ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নিন্দুকরা থাকবে হুতামা জাহান্নামে

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
  • ১১২২ বার পড়া হয়েছে

‘দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।’ (সূরা হুমাজাহ-১) অর্থাৎ যারা সমালোচনা করে, নিন্দা করে, গিবত করে, তাদেরকে এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আইয়ামে জাহিলিয়া যুগে আরবের লোকেরা একে অপরের সমালোচনা ও নিন্দা করত, তাদের ভেতরে নম্রতা ও ভদ্রতা কিছু ছিল না। বিখ্যাত কাফের উবাই ইবনে খলফ সেই প্রিয় নবী সা: ও মুসলমানদেরকে নিন্দা করত। কাফের আখনাস ইবনে শোরায়েব মুসলমানদের সমালোচনা করত। কাফের মুগিরা ইবনে ওয়ালিদ মুসলমানদের সমালোচনা করত। আস ইবনে ওয়ায়েল প্রিয় নবীজীর নামে মিথ্যা অপবাদ ও সমালোচনা করত। বর্তমানে গ্রাম কিংবা শহরে চায়ের দোকানে ও হাটবাজারে দেখা যায় একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। অনেক মানুষ চায়ের দোকানে বসে সারা দিন অন্যের সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। অনেকে চায়ের দোকানে বসে সারা দিন গিবত ও মিথ্যা অপপ্রচার করে। গ্রামের কেউ ভালো কিছু করলে অন্যরা হিংসায় মরে যায় ও তার সমালোচনায় করে। গ্রামাঞ্চলে এক ভাই আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাকে। গ্রাম কিংবা শহরের অনেক মহিলা সারা দিন অন্যের সমালোচনা ও পরনিন্দায় ব্যস্ত থাকে। অনেক পরিবারের ভেতরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে। অনেকে বন্ধুদেরকে অপমান করে ও নিন্দা করে, অনেকে বন্ধুদের মধ্যে বিভেদ ও ঝগড়া সৃষ্টি করে। অনেকে চোখের ইশারায় ও মুখ দিয়ে অন্যকে অপমান ও নিন্দা করে। নিন্দুকেরা সবসময় মানুষের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে। কেউ সামনে সমালোচনা করে আবার কেউ পেছনে সমালোচনা করে।

যারা সমালোচনা ও পরনিন্দা করে তাদেরকে ‘হুতামা’ নামক জাহান্নামে জ্বালানো হবে ও তাদের হাড় ভেঙেচুরে চুরমার করে দেয়া হবে। আল্লাহ বলেন- ‘কখনো না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়।’ (সূরা হুমাযাহ-৪) এটি হলো ভয়াবহ ও লেলিহান শিখাযুক্ত আগুন, সমালোচক ও নিন্দুকদেরকে এই আগুনে পোড়ানো হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হুতামা কী, তা কি তুমি জানো? ওটি আল্লাহর প্রজ্বলিত হুতাশন।’ (সূরা হুমাযাহ : ৫-৬)

নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে প্রজ্বলিত মুকাদাহ আগুনে নিক্ষেপ করা হবে, এ আগুন সম্পর্কে রাসূল সা: বলেছেন, এক হাজার বছর এ আগুনকে জ্বালানো হয়েছে, শেষ পর্যন্ত তা লাল রঙ ধারণ করেছে। তারপর আবার এক হাজার বছর এ আগুনকে উত্তাপ দেয়া হয়েছে, ফলে তা সাদা হয়ে গেছে। তৎপর পুনরায় এক হাজার বছর উত্তাপ দেয়া হয়েছে শেষ পর্যন্ত তা কালো হয়ে গেছে। এখন তা মারাত্মক কালো রঙ ধারণ করে আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘নিশ্চয়ই ওটি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে।’ (সূরা হুমাজাহ-৮)

যারা নিন্দুক ও সমালোচক তাদেরকে অগ্নি চার দিক থেকে ঘিরে রাখবে, সমালোচক ও নিন্দুকদেরকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপের পরে চিরদিনের জন্য তার দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে, ফলে তারা তা থেকে বের হতে পারবে না এবং দোজখের উত্তাপ থেকেও বের হতে পারবে না। নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে একপর্যায়ে লৌহ নির্মিত সিন্দুকের মধ্যে বন্ধ করে রাখা হবে। এরপর সে সিন্দুককে বন্ধ করে দোজখের নিম্নদেশে নিক্ষেপ করা হবে। আল্লাহ বলেন- ‘দীর্ঘায়িত স্তম্ভগুলোয়’। (সূরা হুমাজাহ-৯)
নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তার ওপর লোহার কিলক বসানো হবে, যার ফলে তারা জাহান্নামের উত্তাপে বের হওয়ার চেষ্টা করেও তা থেকে বের হতে পারবে না। আল্লাহ আমাদেরকে সবধরনের নিন্দা ও অন্যের সমালোচনা করা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

লেখক :

  • মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী

আলেম, প্রাবন্ধিক

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

নিন্দুকরা থাকবে হুতামা জাহান্নামে

আপডেট সময় ১০:০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

‘দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।’ (সূরা হুমাজাহ-১) অর্থাৎ যারা সমালোচনা করে, নিন্দা করে, গিবত করে, তাদেরকে এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আইয়ামে জাহিলিয়া যুগে আরবের লোকেরা একে অপরের সমালোচনা ও নিন্দা করত, তাদের ভেতরে নম্রতা ও ভদ্রতা কিছু ছিল না। বিখ্যাত কাফের উবাই ইবনে খলফ সেই প্রিয় নবী সা: ও মুসলমানদেরকে নিন্দা করত। কাফের আখনাস ইবনে শোরায়েব মুসলমানদের সমালোচনা করত। কাফের মুগিরা ইবনে ওয়ালিদ মুসলমানদের সমালোচনা করত। আস ইবনে ওয়ায়েল প্রিয় নবীজীর নামে মিথ্যা অপবাদ ও সমালোচনা করত। বর্তমানে গ্রাম কিংবা শহরে চায়ের দোকানে ও হাটবাজারে দেখা যায় একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। অনেক মানুষ চায়ের দোকানে বসে সারা দিন অন্যের সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। অনেকে চায়ের দোকানে বসে সারা দিন গিবত ও মিথ্যা অপপ্রচার করে। গ্রামের কেউ ভালো কিছু করলে অন্যরা হিংসায় মরে যায় ও তার সমালোচনায় করে। গ্রামাঞ্চলে এক ভাই আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাকে। গ্রাম কিংবা শহরের অনেক মহিলা সারা দিন অন্যের সমালোচনা ও পরনিন্দায় ব্যস্ত থাকে। অনেক পরিবারের ভেতরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে। অনেকে বন্ধুদেরকে অপমান করে ও নিন্দা করে, অনেকে বন্ধুদের মধ্যে বিভেদ ও ঝগড়া সৃষ্টি করে। অনেকে চোখের ইশারায় ও মুখ দিয়ে অন্যকে অপমান ও নিন্দা করে। নিন্দুকেরা সবসময় মানুষের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে। কেউ সামনে সমালোচনা করে আবার কেউ পেছনে সমালোচনা করে।

যারা সমালোচনা ও পরনিন্দা করে তাদেরকে ‘হুতামা’ নামক জাহান্নামে জ্বালানো হবে ও তাদের হাড় ভেঙেচুরে চুরমার করে দেয়া হবে। আল্লাহ বলেন- ‘কখনো না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়।’ (সূরা হুমাযাহ-৪) এটি হলো ভয়াবহ ও লেলিহান শিখাযুক্ত আগুন, সমালোচক ও নিন্দুকদেরকে এই আগুনে পোড়ানো হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হুতামা কী, তা কি তুমি জানো? ওটি আল্লাহর প্রজ্বলিত হুতাশন।’ (সূরা হুমাযাহ : ৫-৬)

নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে প্রজ্বলিত মুকাদাহ আগুনে নিক্ষেপ করা হবে, এ আগুন সম্পর্কে রাসূল সা: বলেছেন, এক হাজার বছর এ আগুনকে জ্বালানো হয়েছে, শেষ পর্যন্ত তা লাল রঙ ধারণ করেছে। তারপর আবার এক হাজার বছর এ আগুনকে উত্তাপ দেয়া হয়েছে, ফলে তা সাদা হয়ে গেছে। তৎপর পুনরায় এক হাজার বছর উত্তাপ দেয়া হয়েছে শেষ পর্যন্ত তা কালো হয়ে গেছে। এখন তা মারাত্মক কালো রঙ ধারণ করে আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘নিশ্চয়ই ওটি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে।’ (সূরা হুমাজাহ-৮)

যারা নিন্দুক ও সমালোচক তাদেরকে অগ্নি চার দিক থেকে ঘিরে রাখবে, সমালোচক ও নিন্দুকদেরকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপের পরে চিরদিনের জন্য তার দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে, ফলে তারা তা থেকে বের হতে পারবে না এবং দোজখের উত্তাপ থেকেও বের হতে পারবে না। নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে একপর্যায়ে লৌহ নির্মিত সিন্দুকের মধ্যে বন্ধ করে রাখা হবে। এরপর সে সিন্দুককে বন্ধ করে দোজখের নিম্নদেশে নিক্ষেপ করা হবে। আল্লাহ বলেন- ‘দীর্ঘায়িত স্তম্ভগুলোয়’। (সূরা হুমাজাহ-৯)
নিন্দুক ও সমালোচকদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তার ওপর লোহার কিলক বসানো হবে, যার ফলে তারা জাহান্নামের উত্তাপে বের হওয়ার চেষ্টা করেও তা থেকে বের হতে পারবে না। আল্লাহ আমাদেরকে সবধরনের নিন্দা ও অন্যের সমালোচনা করা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

লেখক :

  • মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী

আলেম, প্রাবন্ধিক