ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ৯ বছর : চোখের পানিতে নিহতদের স্মরণ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৬:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
  • ১১২১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর পূর্ণ হলো। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে নিহতদের স্বজনরা তাদের আত্মার শান্তি কামনায় কবর জিয়ারত ও দোয়া করেছেন। চোখের পানিতে স্মরণ করেছেন তাদের।

এদিকে, আলোচিত এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে এদিন নারায়ণগঞ্জে আদালত চত্বরে মানববন্ধন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা এ মানববন্ধন করেন।

উচ্চ আদালতে ধীরগতির কারণে এখনো নিহতের পরিবারের সদস্যরা ভয় ও আতঙ্কে আছেন বলে জানান মামলার বাদি ও নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি, নিহত নজরুলের ভাই আব্দুস সালাম, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের ও তাজুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ রাজু আহমেদ।

তারা জানান, সাতজন নিহতের পরিবারের মধ্যে পাঁচটি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এ সময় দ্রুত রায় বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এছাড়া মানববন্ধনে সাত খুন মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সাত খুনের এই মামলায় নিম্ন আদালতের রায় হয়েছে। এরপর আসামিরা আপিল করলে হাইকোর্ট ডিভিশনে র‌্যাবের সাবেক অধিনায়ক তারেক সাইদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম এম রানা ও নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১১ জনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রয়েছে। বাকি ৩৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে এমন প্রত্যাশা করে সাখাওয়াত হোসেন খান আরো বলেন, ‘সাত খুন নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড হওয়ার পর আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ আন্দোলন করে আসছিল। রাষ্ট্রের কাছে দাবি, এই মামলাটির দ্রুত শুনানি এবং নিষ্পত্তি করে দ্রুত কার্যকর করা হোক। কারণ সাত খুন আলোচিত একটি হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের সাজা কার্যকরের জন্য তাকিয়ে আছে সারা দেশ। এটা কার্যকর হলে দৃষ্টান্তমূলক ও যুগান্তকারী রায় হয়ে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে এক মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের দু’দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনা থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ফতুল্লা থানায়। পরে আদালত আসামিদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় দেয়। রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে ১০ বছর করে ও ২ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়।

সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট হাইকোর্ট সাত খুনের অন্যতম আসামি সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম এম রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ৯ বছর : চোখের পানিতে নিহতদের স্মরণ

আপডেট সময় ০৬:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর পূর্ণ হলো। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে নিহতদের স্বজনরা তাদের আত্মার শান্তি কামনায় কবর জিয়ারত ও দোয়া করেছেন। চোখের পানিতে স্মরণ করেছেন তাদের।

এদিকে, আলোচিত এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে এদিন নারায়ণগঞ্জে আদালত চত্বরে মানববন্ধন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা এ মানববন্ধন করেন।

উচ্চ আদালতে ধীরগতির কারণে এখনো নিহতের পরিবারের সদস্যরা ভয় ও আতঙ্কে আছেন বলে জানান মামলার বাদি ও নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি, নিহত নজরুলের ভাই আব্দুস সালাম, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের ও তাজুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ রাজু আহমেদ।

তারা জানান, সাতজন নিহতের পরিবারের মধ্যে পাঁচটি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এ সময় দ্রুত রায় বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এছাড়া মানববন্ধনে সাত খুন মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সাত খুনের এই মামলায় নিম্ন আদালতের রায় হয়েছে। এরপর আসামিরা আপিল করলে হাইকোর্ট ডিভিশনে র‌্যাবের সাবেক অধিনায়ক তারেক সাইদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম এম রানা ও নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১১ জনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রয়েছে। বাকি ৩৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে এমন প্রত্যাশা করে সাখাওয়াত হোসেন খান আরো বলেন, ‘সাত খুন নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড হওয়ার পর আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ আন্দোলন করে আসছিল। রাষ্ট্রের কাছে দাবি, এই মামলাটির দ্রুত শুনানি এবং নিষ্পত্তি করে দ্রুত কার্যকর করা হোক। কারণ সাত খুন আলোচিত একটি হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের সাজা কার্যকরের জন্য তাকিয়ে আছে সারা দেশ। এটা কার্যকর হলে দৃষ্টান্তমূলক ও যুগান্তকারী রায় হয়ে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে এক মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের দু’দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনা থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ফতুল্লা থানায়। পরে আদালত আসামিদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় দেয়। রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে ১০ বছর করে ও ২ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়।

সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট হাইকোর্ট সাত খুনের অন্যতম আসামি সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম এম রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।