ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

হিংসা নেক আমল ধ্বংস করে

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১২:১১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
  • ১১০২ বার পড়া হয়েছে

হিংসা-বিদ্বেষ লালন একটি মন্দ স্বভাব। যার ফলে আমাদের অনেক নেক আমল; ভালো কাজ, নেকি ও পুণ্য নষ্ট হয়ে যায়। হিংসা বা অহঙ্কার মানুষের পতন ঘটায়। মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। এ জন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হিংসা নেক আমলকে নষ্ট করে দেয়। আগুন যেভাবে কাঠকে জ্বালিয়ে দেয়।’ এমনকি আল্লাহ তায়ালা হিংসুকের হিংসা অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাইতে বলেছেন। ‘আর (আশ্রয় পার্থনা করুন) হিংসুকের হিংসা-বিদ্বেষ অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।’ (সূরা ফালাক-৫)

আমরা অনেকেই বুঝে বা না বুঝে অন্যের জন্য অমঙ্গল কামনা করি। অন্যের সচ্ছলতাকে মেনে নিতে পারি না। অর্থসম্পদ দেখে হিংসা করি। কারো সংসারের সুখ শান্তি ও আনন্দকে সহ্য করতে পারি না। সর্বক্ষণ তাদের ক্ষতির চিন্তা করি। এ জাতীয় মন্দ গুণ ও স্বভাব চরিত্র কখনো একজন মুসলমানের মধ্যে থাকা উচিত নয়। এভাবে মানুষের আরাম আয়েশ বিশ্রাম ও শান্তি নষ্ট করা একধরনের সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার নামান্তর। যা অত্যন্ত নিন্দিত কাজ। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা বিশৃঙ্খলা-অশান্তি করাকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা বাকারা-২০৫)

সাহাবি হজরত জুবাইর ইবনুল আওয়াম রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেন, ‘তোমাদের পূর্বেকার উম্মতের একটি রোগ তোমাদের মধ্যেও সংক্রমিত হয়েছে। তা হলো, পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা। আর এ রোগ মুণ্ডন করে দেয়। আমি বলছি না যে, চুল মুণ্ডন করে দেয়; বরং এটি দ্বীনকে মুণ্ডন (ধ্বংস) করে দেয়। ওই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তোমরা যদি একে অপরকে না ভালোবাসো, তবে ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের বলব না যে, পারস্পরিক ভালোবাসা কোন কাজের মাধ্যমে মজবুত হয়? তোমরা পরস্পর সালামের বিস্তার ঘটাও।’ (সুনানে তিরমিজি-২৫১০)

উপর্যুক্ত হাদিস আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে, আমরা একে অপরের সাথে মহব্বত ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক রাখব। কারো সাথে শত্রুতা করব না। হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা লালন করব না ইত্যাদি। আর একে অপরকে সালাম ‘আসসালামু আলাইকুম’ বিনিময়ের মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করে আমরা ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট করতে পারি।

হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেন, ‘কোনো মুমিনের অন্তরে আল্লাহর পথের ধুলা এবং জাহান্নামের উত্তাপ একত্রিত হবে না। অনুরূপ কোনো বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না।’ (সুনানে নাসায়ি-৩১০৯)

এ হাদিসটির আমাদেরকে বলছে, হিংসা ও ঈমান কখনো এক হতে পারে না। অর্থাৎ, কোনো মুমিন বান্দার মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ থাকতে পারে না। অপর এক হাদিস মতে, মুমিন বান্দা সর্বদা সবার কল্যাণকামী হবেন। অমঙ্গল কামনা করবেন না!

লেখক :

  • মীযান মুহাম্মদ হাসান

খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

হিংসা নেক আমল ধ্বংস করে

আপডেট সময় ১২:১১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

হিংসা-বিদ্বেষ লালন একটি মন্দ স্বভাব। যার ফলে আমাদের অনেক নেক আমল; ভালো কাজ, নেকি ও পুণ্য নষ্ট হয়ে যায়। হিংসা বা অহঙ্কার মানুষের পতন ঘটায়। মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। এ জন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হিংসা নেক আমলকে নষ্ট করে দেয়। আগুন যেভাবে কাঠকে জ্বালিয়ে দেয়।’ এমনকি আল্লাহ তায়ালা হিংসুকের হিংসা অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাইতে বলেছেন। ‘আর (আশ্রয় পার্থনা করুন) হিংসুকের হিংসা-বিদ্বেষ অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।’ (সূরা ফালাক-৫)

আমরা অনেকেই বুঝে বা না বুঝে অন্যের জন্য অমঙ্গল কামনা করি। অন্যের সচ্ছলতাকে মেনে নিতে পারি না। অর্থসম্পদ দেখে হিংসা করি। কারো সংসারের সুখ শান্তি ও আনন্দকে সহ্য করতে পারি না। সর্বক্ষণ তাদের ক্ষতির চিন্তা করি। এ জাতীয় মন্দ গুণ ও স্বভাব চরিত্র কখনো একজন মুসলমানের মধ্যে থাকা উচিত নয়। এভাবে মানুষের আরাম আয়েশ বিশ্রাম ও শান্তি নষ্ট করা একধরনের সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার নামান্তর। যা অত্যন্ত নিন্দিত কাজ। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা বিশৃঙ্খলা-অশান্তি করাকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা বাকারা-২০৫)

সাহাবি হজরত জুবাইর ইবনুল আওয়াম রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেন, ‘তোমাদের পূর্বেকার উম্মতের একটি রোগ তোমাদের মধ্যেও সংক্রমিত হয়েছে। তা হলো, পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা। আর এ রোগ মুণ্ডন করে দেয়। আমি বলছি না যে, চুল মুণ্ডন করে দেয়; বরং এটি দ্বীনকে মুণ্ডন (ধ্বংস) করে দেয়। ওই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তোমরা যদি একে অপরকে না ভালোবাসো, তবে ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের বলব না যে, পারস্পরিক ভালোবাসা কোন কাজের মাধ্যমে মজবুত হয়? তোমরা পরস্পর সালামের বিস্তার ঘটাও।’ (সুনানে তিরমিজি-২৫১০)

উপর্যুক্ত হাদিস আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে, আমরা একে অপরের সাথে মহব্বত ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক রাখব। কারো সাথে শত্রুতা করব না। হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা লালন করব না ইত্যাদি। আর একে অপরকে সালাম ‘আসসালামু আলাইকুম’ বিনিময়ের মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করে আমরা ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট করতে পারি।

হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেন, ‘কোনো মুমিনের অন্তরে আল্লাহর পথের ধুলা এবং জাহান্নামের উত্তাপ একত্রিত হবে না। অনুরূপ কোনো বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না।’ (সুনানে নাসায়ি-৩১০৯)

এ হাদিসটির আমাদেরকে বলছে, হিংসা ও ঈমান কখনো এক হতে পারে না। অর্থাৎ, কোনো মুমিন বান্দার মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ থাকতে পারে না। অপর এক হাদিস মতে, মুমিন বান্দা সর্বদা সবার কল্যাণকামী হবেন। অমঙ্গল কামনা করবেন না!

লেখক :

  • মীযান মুহাম্মদ হাসান

খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর