খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা: শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ শুক্রবারও কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা।
ফলে আজ নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকদের সাক্ষাৎ (অ্যাপয়েনমেন্ট) বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে খুলনা এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
আজই বিকেলে বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সাথে আলোচনায় বসবেন তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিক মালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকার কথা।
ডা: নিশাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) জরুরি সভা শেষে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলম।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ, রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলেও উদ্বেগ তৈরি করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলকে খুলনায় পাঠানো হয়।
বাহারুল আলম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল খুলনায় আসছে। দুপুর ২টায় তারা আমাদের সাথে বসবে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও সেবা পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুলনার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন তারা। এছাড়া বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে- এমন ধারণা থেকে অনেকে চিকিৎসক শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারের রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছেন, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতি শুক্রবার নগরীর ডক্টরস পয়েন্ট হাসপাতালে রোগী দেখেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ মামুন। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি রয়েছেন তার। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই রোগীরা তার অ্যাপয়েনমেন্ট নেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সকল অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।
একইভাবে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: রুহুল কুদ্দুসসহ আরো অনেকেই শুক্রবারের অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। প্রতি শুক্রবার তাদের পরামর্শ নিতে শতাধিক রোগী আবেদন করেন।
পাইকগাছা থেকে এসেছেন রহিমা বেগম তার ছেলে সোহেলকে নিয়ে। কিডনি সমস্যা নিয়ে এসেছেন আবু নাসের হাসপাতালে। দুই দিন ধরে অপেক্ষা করে ডাক্তার দেখাতে না পেরে আজ সকাল ১১টায় বাড়ি ফিরে গেছেন।
খুলনা নিরালার বাসিন্দা শংকর দত্ত বেসরকারি সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করতে। কিন্তু এসে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যান খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থেকে তিন দিন চিকিৎসা না পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় রুপসা উপজেলার কাজদিয়া গ্রামের মকবুল শেখ বাড়ি চলে গেছেন।
সূত্র : ইউএনবি