ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান

সিলেট সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। সকাল থেকেই অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নৌকা ছাড়া মেয়র পদের অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিল না। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ জটিলতার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভোটারদের।

লক্ষাধিক ভোট পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে সিলেটের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো: আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় ১৯০টি কেন্দ্র থেকে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়।

নৌকা প্রতীকের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩২১ ভোট। ৬৮ হাজার ২৯৩ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন আনোয়ারুজ্জামান।

ভোট পড়েছে ৪৫ শতাংশ
সিলেটের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক আহমদ বলেন, প্রথম ৫ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এরপরের ৩ ঘণ্টায় ভোট পড়ার হার বেড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিলেটে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

লাঙ্গলের এজেন্ট ছিল না
দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া কেন্দ্রগুলোতে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। তবে সব কেন্দ্রে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্ট পাওয়া গেছে।

নগরীর বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সব কটি কেন্দ্রের নৌকার প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট বা প্রতিনিধি থাকলেও অধিকাংশ বুথে নেই লাঙ্গলের এজেন্ট।

সরেজমিন সকালে শাহজালাল উপশহরের তিনটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সব কটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর এজেন্ট থাকলেও লাঙ্গলের প্রার্থীর এজেন্ট নেই।

এম সি কলেজের কেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৮টি। সেখানেও লাঙ্গলের এজেন্ট রয়েছেন মাত্র দু’জন। তাদের একজনের নাম নাজিম আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিটি বুথে এজেন্ট দেয়া ছিল। এখন আমিসহ দু’জনকে দেখছি, অন্যদের দেখছি না।

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মইনুল হক বলেন, লাঙ্গলের সব এজেন্ট কেন্দ্রে আসেননি।

এদিকে সকালে আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ তুলেছেন, সিলেটের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে লাঙ্গলের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।

ইভিএম ভোগান্তি
ভোট চলাকালে অধিকাংশ কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভোটারদের। ধীরগতির এ ভোটের কারণে অনেক ভোটারই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এমনকি একটি কেন্দ্রে ইভিএম বিকল হয়ে পড়ায় ৪০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ৯টি। এই কেন্দ্রের ৬ নম্বর কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন নারী ভোটার অভিযোগ করেন, সকাল ৮টা থেকে তারা কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি। ধীরগতিতে ভোট নেয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬ নম্বর কক্ষের মোট ভোটার ৩৭৮ জন। সকাল ৯টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত ২২ জন এবং ৯টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত ৩২ জন ভোট দিতে পেরেছেন। এ হিসাবে একজন ভোটারের ভোট দিতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ৪ মিনিট করে। এ সময় কক্ষের সামনে অন্তত শতাধিক ভোটার সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

মদনমোহন কলেজের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ছাত্রী তানজু আক্তার অভিযোগ করেন, প্রায় দুই ঘণ্টা সারিতে দাঁড়িয়ে থাকার পরও ধীরগতির কারণে তিনি সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি।

বালুচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি মডেল স্কুল, বীরেশ চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ইভিএমে অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া ইভিএম বিকল হয়ে পড়ায় আখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৩ নম্বর কক্ষে ভোট গ্রহণের পর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তত ৪০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

সরকারি মডেল স্কুল কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সরোজ কুমার হালদার বলেন, ইভিএমের কারণে ভোট গ্রহণে কিছুটা দেরি হয়। তবে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের কোনো সমস্যা হয়

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান

আপডেট সময় ১১:১০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

সিলেট সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। সকাল থেকেই অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নৌকা ছাড়া মেয়র পদের অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিল না। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ জটিলতার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভোটারদের।

লক্ষাধিক ভোট পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে সিলেটের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো: আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় ১৯০টি কেন্দ্র থেকে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়।

নৌকা প্রতীকের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩২১ ভোট। ৬৮ হাজার ২৯৩ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন আনোয়ারুজ্জামান।

ভোট পড়েছে ৪৫ শতাংশ
সিলেটের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক আহমদ বলেন, প্রথম ৫ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এরপরের ৩ ঘণ্টায় ভোট পড়ার হার বেড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিলেটে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

লাঙ্গলের এজেন্ট ছিল না
দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া কেন্দ্রগুলোতে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। তবে সব কেন্দ্রে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্ট পাওয়া গেছে।

নগরীর বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সব কটি কেন্দ্রের নৌকার প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট বা প্রতিনিধি থাকলেও অধিকাংশ বুথে নেই লাঙ্গলের এজেন্ট।

সরেজমিন সকালে শাহজালাল উপশহরের তিনটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সব কটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর এজেন্ট থাকলেও লাঙ্গলের প্রার্থীর এজেন্ট নেই।

এম সি কলেজের কেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৮টি। সেখানেও লাঙ্গলের এজেন্ট রয়েছেন মাত্র দু’জন। তাদের একজনের নাম নাজিম আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিটি বুথে এজেন্ট দেয়া ছিল। এখন আমিসহ দু’জনকে দেখছি, অন্যদের দেখছি না।

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মইনুল হক বলেন, লাঙ্গলের সব এজেন্ট কেন্দ্রে আসেননি।

এদিকে সকালে আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ তুলেছেন, সিলেটের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে লাঙ্গলের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।

ইভিএম ভোগান্তি
ভোট চলাকালে অধিকাংশ কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভোটারদের। ধীরগতির এ ভোটের কারণে অনেক ভোটারই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এমনকি একটি কেন্দ্রে ইভিএম বিকল হয়ে পড়ায় ৪০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ৯টি। এই কেন্দ্রের ৬ নম্বর কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন নারী ভোটার অভিযোগ করেন, সকাল ৮টা থেকে তারা কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি। ধীরগতিতে ভোট নেয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬ নম্বর কক্ষের মোট ভোটার ৩৭৮ জন। সকাল ৯টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত ২২ জন এবং ৯টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত ৩২ জন ভোট দিতে পেরেছেন। এ হিসাবে একজন ভোটারের ভোট দিতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ৪ মিনিট করে। এ সময় কক্ষের সামনে অন্তত শতাধিক ভোটার সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

মদনমোহন কলেজের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ছাত্রী তানজু আক্তার অভিযোগ করেন, প্রায় দুই ঘণ্টা সারিতে দাঁড়িয়ে থাকার পরও ধীরগতির কারণে তিনি সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি।

বালুচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি মডেল স্কুল, বীরেশ চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ইভিএমে অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া ইভিএম বিকল হয়ে পড়ায় আখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৩ নম্বর কক্ষে ভোট গ্রহণের পর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তত ৪০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

সরকারি মডেল স্কুল কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সরোজ কুমার হালদার বলেন, ইভিএমের কারণে ভোট গ্রহণে কিছুটা দেরি হয়। তবে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের কোনো সমস্যা হয়