ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সালাতুল জানাজা

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:৫৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১১১৩ বার পড়া হয়েছে

জানাজা আরবি শব্দ। একে দুইভাবে পড়া যায়। ১. জানাজা (জিম অক্ষরে জবর) অর্থ- মৃত ব্যক্তি, ২. জিনাজা (জিম অক্ষরে জের) অর্থ- খাটিয়া, যার উপর মৃত ব্যক্তিকে রাখা হয়। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় দাফন করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত মৃত ব্যক্তিকে জানাজা বলা হয়। আর মৃত ব্যক্তির ইস্তেগফারের জন্য তার ওপর যে সালাত পড়া হয়, তাকে সালাতুল জানাজা বলা হয়।

জানাজার সালাত পড়ার নিয়ম : প্রথমে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা বাঁধবে। তারপর সানা পড়ে দ্বিতীয় তাকবির দিবে, তারপর দরূদ শরিফ পড়ে তৃতীয় তাকবির দিবে, অতঃপর দু’আয়ে মাসূরা পড়ে চতুর্থ তাকবির দিবে। তারপর ডানে-বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত সমাপ্ত করবে।
সূচনা : উমদাতুল কারি, ফাতহুল মুলহিম ইত্যাদি গ্রন্থে রয়েছে যে, সব আলিমের ঐকমত্যে জানাজার সালাত প্রথম হিজরিতে প্রবর্তিত হয়।

গায়েবানা জানাজা : ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদ রহ:-এর মতে গায়েবানা জানাজা পড়া জায়েজ। কেননা, মহানবী সা: হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশির ওপর গায়েবানা জানাজা পড়েছেন।
ইমাম আবু হানিফা রহ: ও ইমাম মালেক র:-এর মতে গায়েবানা জানাজার সালাত পড়া জায়েজ নেই। কারণ, জানাজা সালাতের জন্য মৃত ব্যক্তি তথা লাশ সামনে উপস্থিত থাকা শর্ত। তা ছাড়া মহানবী সা: ও খোলাফায়ে রাশেদিনের আমলে অনেক সাহাবি দূর-দূরান্তে ইন্তেকাল করেছেন। তাদের দু-একজন ব্যতীত আর কারো জন্য জানাজার সালাত পড়তে দেখা যায়নি (ফিকহুস সুন্নাহ)।

মসজিদে জানাজা : ইমাম শাফেয়ি, আহমদ, ইসহাক প্রমুখের মতে, মসজিদে জানাজার সালাত পড়া জায়েজ আছে। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক প্রমুখের মতে বিনা ওজরে মসজিদে জানাজার সালাত পড়া মাকরুহ। তাদের কারো মতে মাকরুহে তাহরিমি, কারো মতে মাকরুহে তানজিহি। ওজর থাকলে ঐকমত্যে জায়েজ।
জানাজার বিধান : জানাজার সালাত পড়া ফরজে কেফায়া। কিছু মুসলমান জানাজার সালাত পড়লে সবার পক্ষ হতে আদায় হয়ে যাবে। জানাজা হলো মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া।

জানাজার ফরজ : জানাজার ফরজ দু’টি। যথা-

১. চারবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলা। প্রতি তাকবির এক রাকাতের স্থলাভিষিক্ত।
২. দাঁড়িয়ে সালাত পড়া। ওজর ছাড়া জানাজার সালাত বসে পড়া বৈধ নয়।
জানাজার সুন্নাত : জানাজার সালাতে সুন্নাত চারটি। যথা-

১. আল্লাহর হামদ ও ছানা পড়া, ২. রাসূল সা:-এর প্রতি দরূদ পড়া, ৩. মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা, ৪. জানাজার সালাতের জন্য ন্যূনতম তিন কাতার করা।

জানাজার সালাত ফরজ হওয়ার শর্ত : জানাজার সালাত পড়া ফরজ হওয়ার শর্ত হলো মৃত্যুসংবাদ পাওয়া। মৃত্যুসংবাদ না পেলে জানাজার সালাত পড়া আবশ্যক নয়।
জানাজার সালাত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত : জানাজার সালাত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত দু’ধরনের। যথা-

১. সালাতের সাথে সম্পৃক্ত। তা হলো- পবিত্রতা, সতর ঢাকা, কিবলামুখী হওয়া ও নিয়ত করা। ২. মৃত ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত। তা হলো- ক. মৃত ব্যক্তি মুসলমান হওয়া, খ. মৃতের সতর ঢাকা, গ. মৃত ব্যক্তির শরীর ও কাপড় পবিত্র হওয়া, ঘ. লাশ মুসল্লির সামনে থাকা, ঙ. মৃত্যের খাটিয়া মাটিতে রেখে সালাত পড়া, চ. লাশ উপস্থিত থাকা।
জানাজার সালাতের ইমামতির জন্য কে সর্বাধিক যোগ্য : জানাজায় স্থানীয় ইমাম ও মৃত ব্যক্তির আত্মীয় উপস্থিত থাকলে, ইমাম ইলম ও আমলের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ হলে সেই অধিক যোগ্য। ইবরাহিম নাখয়ি রহ: বলেন, জানাজায় সালাত পড়াবে মসজিদের ইমামরা। কারণ তোমরা তাদের পেছনে ফরজ সালাত পড়তে রাজি; কিন্তু জানাজার সালাত পড়তে রাজি না, এ কেমন কথা। পক্ষান্তরে, আত্মীয়রা যদি ইমাম থেকে যোগ্য হয় তবে তারা জানাজা পড়াবে। সর্বপ্রথম পিতা, তারপর দাদা, তারপর ছেলে, তারপর পৌত্র, তারপর ভাই, তারপর ভ্রাতুষ্পুত্র প্রমুখ। কারো মতে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার পাবে ওই ব্যক্তি যাকে মৃত ব্যক্তি ওসিয়ত করে যায়। তারপর পিতা ও তদূর্ধ্ব ব্যক্তি, তারপর পুত্র তারপর অবশিষ্ট আত্মীয়ের মধ্যে নিকটতম ব্যক্তি। বাহরুররায়েক ২/১৮০, আরোদ্দুন মুখতার ২/২১৯, কিতাবুল আছার ১/৩৪৯, খুলাসাতুল ফতোয়া ১/২২২, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩ ফিকহুস সুন্নাহ।

আত্মহত্যাকারী ও পাপাচারীর জানাজা পড়ার বিধান : অধিকাংশ আলিমের মতে আত্মহত্যাকারী, গণিমতের মাল আত্মসাৎকারী ও যাবতীয় পাপাচারীর জানাজা পড়া যাবে। ইমাম নজবি বলেন, কাজি আয়াজ বলেছেন, সব দণ্ডপ্রাপ্ত মুসলমানের ওপর, আত্মহত্যাকারীর ওপর এবং জারজ সন্তানের ওপর জানাজা পড়া যাবে। তবে উল্লেখযোগ্য কোনো আলেম জানাজা পড়াবে না।

জানাজার জামাত বড় হওয়া কী : জানাজার জামায়াতে অধিকসংখ্যক লোকের সমাগম হওয়া মুস্তাহাব। মহানবী সা: বলেন, কোনো মৃত ব্যক্তির ওপর এক শ’ লোক যদি জানাজার সালাত পড়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে, তবে তাদের সুপারিশ কবুল করা হয় (আহমাদ, মুসলিম, তিরমিজি)।

একাধিক মৃত ব্যক্তির জানাজার বিধান : যদি বহুসংখ্যক নারী ও পুরুষের লাশ সমবেত হয়, তাহলে পুরুষদের আলাদাভাবে ও মহিলাদের আলাদাভাবে জানাজা পড়াতে হবে। তবে সবার জানাজা একসাথেও পড়া বৈধ। পুরুষদের ইমামের সংলগ্ন স্থানে কাতারবন্দী করে রাখা হবে। আর মহিলাদের রাখা হবে কেবলাসংলগ্ন স্থানে (ফিকহুস সুন্নাহ)।
জানাজার কিছু অংশ ছুটে গেলে কী করবে : জানাজার সালাতে যে ব্যক্তির কোনো তাকবির ছুটে যায়, তার মধ্যে ছুটে যাওয়া তাকবির তাৎক্ষণিকভাবে কাজা করা মুস্তাহাব। কাজা না করলেও ক্ষতি নেই।

শিশুর জানাজার বিধান : আলিমদের ঐকমত্যে শিশু ভূমিষ্ঠের পর যখন জীবিত আছে বলে বোঝা যায় এবং তার কোনো তৎপরতা দ্বারা তার জীবনের লক্ষণ পাওয়া যায়, অতঃপর সেই শিশুটি মারা যায়, তবে তার জানাজা পড়তে হবে।
গর্ভচ্যুত সন্তানের জানাজার বিধান : গর্ভচ্যুত অসম্পূর্ণ সন্তান যদি চার মাস সম্পন্ন না হয়, তাহলে তাকে গোসল করানো এবং তার জানাজা পড়ার প্রয়োজন নেই। তাকে একটি নেকড়ায় পেঁচিয়ে দাফন করবে।
ইমাম কোথায় দাঁড়াবে : জানাজার ইমামের জন্য সুন্নাত হলো পুরুষের মাথা বরাবর এবং নারীর শরীরের মাঝ বরাবর দাঁড়াবে (ফিকহুস সুন্নাহ)

লেখক : প্রধান ফকিহ, আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা, ফেনী

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

সালাতুল জানাজা

আপডেট সময় ১০:৫৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪

জানাজা আরবি শব্দ। একে দুইভাবে পড়া যায়। ১. জানাজা (জিম অক্ষরে জবর) অর্থ- মৃত ব্যক্তি, ২. জিনাজা (জিম অক্ষরে জের) অর্থ- খাটিয়া, যার উপর মৃত ব্যক্তিকে রাখা হয়। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় দাফন করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত মৃত ব্যক্তিকে জানাজা বলা হয়। আর মৃত ব্যক্তির ইস্তেগফারের জন্য তার ওপর যে সালাত পড়া হয়, তাকে সালাতুল জানাজা বলা হয়।

জানাজার সালাত পড়ার নিয়ম : প্রথমে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা বাঁধবে। তারপর সানা পড়ে দ্বিতীয় তাকবির দিবে, তারপর দরূদ শরিফ পড়ে তৃতীয় তাকবির দিবে, অতঃপর দু’আয়ে মাসূরা পড়ে চতুর্থ তাকবির দিবে। তারপর ডানে-বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত সমাপ্ত করবে।
সূচনা : উমদাতুল কারি, ফাতহুল মুলহিম ইত্যাদি গ্রন্থে রয়েছে যে, সব আলিমের ঐকমত্যে জানাজার সালাত প্রথম হিজরিতে প্রবর্তিত হয়।

গায়েবানা জানাজা : ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদ রহ:-এর মতে গায়েবানা জানাজা পড়া জায়েজ। কেননা, মহানবী সা: হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশির ওপর গায়েবানা জানাজা পড়েছেন।
ইমাম আবু হানিফা রহ: ও ইমাম মালেক র:-এর মতে গায়েবানা জানাজার সালাত পড়া জায়েজ নেই। কারণ, জানাজা সালাতের জন্য মৃত ব্যক্তি তথা লাশ সামনে উপস্থিত থাকা শর্ত। তা ছাড়া মহানবী সা: ও খোলাফায়ে রাশেদিনের আমলে অনেক সাহাবি দূর-দূরান্তে ইন্তেকাল করেছেন। তাদের দু-একজন ব্যতীত আর কারো জন্য জানাজার সালাত পড়তে দেখা যায়নি (ফিকহুস সুন্নাহ)।

মসজিদে জানাজা : ইমাম শাফেয়ি, আহমদ, ইসহাক প্রমুখের মতে, মসজিদে জানাজার সালাত পড়া জায়েজ আছে। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক প্রমুখের মতে বিনা ওজরে মসজিদে জানাজার সালাত পড়া মাকরুহ। তাদের কারো মতে মাকরুহে তাহরিমি, কারো মতে মাকরুহে তানজিহি। ওজর থাকলে ঐকমত্যে জায়েজ।
জানাজার বিধান : জানাজার সালাত পড়া ফরজে কেফায়া। কিছু মুসলমান জানাজার সালাত পড়লে সবার পক্ষ হতে আদায় হয়ে যাবে। জানাজা হলো মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া।

জানাজার ফরজ : জানাজার ফরজ দু’টি। যথা-

১. চারবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলা। প্রতি তাকবির এক রাকাতের স্থলাভিষিক্ত।
২. দাঁড়িয়ে সালাত পড়া। ওজর ছাড়া জানাজার সালাত বসে পড়া বৈধ নয়।
জানাজার সুন্নাত : জানাজার সালাতে সুন্নাত চারটি। যথা-

১. আল্লাহর হামদ ও ছানা পড়া, ২. রাসূল সা:-এর প্রতি দরূদ পড়া, ৩. মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা, ৪. জানাজার সালাতের জন্য ন্যূনতম তিন কাতার করা।

জানাজার সালাত ফরজ হওয়ার শর্ত : জানাজার সালাত পড়া ফরজ হওয়ার শর্ত হলো মৃত্যুসংবাদ পাওয়া। মৃত্যুসংবাদ না পেলে জানাজার সালাত পড়া আবশ্যক নয়।
জানাজার সালাত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত : জানাজার সালাত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত দু’ধরনের। যথা-

১. সালাতের সাথে সম্পৃক্ত। তা হলো- পবিত্রতা, সতর ঢাকা, কিবলামুখী হওয়া ও নিয়ত করা। ২. মৃত ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত। তা হলো- ক. মৃত ব্যক্তি মুসলমান হওয়া, খ. মৃতের সতর ঢাকা, গ. মৃত ব্যক্তির শরীর ও কাপড় পবিত্র হওয়া, ঘ. লাশ মুসল্লির সামনে থাকা, ঙ. মৃত্যের খাটিয়া মাটিতে রেখে সালাত পড়া, চ. লাশ উপস্থিত থাকা।
জানাজার সালাতের ইমামতির জন্য কে সর্বাধিক যোগ্য : জানাজায় স্থানীয় ইমাম ও মৃত ব্যক্তির আত্মীয় উপস্থিত থাকলে, ইমাম ইলম ও আমলের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ হলে সেই অধিক যোগ্য। ইবরাহিম নাখয়ি রহ: বলেন, জানাজায় সালাত পড়াবে মসজিদের ইমামরা। কারণ তোমরা তাদের পেছনে ফরজ সালাত পড়তে রাজি; কিন্তু জানাজার সালাত পড়তে রাজি না, এ কেমন কথা। পক্ষান্তরে, আত্মীয়রা যদি ইমাম থেকে যোগ্য হয় তবে তারা জানাজা পড়াবে। সর্বপ্রথম পিতা, তারপর দাদা, তারপর ছেলে, তারপর পৌত্র, তারপর ভাই, তারপর ভ্রাতুষ্পুত্র প্রমুখ। কারো মতে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার পাবে ওই ব্যক্তি যাকে মৃত ব্যক্তি ওসিয়ত করে যায়। তারপর পিতা ও তদূর্ধ্ব ব্যক্তি, তারপর পুত্র তারপর অবশিষ্ট আত্মীয়ের মধ্যে নিকটতম ব্যক্তি। বাহরুররায়েক ২/১৮০, আরোদ্দুন মুখতার ২/২১৯, কিতাবুল আছার ১/৩৪৯, খুলাসাতুল ফতোয়া ১/২২২, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩ ফিকহুস সুন্নাহ।

আত্মহত্যাকারী ও পাপাচারীর জানাজা পড়ার বিধান : অধিকাংশ আলিমের মতে আত্মহত্যাকারী, গণিমতের মাল আত্মসাৎকারী ও যাবতীয় পাপাচারীর জানাজা পড়া যাবে। ইমাম নজবি বলেন, কাজি আয়াজ বলেছেন, সব দণ্ডপ্রাপ্ত মুসলমানের ওপর, আত্মহত্যাকারীর ওপর এবং জারজ সন্তানের ওপর জানাজা পড়া যাবে। তবে উল্লেখযোগ্য কোনো আলেম জানাজা পড়াবে না।

জানাজার জামাত বড় হওয়া কী : জানাজার জামায়াতে অধিকসংখ্যক লোকের সমাগম হওয়া মুস্তাহাব। মহানবী সা: বলেন, কোনো মৃত ব্যক্তির ওপর এক শ’ লোক যদি জানাজার সালাত পড়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে, তবে তাদের সুপারিশ কবুল করা হয় (আহমাদ, মুসলিম, তিরমিজি)।

একাধিক মৃত ব্যক্তির জানাজার বিধান : যদি বহুসংখ্যক নারী ও পুরুষের লাশ সমবেত হয়, তাহলে পুরুষদের আলাদাভাবে ও মহিলাদের আলাদাভাবে জানাজা পড়াতে হবে। তবে সবার জানাজা একসাথেও পড়া বৈধ। পুরুষদের ইমামের সংলগ্ন স্থানে কাতারবন্দী করে রাখা হবে। আর মহিলাদের রাখা হবে কেবলাসংলগ্ন স্থানে (ফিকহুস সুন্নাহ)।
জানাজার কিছু অংশ ছুটে গেলে কী করবে : জানাজার সালাতে যে ব্যক্তির কোনো তাকবির ছুটে যায়, তার মধ্যে ছুটে যাওয়া তাকবির তাৎক্ষণিকভাবে কাজা করা মুস্তাহাব। কাজা না করলেও ক্ষতি নেই।

শিশুর জানাজার বিধান : আলিমদের ঐকমত্যে শিশু ভূমিষ্ঠের পর যখন জীবিত আছে বলে বোঝা যায় এবং তার কোনো তৎপরতা দ্বারা তার জীবনের লক্ষণ পাওয়া যায়, অতঃপর সেই শিশুটি মারা যায়, তবে তার জানাজা পড়তে হবে।
গর্ভচ্যুত সন্তানের জানাজার বিধান : গর্ভচ্যুত অসম্পূর্ণ সন্তান যদি চার মাস সম্পন্ন না হয়, তাহলে তাকে গোসল করানো এবং তার জানাজা পড়ার প্রয়োজন নেই। তাকে একটি নেকড়ায় পেঁচিয়ে দাফন করবে।
ইমাম কোথায় দাঁড়াবে : জানাজার ইমামের জন্য সুন্নাত হলো পুরুষের মাথা বরাবর এবং নারীর শরীরের মাঝ বরাবর দাঁড়াবে (ফিকহুস সুন্নাহ)

লেখক : প্রধান ফকিহ, আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা, ফেনী