ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

খামারবাড়িতে ব্যাপক মারধরের শিকার কর্মচারী দুই ভাই

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৮:১৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩
  • ১১৪৯ বার পড়া হয়েছে

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) এক কর্মচারীর বদলির জেরে রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলায় ব্যাপক মারধরের শিকার হয়েছেন সাজ্জাদ নুর ও মেহেদী হাসান নামে আপন দুই ভাই। এদের মধ্যে সাজ্জাদ নুর উচ্চমান সহকারী ও মেহেদী হাসান এসএম (স্প্রেয়ার মেকানিক)।

আহত সাজ্জাদ নুরকে প্রথমে রাজধানীর ফুলবাড়ির সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করা হয়। মেহেদী হাসান প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে খামারবাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালকের (অর্থ) দায়িত্বে থাকা তাইজুল ইসলামকে বদলির ঘটনায় গতকাল রোববার খামারবাড়িতে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটায় তার অনুসারীরা। বদলি ঠেকাতে ডিএই’র মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের কক্ষ এবং অর্থ ও প্রশাসন উইংয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কর্মকর্তাদের। বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে খামারবাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাজ্জাদ নুরসহ আরো কিছু কর্মচারীর সাথে তাইজুল গ্রুপের কর্মচারীদের সাথে গতকাল বাগ্বিতণ্ডা হয়।

গতকালের এই ঘটনার সূত্র ধরে আজ সকালে প্রথমে সাজ্জাদ নুরকে খামারবাড়ি চত্বরে গাড়ি চালক লিটনসহ আরো কিছু কর্মচারী ও বহিরাগত এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় মারধরের শিকার হন তার ছোট ভাই মেহেদী হাসান। সাজ্জাদ জ্ঞান ফিরে দেখেন তার ছোট ভাই মেহেদীকে মারধর করা হচ্ছে। তা দেখে সাজ্জাদ ঠেকাতে গেলে ফের মারধরের শিকার হন তিনি। সাজ্জাদ সেখানে ফের অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার কয়েকজন সহকর্মী সিএনজিতে করে ফুলবাড়ি সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে নিয়ে আসে তাকে। রাস্তায় কয়েকবার বমি করেন সাজ্জাদ। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করেন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: রিয়াজুর রশিদ অপু জানান, সাজ্জাদের শরীরের নানা জায়গায় জখমের চিহ্ন রয়েছে। সিটি স্ক্যান করতে দেয়া হয়েছে।

হাসপাতালে কাতরাতে কাতরাতে সাজ্জাদ নুর বলেন, ‘আমার বুকটা জ্বলছে। শরীর নড়াতে পারছি না। সারা শরীরে এতোগুলো মানুষ মিলে মেরেছে। ড্রাইভার লিটন, কামরুল, ফারুক, পলাশ, ঠিকাদার লাল্টুসহ তাইজুলের লোকজন।’

জানা যায়, গতবছরের অক্টোবর থেকে সাজ্জাদসহ কয়েকজন কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। তাদের বদলি এবং প্রশাসনিক আদালতে আপিলকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। সাজ্জাদদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এই সকল কিছুর মূলে তাইজুল ও তার লোকজন। তাদের একজনের মেইল হ্যাক করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।
তবে সার্বিক বিষয়ে জানতে তাইজুল ইসলামকে ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ যা যা ঘটেছে, তা নিয়ে আমরা আজ কয়েক দফা বসেছি। যেখানে আমাদের কর্মকর্তারা ছিলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সদস্য ছিলেন, কর্মচারীদের উভয় পক্ষ ছিলেন। কিভাবে ঘটনাটি ঘটল, এখানে কিভাবে বহিরাগতরা এল- সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা দায়ী অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর যেহেতু মারধরের ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে মামলা হবে।’

বেতন না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি যোগদানের পর জেনেছি বিষয়টি। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাই আইনগতভাবেই এটার সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

খামারবাড়িতে ব্যাপক মারধরের শিকার কর্মচারী দুই ভাই

আপডেট সময় ০৮:১৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) এক কর্মচারীর বদলির জেরে রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলায় ব্যাপক মারধরের শিকার হয়েছেন সাজ্জাদ নুর ও মেহেদী হাসান নামে আপন দুই ভাই। এদের মধ্যে সাজ্জাদ নুর উচ্চমান সহকারী ও মেহেদী হাসান এসএম (স্প্রেয়ার মেকানিক)।

আহত সাজ্জাদ নুরকে প্রথমে রাজধানীর ফুলবাড়ির সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করা হয়। মেহেদী হাসান প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে খামারবাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালকের (অর্থ) দায়িত্বে থাকা তাইজুল ইসলামকে বদলির ঘটনায় গতকাল রোববার খামারবাড়িতে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটায় তার অনুসারীরা। বদলি ঠেকাতে ডিএই’র মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের কক্ষ এবং অর্থ ও প্রশাসন উইংয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কর্মকর্তাদের। বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে খামারবাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাজ্জাদ নুরসহ আরো কিছু কর্মচারীর সাথে তাইজুল গ্রুপের কর্মচারীদের সাথে গতকাল বাগ্বিতণ্ডা হয়।

গতকালের এই ঘটনার সূত্র ধরে আজ সকালে প্রথমে সাজ্জাদ নুরকে খামারবাড়ি চত্বরে গাড়ি চালক লিটনসহ আরো কিছু কর্মচারী ও বহিরাগত এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় মারধরের শিকার হন তার ছোট ভাই মেহেদী হাসান। সাজ্জাদ জ্ঞান ফিরে দেখেন তার ছোট ভাই মেহেদীকে মারধর করা হচ্ছে। তা দেখে সাজ্জাদ ঠেকাতে গেলে ফের মারধরের শিকার হন তিনি। সাজ্জাদ সেখানে ফের অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার কয়েকজন সহকর্মী সিএনজিতে করে ফুলবাড়ি সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে নিয়ে আসে তাকে। রাস্তায় কয়েকবার বমি করেন সাজ্জাদ। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করেন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: রিয়াজুর রশিদ অপু জানান, সাজ্জাদের শরীরের নানা জায়গায় জখমের চিহ্ন রয়েছে। সিটি স্ক্যান করতে দেয়া হয়েছে।

হাসপাতালে কাতরাতে কাতরাতে সাজ্জাদ নুর বলেন, ‘আমার বুকটা জ্বলছে। শরীর নড়াতে পারছি না। সারা শরীরে এতোগুলো মানুষ মিলে মেরেছে। ড্রাইভার লিটন, কামরুল, ফারুক, পলাশ, ঠিকাদার লাল্টুসহ তাইজুলের লোকজন।’

জানা যায়, গতবছরের অক্টোবর থেকে সাজ্জাদসহ কয়েকজন কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। তাদের বদলি এবং প্রশাসনিক আদালতে আপিলকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। সাজ্জাদদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এই সকল কিছুর মূলে তাইজুল ও তার লোকজন। তাদের একজনের মেইল হ্যাক করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।
তবে সার্বিক বিষয়ে জানতে তাইজুল ইসলামকে ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ যা যা ঘটেছে, তা নিয়ে আমরা আজ কয়েক দফা বসেছি। যেখানে আমাদের কর্মকর্তারা ছিলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সদস্য ছিলেন, কর্মচারীদের উভয় পক্ষ ছিলেন। কিভাবে ঘটনাটি ঘটল, এখানে কিভাবে বহিরাগতরা এল- সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা দায়ী অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর যেহেতু মারধরের ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে মামলা হবে।’

বেতন না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি যোগদানের পর জেনেছি বিষয়টি। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাই আইনগতভাবেই এটার সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা।’