ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

শবেবরাত নিয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি কাম্য নয়

হাদিস শরিফে শবেবরাতের রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা মধ্য শাবানের রাত বলা হয়েছে। শাবান আরবি মাসের অষ্টম মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা মু’মিন বান্দাদের বিভিন্ন প্রকার রহমত-বরকত দান করেন। তাই এ মাসের নাম শাবান রাখা হয়েছে।

এ রাতকে ফার্সি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় শবেবরাত বলা হয়। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বারাআত’ অর্থ মুক্তি। শবেবরাত মানে ‘মুক্তির রাত’। শবেবরাতে নিহিত রয়েছে মু’মিন-মুসলমানের মুক্তি ও কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এই রাতকে শবেবরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়েছে। এ বিষয়টি জানা যায় নিম্নোক্ত হাদিস দিয়ে-
রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস-৫৬৬৫, শুআবুল ঈমান, হাদিস-৩৮৩৩)

আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, এক রাতে রাসূল সা: সালাতে দাঁড়ালেন। তিনি সিজদা এত দীর্ঘ করলেন যে, আমি ধারণা করলাম তিনি ইন্তেকাল করেছেন…। যখন তিনি সিজদা থেকে মাথা উঠালেন এবং সালাত থেকে অবসর হলেন তখন তিনি বললেন, ‘হে আয়েশা! তুমি কি ধারণা করছ যে, আল্লাহর রাসূল সা: তোমার অধিকার হরণ করছেন?’ এরপর রাসূল সা: বললেন, ‘হে আয়েশা! তুমি কি জানো এটি কোন রাত?’ হজরত আয়েশা রা: বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। রাসূল সা: বললেন, ‘এটি শাবানের ১৫ তারিখের রাত। এ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করা হয়, দয়াপ্রার্থীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়। তবে বিদ্বেষপোষণকারীদের আপন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।’ (শুআবুল ঈমান, তৃতীয় খণ্ড, হাদিস-১৪০৬)
আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে সূরায়ে দুখানের ৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন- ‘একটি বরকতময় রজনীতে আমি এই কুরআন অবতীর্ণ করেছি।’ এরপর ৪ নং আয়াতে বলেছেন- ‘এ রাতেই প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয় অর্থাৎ মানুষের ভাগ্যতালিকা বণ্টন হয়।’ এ দিকে ভাগ্যতালিকা বণ্টনের রাতকে রাসূল সা:-এর হাদিসে শবেবরাত বলা হয়েছে। এ দু’টি কথা একত্র করলে মর্ম দাঁড়ায়- শবেবরাতেই কুরআন নাজিল করা হয়েছে। অথচ সূরায়ে কদরের ১ নং আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, পবিত্র কুরআন শবেকদরেই নাজিল করা হয়েছে। যে রাতটি পবিত্র রমজানের অন্তর্ভুক্ত।

এখানে লক্ষণীয় দুটো বিষয়- একটি হচ্ছে কুরআন নাজিল হওয়ার রাত, আরেকটি হচ্ছে ভাগ্যতালিকা বণ্টনের রাত। সূরায়ে কদরের ১ নং আয়াতে প্রমাণ যে, রমজান মাসের শবেকদরে কুরআন নাজিল হয়েছে আর হাদিসে প্রমাণিত যে, ভাগ্য বণ্টনের রাত হলো শবেবরাত।

এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়, সূরা দুখানের তৃতীয় ও চতুর্থ আয়াতে তো কুরআন নাজিলের রাতকেই ভাগ্য বণ্টনের রাত বলা হয়েছে। এ প্রশ্নের জবাবে মুফাসসিররা লিখেছেন, শবেবরাতেই ভাগ্য বণ্টন হয় তবে এর বাস্তবায়ন শুরু হয় শবেকদর থেকে। এ হিসাবে সূরা দুখানের ভাগ্য বণ্টনের রাতকেই কুরআন নাজিলের রাত বলা হয়েছে। তাফসিরে কুরতুবিসহ নির্ভরযোগ্য অনেক তাফসিরে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উদ্ধৃত হয়েছে যে, শবেবরাতে লাওহে মাহফুজ থেকে কুরআন অবতরণের কাজ শুরু হয় এবং শবেকদরে এসে তার সমাপ্তি ঘটে। (কুরতুবি ১৬ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৮৫, তাফসিরে তাবারি ১১খণ্ড, পৃষ্ঠা-২২১)

সুতরাং শবেবরাতের কোনো প্রসঙ্গই স্পষ্ট বা পরোক্ষভাবে কুরআনে নেই বলা অজ্ঞতা আর বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়।
করণীয় : এ রাতটিতে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় বান্দাদের ওপর বিশেষ রহমত দান করেন এবং গুনাহগারদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দেন বিধায় মুসলমানদের উচিত এমন রহমত ও বরকতপূর্ণ রাতকে গণিমত মনে করে বেশি বেশি তাওবাহ ইস্তিগফার করা। সম্মিলিত কোনো রূপ না দিয়ে এবং উদযাপনের বিশেষ কোনো পন্থা অবলম্বন না করে নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির আজকার ও সবধরনের মাসনুন ইবাদতের মধ্য দিয়ে এ রাত পার করা।

আর হ্যাঁ, এ রাতকে অন্যসব সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এ রাতের ফজিলতের ব্যাপারে যত হাদিস বর্ণিত হয়েছে সবগুলোকে ‘মওযু’ বা ‘জইফ’ বলা যেমন ভুল তেমনি এ রাতকে শবেকদরের মতো বা তার চেয়েও বেশি ফজিলতপূর্ণ মনে করাও ভিত্তিহীন ধারণা। বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি কোনোটিই কাম্য নয়। যতটুকু ফজিলত প্রমাণিত ততটুকুই গুরুত্ব দেয়া উচিত।
বর্জনীয় : এ রাতের নিকৃষ্টতম বিদয়াতগুলোর মধ্যে নিচের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত-

ঘরবাড়ি, দোকানপাটে আলোকসজ্জা করা। খেলাধুলা ও আতশবাজির উদ্দেশ্যে সমবেত হওয়া। প্রচুর টাকা ব্যয় করে মসজিদে রঙ-বেরঙের বাতি জ্বালানো। এগুলো সওয়াব পাওয়বার বিষয় নয়; বরং অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন-হাদিসে অপচয় করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে এবং অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

আরেকটি বিদয়াতের কুপ্রভাব শহর-বন্দর থেকে নিয়ে গ্রামের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তা হলো- হালুয়া রুটির অপসংস্কৃতি। সাধারণ মানুষের স্বভাবের সাথে এই অপসংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। তারা মনে করেন, হালুয়া রুটি সামগ্রী পাকানো শবেবরাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে সারা দিন হালুয়া রুটি বানিয়ে পেটপুরে খেয়ে দিনশেষে ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দেয় আর পুরো রাতটি ঘুমের ঘোরে কাটিয়ে শবেবরাতের রহমত আর বরকত থেকে তারা মাহরুমই থেকে যায়।
আসুন বিদয়াত ও ভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের আশায় এ রাতে প্রশান্তচিত্তে ইবাদত করি। নিজেও কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকি, অন্যকেউ মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন, আমিন।

লেখক : শিক্ষার্থী, উচ্চতর গবেষণা বিভাগ, শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

শবেবরাত নিয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি কাম্য নয়

আপডেট সময় ১০:০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩

হাদিস শরিফে শবেবরাতের রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা মধ্য শাবানের রাত বলা হয়েছে। শাবান আরবি মাসের অষ্টম মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা মু’মিন বান্দাদের বিভিন্ন প্রকার রহমত-বরকত দান করেন। তাই এ মাসের নাম শাবান রাখা হয়েছে।

এ রাতকে ফার্সি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় শবেবরাত বলা হয়। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বারাআত’ অর্থ মুক্তি। শবেবরাত মানে ‘মুক্তির রাত’। শবেবরাতে নিহিত রয়েছে মু’মিন-মুসলমানের মুক্তি ও কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এই রাতকে শবেবরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়েছে। এ বিষয়টি জানা যায় নিম্নোক্ত হাদিস দিয়ে-
রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস-৫৬৬৫, শুআবুল ঈমান, হাদিস-৩৮৩৩)

আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, এক রাতে রাসূল সা: সালাতে দাঁড়ালেন। তিনি সিজদা এত দীর্ঘ করলেন যে, আমি ধারণা করলাম তিনি ইন্তেকাল করেছেন…। যখন তিনি সিজদা থেকে মাথা উঠালেন এবং সালাত থেকে অবসর হলেন তখন তিনি বললেন, ‘হে আয়েশা! তুমি কি ধারণা করছ যে, আল্লাহর রাসূল সা: তোমার অধিকার হরণ করছেন?’ এরপর রাসূল সা: বললেন, ‘হে আয়েশা! তুমি কি জানো এটি কোন রাত?’ হজরত আয়েশা রা: বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। রাসূল সা: বললেন, ‘এটি শাবানের ১৫ তারিখের রাত। এ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করা হয়, দয়াপ্রার্থীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়। তবে বিদ্বেষপোষণকারীদের আপন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।’ (শুআবুল ঈমান, তৃতীয় খণ্ড, হাদিস-১৪০৬)
আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে সূরায়ে দুখানের ৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন- ‘একটি বরকতময় রজনীতে আমি এই কুরআন অবতীর্ণ করেছি।’ এরপর ৪ নং আয়াতে বলেছেন- ‘এ রাতেই প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয় অর্থাৎ মানুষের ভাগ্যতালিকা বণ্টন হয়।’ এ দিকে ভাগ্যতালিকা বণ্টনের রাতকে রাসূল সা:-এর হাদিসে শবেবরাত বলা হয়েছে। এ দু’টি কথা একত্র করলে মর্ম দাঁড়ায়- শবেবরাতেই কুরআন নাজিল করা হয়েছে। অথচ সূরায়ে কদরের ১ নং আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, পবিত্র কুরআন শবেকদরেই নাজিল করা হয়েছে। যে রাতটি পবিত্র রমজানের অন্তর্ভুক্ত।

এখানে লক্ষণীয় দুটো বিষয়- একটি হচ্ছে কুরআন নাজিল হওয়ার রাত, আরেকটি হচ্ছে ভাগ্যতালিকা বণ্টনের রাত। সূরায়ে কদরের ১ নং আয়াতে প্রমাণ যে, রমজান মাসের শবেকদরে কুরআন নাজিল হয়েছে আর হাদিসে প্রমাণিত যে, ভাগ্য বণ্টনের রাত হলো শবেবরাত।

এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়, সূরা দুখানের তৃতীয় ও চতুর্থ আয়াতে তো কুরআন নাজিলের রাতকেই ভাগ্য বণ্টনের রাত বলা হয়েছে। এ প্রশ্নের জবাবে মুফাসসিররা লিখেছেন, শবেবরাতেই ভাগ্য বণ্টন হয় তবে এর বাস্তবায়ন শুরু হয় শবেকদর থেকে। এ হিসাবে সূরা দুখানের ভাগ্য বণ্টনের রাতকেই কুরআন নাজিলের রাত বলা হয়েছে। তাফসিরে কুরতুবিসহ নির্ভরযোগ্য অনেক তাফসিরে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উদ্ধৃত হয়েছে যে, শবেবরাতে লাওহে মাহফুজ থেকে কুরআন অবতরণের কাজ শুরু হয় এবং শবেকদরে এসে তার সমাপ্তি ঘটে। (কুরতুবি ১৬ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৮৫, তাফসিরে তাবারি ১১খণ্ড, পৃষ্ঠা-২২১)

সুতরাং শবেবরাতের কোনো প্রসঙ্গই স্পষ্ট বা পরোক্ষভাবে কুরআনে নেই বলা অজ্ঞতা আর বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়।
করণীয় : এ রাতটিতে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় বান্দাদের ওপর বিশেষ রহমত দান করেন এবং গুনাহগারদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দেন বিধায় মুসলমানদের উচিত এমন রহমত ও বরকতপূর্ণ রাতকে গণিমত মনে করে বেশি বেশি তাওবাহ ইস্তিগফার করা। সম্মিলিত কোনো রূপ না দিয়ে এবং উদযাপনের বিশেষ কোনো পন্থা অবলম্বন না করে নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির আজকার ও সবধরনের মাসনুন ইবাদতের মধ্য দিয়ে এ রাত পার করা।

আর হ্যাঁ, এ রাতকে অন্যসব সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এ রাতের ফজিলতের ব্যাপারে যত হাদিস বর্ণিত হয়েছে সবগুলোকে ‘মওযু’ বা ‘জইফ’ বলা যেমন ভুল তেমনি এ রাতকে শবেকদরের মতো বা তার চেয়েও বেশি ফজিলতপূর্ণ মনে করাও ভিত্তিহীন ধারণা। বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি কোনোটিই কাম্য নয়। যতটুকু ফজিলত প্রমাণিত ততটুকুই গুরুত্ব দেয়া উচিত।
বর্জনীয় : এ রাতের নিকৃষ্টতম বিদয়াতগুলোর মধ্যে নিচের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত-

ঘরবাড়ি, দোকানপাটে আলোকসজ্জা করা। খেলাধুলা ও আতশবাজির উদ্দেশ্যে সমবেত হওয়া। প্রচুর টাকা ব্যয় করে মসজিদে রঙ-বেরঙের বাতি জ্বালানো। এগুলো সওয়াব পাওয়বার বিষয় নয়; বরং অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন-হাদিসে অপচয় করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে এবং অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

আরেকটি বিদয়াতের কুপ্রভাব শহর-বন্দর থেকে নিয়ে গ্রামের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তা হলো- হালুয়া রুটির অপসংস্কৃতি। সাধারণ মানুষের স্বভাবের সাথে এই অপসংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। তারা মনে করেন, হালুয়া রুটি সামগ্রী পাকানো শবেবরাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে সারা দিন হালুয়া রুটি বানিয়ে পেটপুরে খেয়ে দিনশেষে ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দেয় আর পুরো রাতটি ঘুমের ঘোরে কাটিয়ে শবেবরাতের রহমত আর বরকত থেকে তারা মাহরুমই থেকে যায়।
আসুন বিদয়াত ও ভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের আশায় এ রাতে প্রশান্তচিত্তে ইবাদত করি। নিজেও কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকি, অন্যকেউ মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন, আমিন।

লেখক : শিক্ষার্থী, উচ্চতর গবেষণা বিভাগ, শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার