দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জে পাটুরিয়া নৌরুট। পদ্মা সেতু চালু হবার আগে যে ঘাটে লেগে থাকত তীব্র যানজট, ফেরির জন্য যানবাহন গুলোকে অপেক্ষা করতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সেখানে পদ্মা সেতু চালু হবার পর ঘাটের চিত্র পুরোটাই পাল্টে গেছে। ঘাট এলাকায় যানবাহনের নেই কোনো চাপ, নেই কোনো সিরিয়াল। ভোগান্তিও নেই ঘাট এলাকায়।
এছাড়াও পদ্মা সেতু দিয়ে আগামী ২০ এপ্রিল থেকে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ার ঘোষণায় দক্ষিনাঞ্চলের সকল যাত্রী এখন থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করার সুযোগে মহা আনন্দে রয়েছে। ফলে এ বছর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে খুবই কম যানবাহন ও যাত্রীরা পারাপারের জন্য আসছে। আর দৌলতদিয়া পাটুরিয়া পথে ঈদের আগে পরে ছয়দিন পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার হতে পারবে না।
এ ঘোষণায় বিআইডাব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক জানান, এ ঘাটে তো ট্রাক পারই হতে আসছে না। তার আবার ঈদে বন্ধের ঘোষণা দিয়ে কি হবে?
ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, এবার ঈদের আগে ও পরে ঘাটে দুর্ভোগের আশঙ্কা নেই। যাত্রীরা স্বস্তিতেই তাদের ঈদ যাত্রা শেষ করতে পারবে। তবে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকায় এই রুটে বাড়তে পারে মোটরসাইকেলের চাপ। তবে চাপ বাড়লেও থাকবে না কোনো ভোগান্তি।
সরজমিনে ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ফাঁকা। ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহন বাসও তেমন চোখে পড়ার মতোন ছিল না। ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত যেখানে আগে গাড়ির সিরিয়াল থাকত, সেখানে এখন কোনো সিরিয়াল নেই। ঘাটে আসা যানবাহনগুলো সরাসরি উঠে পড়ছে ফেরিতে। ফেরিগুলো অপেক্ষা করছে যানবাহনের জন্য। এছাড়াও ঘাটের হকারদের নেই কোনো হাকডাক। ঘাট কেন্দ্রিক অধিকাংশ হোটেলও বন্ধ রয়েছে কয়েকমাস ধরে। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের চিত্র এখন এমনি।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর আগে দৌলতদিয়া ঘাটে দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। ঈদের আগে ও পরে সেই দুর্ভোগ বেড়ে যেত কয়েকগুণ। দূরপাল্লার যানবাহন গুলোকে ঘাট পার হতে অপেক্ষা করতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর সে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোটাই। এখন ঘাটগুলোতে গাড়ির অপেক্ষায় ফেরি বসে থাকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ
(বিআইডব্লিউটিএ)-এর দৌলতদিয়া ঘাট ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন জানান, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৩৩টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঈদের আগে যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে। তবে যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা মেনেই পারাপার করা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, ঈদকে সামনে রেখে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। এখনো ঈদ যাত্রা শুরু হয়নি। তবে দু-তিনদিন পর থেকে হয়ত চাপ বাড়বে। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য ২০টি ফেরি চালু থাকবে। পাশাপাশি তিনটি ঘাটের ছয়টি পকেট চালু থাকবে।