যশোরে প্রতারণার দায়ে তিন ইরানি নাগরিকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে ডিবি। চক্রটি ডেভিল ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন প্রতারক চক্রের মূলহোতা ইরানের রাজধানী তেহরানের লতিফ মাসুফির ছেলে ফারিবোরয মাসুফি, দেশটির খরাজ গহরদস্তের খালেদ মাহবুবী, তার ছেলে সালার মাহাবুবী, বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার ঘ্যানাসুর গ্রামের সরোয়ার শেখের ছেলে খোরশেদ আলম ও বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবু।
সোমবার (৮ মে) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৩৫৯ মার্কিন ডলার, ৩২৫ ইন্ডিয়ান রুপি, ১৮ লাখ ৮০ হাজার ইরানি রিয়েল, ১৮৫ নেপালি রুপি, ১ হাজার ভিয়েতনামি ডং, বাংলাদেশী ৫৪ হাজার ৭০০ টাকা, প্রাইভেটকার, অজ্ঞান করার দুটি পারফিউম, তিনটি পাসপোর্ট, সাতটি মোবাইলফোন, দুটি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত ৮ এপ্রিল অভয়নগর উপজেলার বর্ণী হরিশপুর বাজারে জালাল মোল্লার মার্কেটের শরিফুল ইসলামের মরিয়ম স্টোরের সামনে প্রাইভেটকার থামিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের তিন থেকে চারজন লোক নামেন। তাদের দু‘জন দোকানে প্রবেশ করেন। এদের একজনের মাথায় টুপি, মুখে মাস্ক, প্যান্ট, শার্ট পরিহিত ছিল। তারা আরবি ভাষায় নারিকেল তেল চান। এ সময় তারা শরিফুলের বাবার সাথে হ্যান্ডশেক করে মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে মুখের কাছে নেয়। একপর্যায়ে শরিফুলের বাবা অজ্ঞান হয়ে প্রতারক চক্রের নিয়ন্ত্রণে চলে যান। তারা যা বলেন তাই শুনতে থাকেন শরিফুলের বাবা। এ সুযোগে দোকানে থাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নগদ প্রায় ৬ লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় প্রতারকরা। এ ঘটনায় গত ৫ মে অভয়নগর থানায় মামলা করেন শরিফুল।
এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবির ওপর। ডিবি প্রথমেই দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত টিম। এরপর প্রাইভেটকারের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে অনুসন্ধান শুরু করে তারা। প্রথমে তারা প্রতারক চক্রের দুই সদস্যের অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। রোববার অভিযান চালিয়ে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের সদস্য খোরশেদ আলম ও সাইদুল ইসলাম বাবুকে আটক করে। এরপর তাদের দেয়া তথ্যে যশোরের হোটেল সিটি প্লাজা থেকে রোববার রাত ১০টার পর তিন ইরানী নাগরিককে আটক করে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন।