ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

শিক্ষক রাজনীতি বন্ধে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪
  • ১১১৪ বার পড়া হয়েছে

 

নানা বিধি আর সতর্কতা জারি করেও শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যদিও শিক্ষকরাজনীতি বন্ধে এর আগেও বিভিন্ন মহল থেকে কঠোরতা দেখানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ না হলে ক্লাসরুমের শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন বলেও মত দিয়েছেন বিষেশজ্ঞরা। এবার শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধে আরো কঠোর হয়ে শিক্ষকদের জন্য আচরণবিধি প্রনয়ণের উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনীতির সুযোগ না থাকলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে নানা অনৈতিক কাজ ও শিক্ষা প্রশাসনে চাপ সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে সমালোচনাও নেহায়েত কম হয়নি। এসব বিবেচনায় ও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতেই শিক্ষকদের জন্য আচরণবিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সূত্র মতে এই বিধিমালা অনুসারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ রাজনীতিতে জড়িত হলে তিনি এমপিও হারাতে পারেন। হতে পারেন সাময়িক বা স্থায়ী বরখাস্ত। কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণেও তারা পড়তে পারেন শাস্তির আওতায়। ইতোমধ্যে এমন সব শর্ত জুড়ে দিয়ে বিধিমালার খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য একটি আচরণবিধিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সংশ্লিষ্টরা নানা সুপারিশ তুলে ধরেন। সার্বিক পর্যালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তবে শিক্ষা প্রশাসনের অপর একজন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি এক সভায় এমপিভুক্ত শিক্ষকদের আচরণবিধিমালার খসড়া উপস্থাপন করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আচরণবিধিমালাটি করা হচ্ছে। কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনতে কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এমপিও শিক্ষকদের আচরণ বিধিমালার খসড়ায় রাজনৈতিক পদপদবি ধারণ করাকে একটি ‘সামাজিক ধর্তব্য আচরণ’ বা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন বা এফিলিয়েটেড সংগঠনের সদস্য পদ গ্রহণ করলে তা সামাজিক ধর্তব্য আচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরিচালনা কমিটি ওই শিক্ষককে শাস্তি দিতে পারবে।

আচরণ বিধিমালায় ধর্তব্য আচরণ প্রমাণিত হলে লঘুদণ্ড হিসেবে শিক্ষককে তিরস্কার করা বা নির্দিষ্ট মেয়াদে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা বা এমপিও স্থগিত করা হবে। গুরুদণ্ড হিসেবে এমপিও বাতিল ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিবরণী প্রস্তুত করবে। পরে অভিযুক্তকে শোকজ করা হবে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। তদন্ত কমিটি ওই শিক্ষকের কাছে লিখিত জবাব চাইবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে শিক্ষককে শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করবে কমিটি। পরে পরিচালনা কমিটির সভায় দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তবে গুরুদণ্ডে দণ্ডিতরা আপিল করার সুযোগ পাবেন।

 

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

শিক্ষক রাজনীতি বন্ধে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

আপডেট সময় ১১:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

 

নানা বিধি আর সতর্কতা জারি করেও শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যদিও শিক্ষকরাজনীতি বন্ধে এর আগেও বিভিন্ন মহল থেকে কঠোরতা দেখানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ না হলে ক্লাসরুমের শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন বলেও মত দিয়েছেন বিষেশজ্ঞরা। এবার শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধে আরো কঠোর হয়ে শিক্ষকদের জন্য আচরণবিধি প্রনয়ণের উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনীতির সুযোগ না থাকলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে নানা অনৈতিক কাজ ও শিক্ষা প্রশাসনে চাপ সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে সমালোচনাও নেহায়েত কম হয়নি। এসব বিবেচনায় ও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতেই শিক্ষকদের জন্য আচরণবিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সূত্র মতে এই বিধিমালা অনুসারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ রাজনীতিতে জড়িত হলে তিনি এমপিও হারাতে পারেন। হতে পারেন সাময়িক বা স্থায়ী বরখাস্ত। কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণেও তারা পড়তে পারেন শাস্তির আওতায়। ইতোমধ্যে এমন সব শর্ত জুড়ে দিয়ে বিধিমালার খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য একটি আচরণবিধিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সংশ্লিষ্টরা নানা সুপারিশ তুলে ধরেন। সার্বিক পর্যালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তবে শিক্ষা প্রশাসনের অপর একজন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি এক সভায় এমপিভুক্ত শিক্ষকদের আচরণবিধিমালার খসড়া উপস্থাপন করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আচরণবিধিমালাটি করা হচ্ছে। কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনতে কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এমপিও শিক্ষকদের আচরণ বিধিমালার খসড়ায় রাজনৈতিক পদপদবি ধারণ করাকে একটি ‘সামাজিক ধর্তব্য আচরণ’ বা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন বা এফিলিয়েটেড সংগঠনের সদস্য পদ গ্রহণ করলে তা সামাজিক ধর্তব্য আচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরিচালনা কমিটি ওই শিক্ষককে শাস্তি দিতে পারবে।

আচরণ বিধিমালায় ধর্তব্য আচরণ প্রমাণিত হলে লঘুদণ্ড হিসেবে শিক্ষককে তিরস্কার করা বা নির্দিষ্ট মেয়াদে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা বা এমপিও স্থগিত করা হবে। গুরুদণ্ড হিসেবে এমপিও বাতিল ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিবরণী প্রস্তুত করবে। পরে অভিযুক্তকে শোকজ করা হবে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। তদন্ত কমিটি ওই শিক্ষকের কাছে লিখিত জবাব চাইবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে শিক্ষককে শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করবে কমিটি। পরে পরিচালনা কমিটির সভায় দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তবে গুরুদণ্ডে দণ্ডিতরা আপিল করার সুযোগ পাবেন।