ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

এমপির আত্মহত্যার ঘোষণার মরতবা

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় সংসদের একজন এমপি। গত ২৭ মে শনিবার নিজের এলাকায় নারীদের নিয়ে এক উঠান বৈঠকে আ’লীগের পক্ষে নৌকায় ভোট চাইতে গিয়ে এমন ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি জাতীয় সংসদের ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের এমপি নাজিম উদ্দিন, যিনি সচিবালয়ে গেলে পিওনরাও দাম দেয় না বলে সংসদে বিবৃতি দেন। আমলাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার জন্য সব সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। ওইসব বিবৃতি আহ্বানের পর পিওনরা তাকে কতটা দাম দিচ্ছে সেটা জানা যাচ্ছে না। তবে এবার তিনি যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে অনেকেরই আগ্রহ জন্মাতে পারে পয়সা খরচ করে হলেও তাকে একনজর দেখার। বিরল বৈশিষ্ট্য তো সবার থাকে না। যার থাকে তাকেই মানুষ আগ্রহ নিয়ে অনেক দূর থেকেও দেখতে যায়।

এমপি নাজিম উদ্দিন ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করেছেন। পরে স্নাতক সমমানের শিক্ষা নিয়ে আইনজীবী হন এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ২০১৬ সালে তার আসনের এমপির মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে প্রথম এমপি হন নাজিম উদ্দিন। আর ২০১৮ সালে নৈশভোটে দ্বিতীয়বার।
এমপি নাজিম উদ্দিনের কথায় গুরুত্ব দেয়ার কারণ ছিল না। কিন্তু যেভাবেই হোক তিনি সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি। পদটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এ কারণেই তার বক্তব্য গুরুত্ব পাবার যোগ্য। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মান-মর্যাদা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন-অগ্রগতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও জাতির মানবিক গুণের বিকাশ সব কিছুর জিম্মাদারি তো রাজনীতিকদের ওপরেই ন্যস্ত। এমপি বলেই নাজিম উদ্দিন একজন শীর্ষ রাজনীতিক।
তবে তিনি রাজনীতিক বলেই কেবল আমরা তার বক্তব্যে কান পেতেছি এমন না। আমাদের কান পাতার ভিন্ন কারণ আছে। সেটি হলো, তার এই বক্তব্যের মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষণ আমরা দেখতে পাই। সেই লক্ষণটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একেবারে শীর্ষ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও সুস্পষ্টরূপে দৃশ্যমান। কী সেই লক্ষণ? সেটাই বলব। তার আগে এমপি নাজিম উদ্দিনের আত্মহত্যার ঘোষণার মরতবা বা তাৎপর্য কী একটু দেখে নিতে চাই।

আমাদের বিবেচনায় নাজিম উদ্দিনের ঘোষণাটি অদ্ভুত ও উদ্ভট। কারণ, বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা নেই। কাজেই শাসক দল হিসাবে একই দলই ক্ষমতায় থাকবে, তার ব্যতিক্রম হলেই আল্লাহর গজব নেমে আসবে, আত্মহত্যা করতে হবে, এমন না। বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবেই আছে বহুদলীয় গণতন্ত্র। আ’লীগের ১৫ বছরের শাসনে গণতন্ত্রের গলাকাটা সম্পন্ন হলেও শেষ দমটা এখনো ছেড়ে দেয়নি। দাফন বা চল্লিশাও বাকি। অর্থাৎ কার্যত একদলীয় শাসন চললেও কাগজে কলমে শাসনব্যবস্থাটি এখনো বহুদলীয় গণতান্ত্রিক। এ ব্যবস্থায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অথবা ২০১৪, ২০১৮-র মতো নামকাওয়াস্তে ভোটের নাটক মঞ্চায়ন করে যে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারে। এক্ষেত্রে শর্ত শুধু একটা। দেশের সংবিধানের প্রতি আনুগত্য।

সংবিধান ও দেশের আইনের প্রতি আনুগত্যের নিশ্চয়তা থাকলেই নির্বাচন কমিশন যেকোনো ব্যক্তি বা দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে বাধ্য। এখানে অতীতে কে কী সুকর্ম বা কুকর্ম করেছে সে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। দেশ জাতির বিরুদ্ধে কে কী ষড়যন্ত্র বা অপরাধ করেছে সুযোগ নেই সেসব দেখারও। যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় সব দলেরই প্রতিপাদ্য হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ দলের নানা কুকীর্তির ফিরিস্তি। সেটি নির্বাচনী আচরণবিধিমতে অসিদ্ধ।

এ কথার অর্থ এই যে, এক সময়ের চরমপন্থী ব্যক্তি বা দল, যারা তথাকথিত সর্বহারার বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব অথবা শ্রমিক শ্রেণীর বিপ্লবের নামে দেশের শত শত নাগরিককে হত্যা করেছে, একসময়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী, যারা বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে নির্বিচারে দেশপ্রেমিক সেনা ও নাগরিকদের হত্যা করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে যাদের শীর্ষস্থানীয় কিছু সংখ্যককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলে জীবন দিতে হয়েছে এবং সেইসব দেশদ্রোহী যারা স্বাধীন বঙ্গভূমি গঠনের নামে ভিন্ন দেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, যারা নির্বিচার লুটপাট করে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে লাখ মানুষের জীবনহানি ঘটিয়েছে- সবাই এদেশে নির্বাচন করার অধিকার রাখে- জনগণের সম্মতি তথা ভোটে যদি তারা অতীত ভুলে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে, যদি এই ভূখণ্ডের আইন-কানুন মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অঙ্গীকার করে।

নির্বাচনের অধিকার যার বা যাদের আছে তারা স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত যেকোনো স্তরে জনপ্রতিনিধি হতে পারেন, সংসদীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অধিকার করতে পারেন বা সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন। তারা মন্ত্রী হতে পারেন, গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে সারা দেশে সদর্পে ঘুরে বেড়াতে পারেন। যেমনটা হয়ে এসেছে স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছর ধরে। বিএনপির উল্লিখিত কোনো অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে বা ছিল এমন রেকর্ড নেই। থাকলেও সমস্যা ছিল কি? তারা তো রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় রাজনীতি করেন। যেমন রাজনীতি করেন একসময়ের স্বাধীনতার বিপক্ষে থাকা ইসলামী ও বাম দলগুলো। তাহলে এমপি নাজিম উদ্দিন কোন গুরুতর কারণে ওই ঘোষণা দিলেন? এ বিষয়ে কি তার নিজের ব্যাখ্যা?

হ্যাঁ, ব্যাখ্যা একটা আছে। বাংলা ট্রিবিউনের জিজ্ঞাসার জবাবে ২৮ মে রোববার বিকালে নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় গিয়ে আমাকে পতাকা দেখাবে, চোখের সামনে গাড়িতে পতাকা ওড়াবে। তাদের সম্মান করতে হবে এবং স্যালুট দিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা, এত রক্ত এবং মা-বোনের আত্মদান বৃথা হয়ে যাবে।’

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় গেলে আমার মতো মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না। বলেন, ‘আমার হাতে তো এখন আর অস্ত্র নেই। তাদের অপকর্ম কিভাবে মোকাবিলা করব। এমন পরিস্থিতিতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে আক্ষেপ করেছি।’

পরিষ্কার একটি সেন্টিমেন্টাল স্ট্যাটমেন্ট। হ্যাঁ, অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন শহীদের বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তান, একজন শহীদের স্ত্রী বা মুক্তিযুদ্ধকালে প্রতিপক্ষের হাতে কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন যেকোনো মানুষের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভ, ঘৃণা, বিদ্বেষ, দুঃখ-বেদনার গভীর ও চিরস্থায়ী ক্ষত থাকতেই পারে। বিশেষ সময় ও পরিস্থিতিতে সেই ক্ষত তীব্র হয়ে উঠতে পারে, দগদগে ঘায়ের মতো টাটিয়ে উঠতে পারে। কারণ একজন মানুষ এসব আবেগ অনুভূতি নিয়েই মানুষ। মায়ের কাছে ভাত খেতে চেয়ে ঘরের বাইরে যাওয়া এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আর ফিরে আসেনি। ছেলের জন্য থালায় ভাত বেড়ে অপেক্ষমাণ মায়ের কাছে খবর আসে, তার ছেলে আর নেই। এরপর সেই মা আমৃত্যু ভাত না খেয়ে জীবন পার করে দিচ্ছেন এমন অনেক ঘটনা এ দেশে ঘটেছে। এগুলো জীবনেরই বাস্তব দিক। এগুলো তীব্র মানবিক আবেগ অনুভূতি ভালোবাসার চিরন্তন বহিঃপ্রকাশ। ন্যূনতম মানবিক বোধবুদ্ধিসম্পন্ন কোন্ মানুষ মানবিক সত্তার এই স্বতঃস্ফূর্ততা অস্বীকার করতে পারে?

কিন্তু পৃথিবী কেবল আবেগ অনুভূতি দিয়ে চলে না। আবেগ অনুভূতি কখনোই উচ্চতর মানবিক গুণ হিসাবে স্বীকৃত নয়। বরং জীবন চালানোর জন্য বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে যুক্তি, বিচারবোধ, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা এবং সর্বোপরি ক্ষমাশীলতা। পৃথিবীতে যেখানে যত যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানি এমনকি নারকীয় গণহত্যা হয়েছে সর্বত্রই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী পক্ষ বিজিতদের ক্ষমা করে দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ও জাতি গঠনে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সর্বশেষ উদাহরণ সম্ভবত নেলসন ম্যান্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাবিরোধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে দলের নেতাদের দিয়ে লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করেছিলেন, যে কমিটি জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে প্রতিদিন বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করত। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি সেদিনের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন এবং জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়েছেন। আমাদের ধারণা, এটি নিছকই একটি রাজনৈতিক অবস্থান। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের বিতর্ক জিইয়ে না রাখতে পারলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির আর কোনো ভিত অবশিষ্ট থাকে না। কারণ যে দলটিকে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন হিসাবে পরিচয় করানো হয়, দুঃখজনক হলেও নিরেট সত্য এই যে, সেই দলটি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্রের জন্য চরম হানিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। একসময় একদলীয় বাকশাল সৃষ্টি করে সমালোচিত হয়েছে। গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ড জাতি হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছে।

এমপি নাজিম উদ্দিনের ‘আত্মহত্যা’র ঘোষণা সেই স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের বিতর্কের ধারাবাহিকতামাত্র। মানুষের আবেগ উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হীন কৌশল।

কিন্তু নাজিম উদ্দিন এই ঘোষণা দিয়ে প্রমাণ করেছেন, তিনি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। সংবিধানের আওতায় থেকে যে কেউ জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় গেলে তাকে মেনে নেয়াই গণতান্ত্রিক রীতি। তাকে মেনে নিতে হবে, মাননীয় বলতে হবে, স্যার সম্বোধন করে স্যালুট দিতে হবে। এমনকি তিনি যদি এক ভোট বেশি পেয়েও নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা ৭৩ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিনের আবেগের জায়গাটিকে মান্য করি। কিন্তু একে রাজনৈতিক ফায়দা ওঠানোর কাজে ব্যবহার সমর্থন করি না। তার আত্মহত্যার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকদের যে সাধারণ বৈশিষ্ট্যটি পুরিস্ফুট সেটি হলো ওই; সংবিধান, আইন-আদালত, নীতি-নৈতিকতা কোনো কিছুতেই তাদের প্রকৃত আস্থা নেই। ‘একজন প্রধান বিচারপতিকেও সরিয়ে দিয়েছি’, সম্প্রতি একজন ব্যারিস্টারের এমন প্রকাশ্য ঘোষণা তার সর্বশেষ উদাহরণ। ব্যক্তিগত, দলীয় এবং গোষ্ঠীগত স্বার্থে তারা সবকিছুই ওলটপালট করে দিতে পারেন। তাতে লুটেপুটে খাবার আয়োজনটা ভালো জমে।

সব শেষে আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করলে পুরো আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
আওয়ামী লীগের এমপি নাজিম উদ্দিন হলেন সেই ব্যক্তি যার নারী কেলেঙ্কারির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নারী বলেছেন, থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন। থানা মামলা নেয়নি, উল্টো তাকে অপমান করে, কটূক্তি করে বের করে দিয়েছে। ওই নারীকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগও এসেছে গণমাধ্যমের খবরে। এমন একজন মানুষের একটু ভয়ভীতি থাকতেই পারে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে। সে সরকার গত ১৫ বছরের গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারির বিচার যে করবে না তার গ্যারান্টি কী! সুতরাং ভয়টা অমূলক নয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

এমপির আত্মহত্যার ঘোষণার মরতবা

আপডেট সময় ১১:৪৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় সংসদের একজন এমপি। গত ২৭ মে শনিবার নিজের এলাকায় নারীদের নিয়ে এক উঠান বৈঠকে আ’লীগের পক্ষে নৌকায় ভোট চাইতে গিয়ে এমন ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি জাতীয় সংসদের ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের এমপি নাজিম উদ্দিন, যিনি সচিবালয়ে গেলে পিওনরাও দাম দেয় না বলে সংসদে বিবৃতি দেন। আমলাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার জন্য সব সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। ওইসব বিবৃতি আহ্বানের পর পিওনরা তাকে কতটা দাম দিচ্ছে সেটা জানা যাচ্ছে না। তবে এবার তিনি যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে অনেকেরই আগ্রহ জন্মাতে পারে পয়সা খরচ করে হলেও তাকে একনজর দেখার। বিরল বৈশিষ্ট্য তো সবার থাকে না। যার থাকে তাকেই মানুষ আগ্রহ নিয়ে অনেক দূর থেকেও দেখতে যায়।

এমপি নাজিম উদ্দিন ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করেছেন। পরে স্নাতক সমমানের শিক্ষা নিয়ে আইনজীবী হন এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ২০১৬ সালে তার আসনের এমপির মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে প্রথম এমপি হন নাজিম উদ্দিন। আর ২০১৮ সালে নৈশভোটে দ্বিতীয়বার।
এমপি নাজিম উদ্দিনের কথায় গুরুত্ব দেয়ার কারণ ছিল না। কিন্তু যেভাবেই হোক তিনি সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি। পদটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এ কারণেই তার বক্তব্য গুরুত্ব পাবার যোগ্য। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মান-মর্যাদা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন-অগ্রগতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও জাতির মানবিক গুণের বিকাশ সব কিছুর জিম্মাদারি তো রাজনীতিকদের ওপরেই ন্যস্ত। এমপি বলেই নাজিম উদ্দিন একজন শীর্ষ রাজনীতিক।
তবে তিনি রাজনীতিক বলেই কেবল আমরা তার বক্তব্যে কান পেতেছি এমন না। আমাদের কান পাতার ভিন্ন কারণ আছে। সেটি হলো, তার এই বক্তব্যের মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষণ আমরা দেখতে পাই। সেই লক্ষণটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একেবারে শীর্ষ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও সুস্পষ্টরূপে দৃশ্যমান। কী সেই লক্ষণ? সেটাই বলব। তার আগে এমপি নাজিম উদ্দিনের আত্মহত্যার ঘোষণার মরতবা বা তাৎপর্য কী একটু দেখে নিতে চাই।

আমাদের বিবেচনায় নাজিম উদ্দিনের ঘোষণাটি অদ্ভুত ও উদ্ভট। কারণ, বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা নেই। কাজেই শাসক দল হিসাবে একই দলই ক্ষমতায় থাকবে, তার ব্যতিক্রম হলেই আল্লাহর গজব নেমে আসবে, আত্মহত্যা করতে হবে, এমন না। বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবেই আছে বহুদলীয় গণতন্ত্র। আ’লীগের ১৫ বছরের শাসনে গণতন্ত্রের গলাকাটা সম্পন্ন হলেও শেষ দমটা এখনো ছেড়ে দেয়নি। দাফন বা চল্লিশাও বাকি। অর্থাৎ কার্যত একদলীয় শাসন চললেও কাগজে কলমে শাসনব্যবস্থাটি এখনো বহুদলীয় গণতান্ত্রিক। এ ব্যবস্থায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অথবা ২০১৪, ২০১৮-র মতো নামকাওয়াস্তে ভোটের নাটক মঞ্চায়ন করে যে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারে। এক্ষেত্রে শর্ত শুধু একটা। দেশের সংবিধানের প্রতি আনুগত্য।

সংবিধান ও দেশের আইনের প্রতি আনুগত্যের নিশ্চয়তা থাকলেই নির্বাচন কমিশন যেকোনো ব্যক্তি বা দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে বাধ্য। এখানে অতীতে কে কী সুকর্ম বা কুকর্ম করেছে সে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। দেশ জাতির বিরুদ্ধে কে কী ষড়যন্ত্র বা অপরাধ করেছে সুযোগ নেই সেসব দেখারও। যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় সব দলেরই প্রতিপাদ্য হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ দলের নানা কুকীর্তির ফিরিস্তি। সেটি নির্বাচনী আচরণবিধিমতে অসিদ্ধ।

এ কথার অর্থ এই যে, এক সময়ের চরমপন্থী ব্যক্তি বা দল, যারা তথাকথিত সর্বহারার বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব অথবা শ্রমিক শ্রেণীর বিপ্লবের নামে দেশের শত শত নাগরিককে হত্যা করেছে, একসময়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী, যারা বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে নির্বিচারে দেশপ্রেমিক সেনা ও নাগরিকদের হত্যা করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে যাদের শীর্ষস্থানীয় কিছু সংখ্যককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলে জীবন দিতে হয়েছে এবং সেইসব দেশদ্রোহী যারা স্বাধীন বঙ্গভূমি গঠনের নামে ভিন্ন দেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, যারা নির্বিচার লুটপাট করে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে লাখ মানুষের জীবনহানি ঘটিয়েছে- সবাই এদেশে নির্বাচন করার অধিকার রাখে- জনগণের সম্মতি তথা ভোটে যদি তারা অতীত ভুলে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে, যদি এই ভূখণ্ডের আইন-কানুন মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অঙ্গীকার করে।

নির্বাচনের অধিকার যার বা যাদের আছে তারা স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত যেকোনো স্তরে জনপ্রতিনিধি হতে পারেন, সংসদীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অধিকার করতে পারেন বা সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন। তারা মন্ত্রী হতে পারেন, গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে সারা দেশে সদর্পে ঘুরে বেড়াতে পারেন। যেমনটা হয়ে এসেছে স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছর ধরে। বিএনপির উল্লিখিত কোনো অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে বা ছিল এমন রেকর্ড নেই। থাকলেও সমস্যা ছিল কি? তারা তো রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় রাজনীতি করেন। যেমন রাজনীতি করেন একসময়ের স্বাধীনতার বিপক্ষে থাকা ইসলামী ও বাম দলগুলো। তাহলে এমপি নাজিম উদ্দিন কোন গুরুতর কারণে ওই ঘোষণা দিলেন? এ বিষয়ে কি তার নিজের ব্যাখ্যা?

হ্যাঁ, ব্যাখ্যা একটা আছে। বাংলা ট্রিবিউনের জিজ্ঞাসার জবাবে ২৮ মে রোববার বিকালে নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় গিয়ে আমাকে পতাকা দেখাবে, চোখের সামনে গাড়িতে পতাকা ওড়াবে। তাদের সম্মান করতে হবে এবং স্যালুট দিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা, এত রক্ত এবং মা-বোনের আত্মদান বৃথা হয়ে যাবে।’

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় গেলে আমার মতো মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না। বলেন, ‘আমার হাতে তো এখন আর অস্ত্র নেই। তাদের অপকর্ম কিভাবে মোকাবিলা করব। এমন পরিস্থিতিতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে আক্ষেপ করেছি।’

পরিষ্কার একটি সেন্টিমেন্টাল স্ট্যাটমেন্ট। হ্যাঁ, অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন শহীদের বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তান, একজন শহীদের স্ত্রী বা মুক্তিযুদ্ধকালে প্রতিপক্ষের হাতে কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন যেকোনো মানুষের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভ, ঘৃণা, বিদ্বেষ, দুঃখ-বেদনার গভীর ও চিরস্থায়ী ক্ষত থাকতেই পারে। বিশেষ সময় ও পরিস্থিতিতে সেই ক্ষত তীব্র হয়ে উঠতে পারে, দগদগে ঘায়ের মতো টাটিয়ে উঠতে পারে। কারণ একজন মানুষ এসব আবেগ অনুভূতি নিয়েই মানুষ। মায়ের কাছে ভাত খেতে চেয়ে ঘরের বাইরে যাওয়া এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আর ফিরে আসেনি। ছেলের জন্য থালায় ভাত বেড়ে অপেক্ষমাণ মায়ের কাছে খবর আসে, তার ছেলে আর নেই। এরপর সেই মা আমৃত্যু ভাত না খেয়ে জীবন পার করে দিচ্ছেন এমন অনেক ঘটনা এ দেশে ঘটেছে। এগুলো জীবনেরই বাস্তব দিক। এগুলো তীব্র মানবিক আবেগ অনুভূতি ভালোবাসার চিরন্তন বহিঃপ্রকাশ। ন্যূনতম মানবিক বোধবুদ্ধিসম্পন্ন কোন্ মানুষ মানবিক সত্তার এই স্বতঃস্ফূর্ততা অস্বীকার করতে পারে?

কিন্তু পৃথিবী কেবল আবেগ অনুভূতি দিয়ে চলে না। আবেগ অনুভূতি কখনোই উচ্চতর মানবিক গুণ হিসাবে স্বীকৃত নয়। বরং জীবন চালানোর জন্য বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে যুক্তি, বিচারবোধ, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা এবং সর্বোপরি ক্ষমাশীলতা। পৃথিবীতে যেখানে যত যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানি এমনকি নারকীয় গণহত্যা হয়েছে সর্বত্রই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী পক্ষ বিজিতদের ক্ষমা করে দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ও জাতি গঠনে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সর্বশেষ উদাহরণ সম্ভবত নেলসন ম্যান্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাবিরোধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে দলের নেতাদের দিয়ে লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করেছিলেন, যে কমিটি জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে প্রতিদিন বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করত। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি সেদিনের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন এবং জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়েছেন। আমাদের ধারণা, এটি নিছকই একটি রাজনৈতিক অবস্থান। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের বিতর্ক জিইয়ে না রাখতে পারলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির আর কোনো ভিত অবশিষ্ট থাকে না। কারণ যে দলটিকে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন হিসাবে পরিচয় করানো হয়, দুঃখজনক হলেও নিরেট সত্য এই যে, সেই দলটি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্রের জন্য চরম হানিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। একসময় একদলীয় বাকশাল সৃষ্টি করে সমালোচিত হয়েছে। গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ড জাতি হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছে।

এমপি নাজিম উদ্দিনের ‘আত্মহত্যা’র ঘোষণা সেই স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের বিতর্কের ধারাবাহিকতামাত্র। মানুষের আবেগ উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হীন কৌশল।

কিন্তু নাজিম উদ্দিন এই ঘোষণা দিয়ে প্রমাণ করেছেন, তিনি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। সংবিধানের আওতায় থেকে যে কেউ জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় গেলে তাকে মেনে নেয়াই গণতান্ত্রিক রীতি। তাকে মেনে নিতে হবে, মাননীয় বলতে হবে, স্যার সম্বোধন করে স্যালুট দিতে হবে। এমনকি তিনি যদি এক ভোট বেশি পেয়েও নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা ৭৩ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিনের আবেগের জায়গাটিকে মান্য করি। কিন্তু একে রাজনৈতিক ফায়দা ওঠানোর কাজে ব্যবহার সমর্থন করি না। তার আত্মহত্যার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকদের যে সাধারণ বৈশিষ্ট্যটি পুরিস্ফুট সেটি হলো ওই; সংবিধান, আইন-আদালত, নীতি-নৈতিকতা কোনো কিছুতেই তাদের প্রকৃত আস্থা নেই। ‘একজন প্রধান বিচারপতিকেও সরিয়ে দিয়েছি’, সম্প্রতি একজন ব্যারিস্টারের এমন প্রকাশ্য ঘোষণা তার সর্বশেষ উদাহরণ। ব্যক্তিগত, দলীয় এবং গোষ্ঠীগত স্বার্থে তারা সবকিছুই ওলটপালট করে দিতে পারেন। তাতে লুটেপুটে খাবার আয়োজনটা ভালো জমে।

সব শেষে আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করলে পুরো আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
আওয়ামী লীগের এমপি নাজিম উদ্দিন হলেন সেই ব্যক্তি যার নারী কেলেঙ্কারির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নারী বলেছেন, থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন। থানা মামলা নেয়নি, উল্টো তাকে অপমান করে, কটূক্তি করে বের করে দিয়েছে। ওই নারীকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগও এসেছে গণমাধ্যমের খবরে। এমন একজন মানুষের একটু ভয়ভীতি থাকতেই পারে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে। সে সরকার গত ১৫ বছরের গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারির বিচার যে করবে না তার গ্যারান্টি কী! সুতরাং ভয়টা অমূলক নয়।