বিয়ের ৫ বছর পরে স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি করে বিদেশ পালিয়ে গিয়ে পরবর্তীতে দেশে ফিরে স্ত্রীকে অস্বীকার করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্ত্রী সাহিনুর বেগম। গত ৫ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে সকাল ১১ টায় ভুক্তভোগী স্ত্রী সাহিনুর বেগম একটি লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন।
জানা যায়, গত ১৪ বৎসর আগে বরিশাল সদর উপজেলার ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভেদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল খানের ছেলে জাহিদ খানের সাথে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী ভুক্তভোগী সাহিনুরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সাহিনুর বরিশাল জেলার মেহেন্দি গঞ্জ উপজেলার ৫ নং চানপুর ইউনিয়নে চর খাগকাটা গ্রামের মৃত আলতাফ সরদারের মেয়ে।
ভালোই চলছিল জাহিদ সাহানুরের দাম্পত্য দাম্পত্য জীবন। কিন্তু যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শাশুরী ও দেবরের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সাহিনুরের স্বাভাবিক জীবন। পরে স্বামী জাহিদ বিদেশ যাওয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় শাররীক ভাবে অমানুষিক নির্যাতন, এমনকি নির্যাতনের কৌশল পরিবর্তন করে পাশন্ড স্বামী গোপন অঙ্গে আঘাত করতেন যাতে করে বাহিরের কেউ বুঝতে না পারে।
এভাবে প্রতিদিন নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগী সাহিনুর বেগম শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আরো জানা যায় নির্যাতন চলাকালিন সময় সাহিনুর ছিলেন ৮ মাসের অন্তসত্তা। হঠাৎ চিকিৎসার কথা বলে স্বামী জাহিদ পটুয়াখালী তার বোনের বাসায় আমাকে রেখে চলে যায়। এর একদিন পর ভুক্তভোগী সাহিনুর জানতে পারে তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন তার স্বামী। এরপর পতিতালয় তার কথিত বোন লাভলীর বাসায় মৃত সন্তান প্রসব করে সাহিনুর। সেই থেকে আজও পতিতালয়ের বলয় থেকে বের হতে পারেনি তিনি ।
এদিকে দীর্ঘ কয়েক বৎসর পর স্বামীর খোঁজ পেয়ে গত ৫ ডিসেম্বর শশুর বাড়ি যাওয়ার পথে স্বামী জাহিদের সাথে দেখা হয়। জাহিদ সাহিনুরকে দেখতে পেয়ে চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি দোকানে বসায় এবং তাকে ফিরে পেতে আকুতি জানালে চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন সুজন ও স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার লিটন এর সহযোগীতায় ভুক্তভোগী সাহিনুরকে পরিষদের একটি রুমে আটকিয়ে মারধর করে এবং সাহিনুরের সাথে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ন অলংকার ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাটি তৎক্ষনাৎ ইউপি চেয়ারম্যান জানতে পেরে বরিশাল বন্দর থানা পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করে তাকে পটুয়াখালী পাঠিয়ে দেয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগী সাহিনুর বেগম বলেন, আমার উপর অমানুবিক আচারণ করা হয়েছে, আমি এখন পটুয়াখালী শহরে একটি বাসায় কাজ করি। আমি স্ত্রীর মর্যাদা পেয়ে স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে চাই।