ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পরকালে কাফেররা যা কামনা করবে

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩
  • ১১২১ বার পড়া হয়েছে

পৃথিবীর বুকে কাফেররা যাচ্ছেতাই করে চলেছে। নিজেদের মনমতো জীবনযাপন করছে। আল্লাহ তায়ালার আদেশগুলো মানছে না ও তার নিষেধগুলোর তোয়াক্কা করছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা মহান আল্লাহর অবাধ্যতা ও নাফরমানির মধ্যে জড়িত থাকছে। নিজেদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান আনছে না। মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনা, তাঁর আদেশ-নিষেধের পরোয়া না করা ও নিজেদের মনমতো জীবনযাপন করার কারণে পরকালে তাদেরকে ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। আখিরাতে তারা ভয়াবহ শাস্তি ও বিভীষিকাময় আজাব ভোগ করবে। যখন তারা জাহান্নামের রকমারি আজাব দেখবে তখন তাদের টনক নড়বে। এ সময় তারা এমন কিছু আশা করবে যেগুলো পরিণামে তাদের দুরাশায় পরিণত হবে।

স্বজনদের মুক্তিপণরূপে দিতে চাইবে : স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন, ভাই-বেরাদার ও জ্ঞাতিগোষ্ঠীকে সবাই ভালোবাসে। স্বজন-পরিজনের জন্য অনেকসময় মানুষ জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। কাফেররাও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু পরকালের শাস্তি হবে ভয়ঙ্কর। অপরাধী কাফেররা যখন পরকালের অসহনীয় শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা এই শাস্তি থেকে যেকোনো মূল্যে পরিত্রাণ পেতে চাইবে। নিজেদের স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বেরাদার ও পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুনে ফেলে হলেও নিজেরা মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সে দিন অপরাধী ব্যক্তি পণস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে, তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে, তার গোষ্ঠীকে যারা তাকে আশ্রয় দিত এবং পৃথিবীর সব কিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।’ (সূরা মাআরিজ: ১১-১৫) কিন্তু তাদের এই আশা দুরাশায় পরিণত হবে। তাদেরকে তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই তারা মুক্তি পাবে না। পৃথিবীর সবকিছু দিয়েও যদি তারা মুক্তি পেতে চায়, তাহলেও তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে না। আল-কুরআনে এসেছে- ‘যারা কুফরি করে এবং কাফের অবস্থায় যাদের মৃত্যু ঘটে তাদের কারো থেকে পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ বিনিময়স্বরূপ দিলেও তা কখনো কবুল করা হবে না। এরাই তারা যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে; এদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সূরা আলে ইমরান-৯১)

পুনরায় পৃথিবীতে আসতে চাইবে : পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় নেককাজ ও সৎকর্ম করার বহু সুযোগ মানুষের রয়েছে। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগায় খুব কম মানুষ। যেসব লোক পৃথিবীতে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সৎকর্ম সম্পাদন করে তারা পরকালে তাদের সৎকর্মের সুফল উপভোগ করবে। পক্ষান্তরে যারা নিজেদের অপার সুযোগ হাতছাড়া করে মন্দকাজ করে তাদেরকে তাদের মন্দ কর্মের পরিণতি ভোগ করতে হবে। কাফেররা যখন তাদের মন্দ কর্মের প্রতিফলস্বরূপ জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা এই পৃথিবীতে পুনরায় এসে সৎকর্ম সম্পাদন করার সুযোগ চাইবে। কিন্তু মৃত্যুর পর কাউকে পুনরায় পৃথিবীতে আসার সুযোগ দেয়া হবে না। মহান আল্লাহ বলেন- ‘তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোক? যে দিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে, সে দিন আগে যারা একে ভুলে গিয়েছিল তারা বলবে, বাস্তবিকই আমাদের প্রতিপালকের পয়গম্বররা সত্যসহ আগমন করেছিলেন। অতএব, আমাদের জন্য কোনো সুপারিশকারী আছে কি, যে সুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হলে আমরা আগে যা করতাম তার বিপরীত কাজ করে আসতাম। নিশ্চয় তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা মনগড়া যা বলত, তা উধাও হয়ে যাবে।’ (সূরা আরাফ-৫৩)

মাটি হওয়ার আকাক্সক্ষা করবে : পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সবল ও কিছু রয়েছে দুর্বল। আর সাধারণত সবল প্রাণীরা দুর্বল প্রাণীদের উপর আক্রমণ করে তাদেরকে কষ্ট দেয়। বিচার দিবসে মহান আল্লাহ এসব অন্যায়ের বিচার করবেন। দুর্বল প্রাণীকে সবল করে এবং সবল প্রাণীকে দুর্বল করে তাদেরকে প্রতিশোধ গ্রহণ করার সুযোগ দেবেন। হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিংবিশিষ্ট বকরি থেকে শিংবিহীন বকরির প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।’ (সহিহ মুসলিম-৬৪৭৪) এরপর যখন প্রতিশোধ গ্রহণ করা শেষ হবে তখন মহান আল্লাহ তাদের সবাইকে বলবেন, ‘তোমরা মাটি হয়ে যাও’। এরপর মানুষ ও জিন সম্প্রদায় ছাড়া অন্য সব প্রাণী মাটি হয়ে যাবে। যখন এই দৃশ্য কাফেররা প্রত্যক্ষ করবে ও বুঝতে পারবে যে, জন্তু-জানোয়ারকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে হবে না তখন তারাও মাটি হয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করবে। আল-কুরআনে এসেছে- ‘আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যে দিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফের বলবে, হায়! আফসোস- আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।’ (সূরা নাবা-৪০) অন্য আরেক আয়াতে এসেছে, কাফেররা যখন জাহান্নামের ভয়াবহতা দেখবে তখন তারা মাটির সাথে মিশে যেতে চাইবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘জমিনের সাথে মিশে যেতে চাইবে, সে দিন কামনা করবে সেসব লোক, যারা কাফের হয়েছিল এবং রাসূলের নাফরমানি করেছিল, যেন জমিনের সাথে মিশে যায়। কিন্তু গোপন করতে পারবে না আল্লাহর কাছে কোনো বিষয়।’ (সূরা নিসা-৪২)

মৃত্যু কামনা করবে : মৃত্যু সুনিশ্চিত জানার পরও খুব কম লোকই এমন আছে যারা মৃত্যু থেকে বাঁচতে চায় না। মৃত্যু থেকে পলায়ন করে না। কিন্তু জাহান্নামের আজাব এত অসহ্যকর, ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় যে, কাফেররা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় প্রাণের মায়া ছেড়ে মৃত্যু কামনা করবে। কিন্তু মৃত্যুর মাধ্যমে পার্থিব জীবন শেষে পুনরুত্থিত হওয়ার পর কোনো মানুষের আর কখনো মৃত্যু হবে না। পরকালে যারা মৃত্যু কামনা করবে তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হবে না। তারা ব্যর্থ মনোরথ হবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোনো সঙ্কীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে। বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাকো।’ (সূরা ফুরকান : ১৩-১৪)
লেখক :

  • আবদুল কাইয়ুম শেখ

শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ, চকবাজার, ঢাকা

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

পরকালে কাফেররা যা কামনা করবে

আপডেট সময় ১০:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩

পৃথিবীর বুকে কাফেররা যাচ্ছেতাই করে চলেছে। নিজেদের মনমতো জীবনযাপন করছে। আল্লাহ তায়ালার আদেশগুলো মানছে না ও তার নিষেধগুলোর তোয়াক্কা করছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা মহান আল্লাহর অবাধ্যতা ও নাফরমানির মধ্যে জড়িত থাকছে। নিজেদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান আনছে না। মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনা, তাঁর আদেশ-নিষেধের পরোয়া না করা ও নিজেদের মনমতো জীবনযাপন করার কারণে পরকালে তাদেরকে ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। আখিরাতে তারা ভয়াবহ শাস্তি ও বিভীষিকাময় আজাব ভোগ করবে। যখন তারা জাহান্নামের রকমারি আজাব দেখবে তখন তাদের টনক নড়বে। এ সময় তারা এমন কিছু আশা করবে যেগুলো পরিণামে তাদের দুরাশায় পরিণত হবে।

স্বজনদের মুক্তিপণরূপে দিতে চাইবে : স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন, ভাই-বেরাদার ও জ্ঞাতিগোষ্ঠীকে সবাই ভালোবাসে। স্বজন-পরিজনের জন্য অনেকসময় মানুষ জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। কাফেররাও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু পরকালের শাস্তি হবে ভয়ঙ্কর। অপরাধী কাফেররা যখন পরকালের অসহনীয় শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা এই শাস্তি থেকে যেকোনো মূল্যে পরিত্রাণ পেতে চাইবে। নিজেদের স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বেরাদার ও পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুনে ফেলে হলেও নিজেরা মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সে দিন অপরাধী ব্যক্তি পণস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে, তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে, তার গোষ্ঠীকে যারা তাকে আশ্রয় দিত এবং পৃথিবীর সব কিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।’ (সূরা মাআরিজ: ১১-১৫) কিন্তু তাদের এই আশা দুরাশায় পরিণত হবে। তাদেরকে তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই তারা মুক্তি পাবে না। পৃথিবীর সবকিছু দিয়েও যদি তারা মুক্তি পেতে চায়, তাহলেও তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে না। আল-কুরআনে এসেছে- ‘যারা কুফরি করে এবং কাফের অবস্থায় যাদের মৃত্যু ঘটে তাদের কারো থেকে পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ বিনিময়স্বরূপ দিলেও তা কখনো কবুল করা হবে না। এরাই তারা যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে; এদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সূরা আলে ইমরান-৯১)

পুনরায় পৃথিবীতে আসতে চাইবে : পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় নেককাজ ও সৎকর্ম করার বহু সুযোগ মানুষের রয়েছে। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগায় খুব কম মানুষ। যেসব লোক পৃথিবীতে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সৎকর্ম সম্পাদন করে তারা পরকালে তাদের সৎকর্মের সুফল উপভোগ করবে। পক্ষান্তরে যারা নিজেদের অপার সুযোগ হাতছাড়া করে মন্দকাজ করে তাদেরকে তাদের মন্দ কর্মের পরিণতি ভোগ করতে হবে। কাফেররা যখন তাদের মন্দ কর্মের প্রতিফলস্বরূপ জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা এই পৃথিবীতে পুনরায় এসে সৎকর্ম সম্পাদন করার সুযোগ চাইবে। কিন্তু মৃত্যুর পর কাউকে পুনরায় পৃথিবীতে আসার সুযোগ দেয়া হবে না। মহান আল্লাহ বলেন- ‘তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোক? যে দিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে, সে দিন আগে যারা একে ভুলে গিয়েছিল তারা বলবে, বাস্তবিকই আমাদের প্রতিপালকের পয়গম্বররা সত্যসহ আগমন করেছিলেন। অতএব, আমাদের জন্য কোনো সুপারিশকারী আছে কি, যে সুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হলে আমরা আগে যা করতাম তার বিপরীত কাজ করে আসতাম। নিশ্চয় তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা মনগড়া যা বলত, তা উধাও হয়ে যাবে।’ (সূরা আরাফ-৫৩)

মাটি হওয়ার আকাক্সক্ষা করবে : পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সবল ও কিছু রয়েছে দুর্বল। আর সাধারণত সবল প্রাণীরা দুর্বল প্রাণীদের উপর আক্রমণ করে তাদেরকে কষ্ট দেয়। বিচার দিবসে মহান আল্লাহ এসব অন্যায়ের বিচার করবেন। দুর্বল প্রাণীকে সবল করে এবং সবল প্রাণীকে দুর্বল করে তাদেরকে প্রতিশোধ গ্রহণ করার সুযোগ দেবেন। হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিংবিশিষ্ট বকরি থেকে শিংবিহীন বকরির প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।’ (সহিহ মুসলিম-৬৪৭৪) এরপর যখন প্রতিশোধ গ্রহণ করা শেষ হবে তখন মহান আল্লাহ তাদের সবাইকে বলবেন, ‘তোমরা মাটি হয়ে যাও’। এরপর মানুষ ও জিন সম্প্রদায় ছাড়া অন্য সব প্রাণী মাটি হয়ে যাবে। যখন এই দৃশ্য কাফেররা প্রত্যক্ষ করবে ও বুঝতে পারবে যে, জন্তু-জানোয়ারকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে হবে না তখন তারাও মাটি হয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করবে। আল-কুরআনে এসেছে- ‘আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যে দিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফের বলবে, হায়! আফসোস- আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।’ (সূরা নাবা-৪০) অন্য আরেক আয়াতে এসেছে, কাফেররা যখন জাহান্নামের ভয়াবহতা দেখবে তখন তারা মাটির সাথে মিশে যেতে চাইবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘জমিনের সাথে মিশে যেতে চাইবে, সে দিন কামনা করবে সেসব লোক, যারা কাফের হয়েছিল এবং রাসূলের নাফরমানি করেছিল, যেন জমিনের সাথে মিশে যায়। কিন্তু গোপন করতে পারবে না আল্লাহর কাছে কোনো বিষয়।’ (সূরা নিসা-৪২)

মৃত্যু কামনা করবে : মৃত্যু সুনিশ্চিত জানার পরও খুব কম লোকই এমন আছে যারা মৃত্যু থেকে বাঁচতে চায় না। মৃত্যু থেকে পলায়ন করে না। কিন্তু জাহান্নামের আজাব এত অসহ্যকর, ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় যে, কাফেররা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় প্রাণের মায়া ছেড়ে মৃত্যু কামনা করবে। কিন্তু মৃত্যুর মাধ্যমে পার্থিব জীবন শেষে পুনরুত্থিত হওয়ার পর কোনো মানুষের আর কখনো মৃত্যু হবে না। পরকালে যারা মৃত্যু কামনা করবে তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হবে না। তারা ব্যর্থ মনোরথ হবে। মহান আল্লাহ বলেন- ‘যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোনো সঙ্কীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে। বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাকো।’ (সূরা ফুরকান : ১৩-১৪)
লেখক :

  • আবদুল কাইয়ুম শেখ

শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ, চকবাজার, ঢাকা