ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সুদান থেকে ফিরতে মুখিয়ে কয়েক শ’ বাংলাদেশী, অপেক্ষা সৌদি জাহাজের

সুদানে যুদ্ধাবস্থার কারণে সেখান থেকে বাংলাদেশে ফেরার জন্য ৬০০রও বেশি বাংলাদেশী অপেক্ষা করছেন।
সুদানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ জানিয়েছেন, পোর্ট অব সুদানের একটি ক্যাম্পে বাংলাদেশীরা জড়ো হয়েছেন।

সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য এখন সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ চলছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশীদের প্রথমে সৌদি আরবের জেদ্দায় আনার চেষ্টা চলছে। এখন বিষয়টি নির্ভর করছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জাহাজ পাওয়ার ওপর। সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জাহাজ পেলে সমুদ্রপথে বাংলাদেশীদের জেদ্দায় আনা হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন,‘যদি ৪ তারিখেও তারা জেদ্দা পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তাহলে ৫ তারিখ রাতের ফ্লাইট তারা ধরতে পারবে বলে আশা করছি। তবে পুরো বিষয়টি একটি আরেকটির সাথে সম্পৃক্ত। প্রতিটি ধাপের কাজ সঠিকভাবে শেষ করা গুরুত্বপূর্ণ।’

ধারণা করা হচ্ছে, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশী কর্মরত আছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যাটি বাংলাদেশ দূতাবাসও জানে না। সেখানে যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশীদের দূতাবাসের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত ৭০০ বাংলাদেশী রিপোর্ট করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আগ্রহী বাংলাদেশীদের সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি বাসে করে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল থেকে পোর্ট অব সুদানে আনা শুরু হয়।

প্রায় ১১ ঘণ্টার বাস ভ্রমণ করে খার্তুম থেকে পোর্ট অব সুদানে এসেছেন বেশ কিছু বাংলাদেশী। খার্তুম থেকে এ বন্দরটির দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছিল সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের সমুদ্রপথে জেদ্দা নেয়ার পর সেখান থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে করে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় জেদ্দা পর্যন্ত আসার পর তাদের দেশে পাঠানোর দায়িত্ব বাংলাদেশ দূতাবাসের।

সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসকে এ বিষয়ে সহায়তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ইতোমধ্যেই জেদ্দায় একটি স্কুলকে প্রস্তুত করা হয়েছে সুদান থেকে আসা বাংলাদেশীদের রাখার জন্য।

সেখানে খাদ্য ও ওষুধসহ দরকারি সামগ্রীসহ সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকেই বিমানের ফ্লাইটে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

সুদানের সামরিক নেতৃত্বের দুই অংশের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি তুমুল সহিংসতা শুরু হয়।

খার্তুম শহরে বোমা বিস্ফোরণ, গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ আগেই তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়।

কেন এই লড়াই?
সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে। এই কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই এই লড়াই।

এরা হলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশটি পরিচালনা করে আসছিলেন। আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

প্রায় এক লাখ সদস্যের র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং তার পরে নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্বে কে থাকবে তা নিয়েই মূলত এই বিরোধ।

নতুন বাহিনীতে কে কার অধীনে কাজ করবেন তা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এই সম্প্রতি দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন স্থানে আরএসএফ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি সুদানি সেনাবাহিনী। তারা এটিকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে। তার জের ধরেই লড়াই শুরু হয়, যা এখনো চলছে।

সূত্র : বিবিসি

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

সুদান থেকে ফিরতে মুখিয়ে কয়েক শ’ বাংলাদেশী, অপেক্ষা সৌদি জাহাজের

আপডেট সময় ০৬:১১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

সুদানে যুদ্ধাবস্থার কারণে সেখান থেকে বাংলাদেশে ফেরার জন্য ৬০০রও বেশি বাংলাদেশী অপেক্ষা করছেন।
সুদানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ জানিয়েছেন, পোর্ট অব সুদানের একটি ক্যাম্পে বাংলাদেশীরা জড়ো হয়েছেন।

সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য এখন সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ চলছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশীদের প্রথমে সৌদি আরবের জেদ্দায় আনার চেষ্টা চলছে। এখন বিষয়টি নির্ভর করছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জাহাজ পাওয়ার ওপর। সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জাহাজ পেলে সমুদ্রপথে বাংলাদেশীদের জেদ্দায় আনা হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন,‘যদি ৪ তারিখেও তারা জেদ্দা পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তাহলে ৫ তারিখ রাতের ফ্লাইট তারা ধরতে পারবে বলে আশা করছি। তবে পুরো বিষয়টি একটি আরেকটির সাথে সম্পৃক্ত। প্রতিটি ধাপের কাজ সঠিকভাবে শেষ করা গুরুত্বপূর্ণ।’

ধারণা করা হচ্ছে, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশী কর্মরত আছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যাটি বাংলাদেশ দূতাবাসও জানে না। সেখানে যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশীদের দূতাবাসের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত ৭০০ বাংলাদেশী রিপোর্ট করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আগ্রহী বাংলাদেশীদের সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি বাসে করে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল থেকে পোর্ট অব সুদানে আনা শুরু হয়।

প্রায় ১১ ঘণ্টার বাস ভ্রমণ করে খার্তুম থেকে পোর্ট অব সুদানে এসেছেন বেশ কিছু বাংলাদেশী। খার্তুম থেকে এ বন্দরটির দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছিল সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের সমুদ্রপথে জেদ্দা নেয়ার পর সেখান থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে করে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় জেদ্দা পর্যন্ত আসার পর তাদের দেশে পাঠানোর দায়িত্ব বাংলাদেশ দূতাবাসের।

সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসকে এ বিষয়ে সহায়তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ইতোমধ্যেই জেদ্দায় একটি স্কুলকে প্রস্তুত করা হয়েছে সুদান থেকে আসা বাংলাদেশীদের রাখার জন্য।

সেখানে খাদ্য ও ওষুধসহ দরকারি সামগ্রীসহ সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকেই বিমানের ফ্লাইটে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

সুদানের সামরিক নেতৃত্বের দুই অংশের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি তুমুল সহিংসতা শুরু হয়।

খার্তুম শহরে বোমা বিস্ফোরণ, গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ আগেই তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়।

কেন এই লড়াই?
সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে। এই কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই এই লড়াই।

এরা হলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশটি পরিচালনা করে আসছিলেন। আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

প্রায় এক লাখ সদস্যের র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং তার পরে নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্বে কে থাকবে তা নিয়েই মূলত এই বিরোধ।

নতুন বাহিনীতে কে কার অধীনে কাজ করবেন তা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এই সম্প্রতি দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন স্থানে আরএসএফ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি সুদানি সেনাবাহিনী। তারা এটিকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে। তার জের ধরেই লড়াই শুরু হয়, যা এখনো চলছে।

সূত্র : বিবিসি