বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মৃতের নাম শহিদুল ইসলাম (৫০)। তিনি বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কলসগ্রাম এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে। তবে অভিযুক্ত ডাক্তার বলছেন, চিকিৎসায় কোনোরকম অবহেলা ছিলো না তাদের। এ ঘটনায় হাসপাতালের নতুন ভবনে ভাঙচুর করেছে মৃতের বিক্ষুব্ধ স্বজনরা।
রোববার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের চারতলায় মেডিসিন ইউনিট-২ এর চিকিৎসকদের কক্ষে এ ভাঙচুর করা হয়।ঘটনার পর ভাঙচুরকারী রোগীর ছেলেকে আটক করে পুলিশ। তবে চিকিৎসকদের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মৃতের শ্যালক ফারুক হাওলাদার জানান, তার ভগ্নিপতি শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সকাল ৯টার দিকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আনার পর মেডিসিন ইউনিট-২ এ ভর্তি করা হয়। সেখানে ভর্তির পর ভগ্নিপতির বুকে ব্যথা ও শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায়। তাকে দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অক্সিজেন দিতে দেরি করায় ভগ্নিপতির মৃত্যু হয়। এ সময় বড় ডাক্তার এসে কর্তব্যরত নার্সদের বকাবকি করেন।
তিনি আরও জানান, বাবার মৃত্যুর পর ভাগ্নে জুম্মন ক্ষুদ্ধ হয়ে চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য ছেড়ে দিয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মো. মাইনুল বলেন, মৃতের ছেলে জুম্মন চিকিৎসকের কক্ষে টেবিলের গ্লাস, চেয়ার ও কাপ-পিরিচ ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে আমরা গিয়ে জুম্মনকে আটক করি। পরে তার বাবার মৃত্যুর কারণে মানবিক বিবেচনায় চিকিৎসকের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রোগীর স্বজনদের দাবি, পর পর ৩টি সিলিন্ডার আনলেও তাতে অক্সিজেন ছিলো না। পরে কোনোরকম একটি সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা গেলেও ততক্ষণে রোগী মারা যায়। ফলে ক্ষোভে ভাঙচুর করেছেন রোগীর ছেলে।
এদিকে মেডিসিন বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. আশিক রহমানের দাবি, চিকিৎসায় কোনো রকম অবহেলা ছিলো না। তবে ভাঙচুরের বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানান তিনি।
ওই ইউনিটের রেজিস্ট্রার ডা. সোলায়মান বলেন, মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তবুও রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়। তাই এ ওয়ার্ডের নিরাপত্তা বাড়ানোসহ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা জরুরী।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকের তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। চিকিৎসক তিনজন হলে রোগী চারশ থাকে। তাই চিকিৎসকরা রোগীদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। কিন্তু চিকিৎসকদের অবেহলায় যে রোগীর মৃত্যু হয়, সেটা সঠিক নয়। চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন।