রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিক হারে শুকিয়ে গেছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে হ্রদে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। জেলার পাঁচটি উপজেলা বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, লংগদু ও বরকলের সাথে জেলা সদরের আংশিক স্থানে নৌ চলাচল হচ্ছে।
উপজেলাগুলোতে নৌযানে করে লোকজনের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকলে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও ভাড়া দিতে হচ্ছে প্রায় তিনগুণ।
জৈষ্ঠ্যের খরতাপে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে মানুষকে উপজেলার গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে এসব পাহাড়ি এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। খাবার পানির জন্য কয়েক মাইল হেঁটে তাদের খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন, মাছ চাষ ও নৌ যোগাযোগ সুবিধার জন্য ১৯৬০ সালে কাপ্তাইয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ফলে পুরাতন রাঙ্গামাটির বিস্তৃর্ণ সমতলী জায়গা পানিতে তলিয়ে গিয়ে বিশাল জলধার কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি হয়। এ কারণে রাঙ্গামাটির জেলা সদরের সাথে পাঁচ উপজেলার নৌ-পথই হচ্ছে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। উপজেলার বাসিন্দারা নৌ-পথে লঞ্চ, ইঞ্জিনবোট ও স্পিডবোট যোগে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় যাতায়াত করে থাকেন।
গত চার মাস ধরে নৌ যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে এখানকার মানুষ। এ দিকে বিলাইছড়িতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর মাধ্যমে শ্রমিক দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের ও রাইংখ্যাং খালের গভীরতা বাড়ানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।
বিলাইছড়ির কেংড়াছড়ি হতে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার নৌ-পথে পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে হ্রদের পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় নৌ যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ২১ এপ্রিল থেকে এ কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিলাইছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, বিলাইছড়ি, কেরনছড়ি, কেংড়াছড়ি, গাছকাটছড়া, ফারুয়াসহ অনেক জায়গায় পানির স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গত চারমাস ধরে নৌ যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে এখানকার মানুষ। তাই জনদুর্ভোগ কমাতে শতাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের তলদেশের মাটি অপসারণ করে হ্রদের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।