড় জাহাজগুলো বন্দর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো ইঞ্জিন চালু রেখে বহির্নোঙরে থাকবে।’
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ১৪ মে (রোববার) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ১৩ মে (শনিবার) সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।